leadT1ad

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও চীনসহ বিভিন্ন দেশের শোক

খালেদার মৃত্যুতে বিভিন্ন দূতাবাস থেকে শোক বার্তা দেওয়া হয়েছে। ছবি: এআই দিয়ে বানানো।

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পক্ষ থেকে শোক জানানো হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার সকালে ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস এক বার্তায় বলেছে, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করছে যুক্তরাষ্ট্র।

আরও বলা হয়, খালেদা জিয়া তাঁর দেশের আধুনিক ইতিহাস গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। তাঁর নেতৃত্ব বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে বিশেষ অবদান রেখেছে।

শোক জানিয়ে ব্রিটিশ হাইকমিশন এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যু সংবাদে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। এই অত্যন্ত দুঃখজনক সময়ে তাঁর পরিবার, বন্ধুস্বজন এবং বাংলাদেশের জনগণের প্রতি আমরা আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।’

তাঁর মৃত্যুর পর ঢাকাস্থ জার্মান দূতাবাস এক শোক বার্তায় বলেছে, বেগম জিয়া বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিমণ্ডল গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। এই শোকের মুহূর্তে জার্মানি জাতীয় জীবনে তাঁর অবদানকে সম্মান জানায় এবং তাঁর পরিবার, তাঁর দল এবং বাংলাদেশের জনগণের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করছে।

শোক প্রকাশ করে ঢাকাস্থ ফরাসি দূতাবাস বলেছে, খালেদা জিয়া বাংলাদেশের জাতীয় জীবন গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তাঁর অবদান ও উত্তরাধিকার স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে চিঠি দিয়ে খালেদা জিয়ার প্রয়াণে শোক জানিয়েছেন। ওই চিঠিতে চীনা প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, চীনা সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সরকার ও বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের প্রতি গভীর শোক ও আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।

এ ছাড়া খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ, পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার।

বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে দেশ–বিদেশে ব্যাপক শোক প্রকাশ করা হয়েছে। এই শোকবার্তা মূলত বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ ও গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক অংশীদারদের মধ্যেই বেশি দেখা গেছে। এর পেছনে আঞ্চলিক ও ভূরাজনৈতিক বাস্তবতা স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে।

ভারত শোকবার্তায় বাংলাদেশ–ভারত দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছে। পাকিস্তান তার বার্তায় ঐতিহাসিক বন্ধুত্ব ও রাজনৈতিক সম্পর্কের কথা তুলে ধরেছে। চীন গুরুত্ব দিয়েছে অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সহযোগিতার ধারাবাহিকতার বিষয়টি। এসব বার্তায় প্রত্যেক দেশের নিজস্ব কূটনৈতিক অবস্থান ফুটে উঠেছে।

অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডাসহ পশ্চিমা দেশগুলো বেগম খালেদা জিয়ার উন্নয়নমূলক ভূমিকা এবং বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে তাঁর অবদানের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেছে। তারা তাঁকে একজন গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে স্মরণ করেছে।

উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, কোনো প্রভাবশালী দেশ বা আন্তর্জাতিক পক্ষের কাছ থেকে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া বা অনুপস্থিতি দেখা যায়নি। এতে বোঝা যায়, রাজনৈতিক জীবনে তিনি বিতর্কিত হলেও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তাঁর মর্যাদা ও অবস্থান ব্যাপকভাবে স্বীকৃত ছিল।

বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যু এমন এক সময়ে হলো, যখন বাংলাদেশ একটি অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে রাজনৈতিক রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সামনে জাতীয় নির্বাচনও রয়েছে। এই পরিস্থিতি বিএনপির রাজনীতিতে নতুন প্রভাব ফেলতে পারে, বিশেষ করে তাঁর ছেলে তারেক রহমানের নেতৃত্বে দলের ভবিষ্যৎ গতিপথে।

এই বৈশ্বিক শোকপ্রকাশ আবারও স্মরণ করিয়ে দেয়, বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের ইতিহাসে নারী নেতৃত্বের একটি শক্তিশালী প্রতীক ছিলেন। একই সঙ্গে তিনি কর্তৃত্ববাদবিরোধী রাজনৈতিক সংগ্রামের একটি গুরুত্বপূর্ণ নাম হিসেবেও বিবেচিত হবেন।

আজ ভোর ৬টায় খালেদা জিয়ার মৃত্যু হয়। গত ৪০ দিন ধরে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।

Ad 300x250

সম্পর্কিত