leadT1ad

‘সন্ত্রাসীদের দৌড়ের ওপর রাখতে হবে’, যৌথ অভিযান ও নিরাপত্তা নিয়ে কঠোর নির্দেশনা

স্ট্রিম প্রতিবেদক
স্ট্রিম প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩: ১৫
রাজধানীর নির্বাচন ভবনে জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ সুপার (এসপি), ডিআইজি, বিভাগীয় কমিশনার ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের মতবিনিময় সভা। ছবি: সংগৃহীত

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটে আইনি দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে পুলিশকে সর্বাত্মক সমর্থন দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কমিশন জানিয়েছে, ন্যায্য ও বৈধভাবে দায়িত্ব পালন করলে পুলিশের প্রতিটি কার্যক্রমের পেছনে নির্বাচন কমিশন দৃঢ়ভাবে দাঁড়াবে। একইসঙ্গে নির্বাচনের মাঠ শান্ত রাখতে সন্ত্রাসীদের ‘দৌড়ের ওপর’ রাখার কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর নির্বাচন ভবনে জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ সুপার (এসপি), ডিআইজি, বিভাগীয় কমিশনার ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।

পুলিশের প্রতি ইসির বার্তা: ‘আমরা পাশে আছি’

নির্বাচন কমিশনার সানাউল্লাহ বলেন, ‘ইউনিফর্মধারী বাহিনী, বিশেষ করে পুলিশ, মরাল হাই গ্রাউন্ড বজায় রেখে মাঠে দায়িত্ব পালন করবে—এটাই কমিশনের প্রত্যাশা। কোনো অবস্থাতেই পুলিশের কোনো সদস্যকে অপমান করা বা দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়া গ্রহণযোগ্য নয়। পুলিশকে রাস্তায় অপমান করা মানে রাষ্ট্রের কর্তৃত্ব ও আইনের শাসনকে ক্ষতিগ্রস্ত করা।’ তিনি আশ্বস্ত করেন, নির্বাচন কমিশনের সমর্থন মানেই রাষ্ট্রের সমর্থন। এই সমর্থনের ভিত্তিতে পুলিশকে পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করে রাষ্ট্রের কর্তৃত্ব পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হবে।

সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি ও যৌথ অভিযান

নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইসি দ্রুততম সময়ের মধ্যে যৌথ অভিযান (জয়েন্ট অপারেশন) শুরুর নির্দেশনা দিয়েছে। কমিশনার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘সন্ত্রাসীরা যদি এলাকায় দাপট দেখায়, তবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে তাদের দৌড়ের ওপর রাখতে হবে। সন্ত্রাসী যদি এলাকায় থাকে, তাহলে আপনারা এলাকা ছাড়া থাকবেন। ওদেরকে দৌড়ের ওপর রাখতে হবে, নাহলে ওরা আপনাদের দৌড়ের ওপর রাখবে।’ যৌথ অভিযানের মূল লক্ষ্য হবে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করা।

নিরাপত্তা ও বদলি প্রসঙ্গ

সাধারণত নির্বাচনের আগে ৫ দিনের জন্য সেনা ও অন্যান্য বাহিনী মোতায়েন করা হলেও এবার পরিস্থিতি বিবেচনায় এই সময়সীমা বাড়ানোর বিষয়টি সক্রিয় বিবেচনায় রয়েছে বলে জানান ইসি সানাউল্লাহ। বদলি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ওসি ও তার ঊর্ধ্বতন গুরুত্বপূর্ণ পদ ছাড়া ছোটখাটো বদলিতে কমিশন হস্তক্ষেপ করবে না। তবে নির্বাচনের পরিবেশ বিঘ্নিত হয় এমন কোনো কর্মকাণ্ড সহ্য করা হবে না।

মনোনয়নপত্র জমা ও আইনি নির্দেশনা

সভায় নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ আইনি দিকনির্দেশনা দিয়ে বলেন, জামিনপ্রাপ্ত প্রার্থীদের ক্ষেত্রে আদালতের সত্যায়িত কপি দিলেই রিটার্নিং অফিসারদের মনোনয়নপত্র জমা নিতে হবে। জামিননামা ফরম না দিলেও মনোনয়ন বাতিল করা যাবে না—এ বিষয়ে আজই পরিপত্র জারি করা হবে। তবে নির্বাচনে অযোগ্যদের বিষয়ে তিনি স্পষ্ট করেন, জামিন পাওয়ার পর পলাতক হলে, আদালতের বিজ্ঞপ্তির পরও হাজির না হলে এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের ৯ ধারায় যাদের বিরুদ্ধে ফরমাল চার্জ গঠিত হয়েছে—তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।

‘অস্বাভাবিক নির্বাচন’ আর নয়

নির্বাচন কমিশনার বেগম তাহমিদা আহমদ বলেন, ‘গোটা জাতি যেন হাসফাস করে বলছে—আর অস্বাভাবিক নির্বাচন নয়, এখন সবাই একটি স্বাভাবিক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেখতে চায়।’ ভোটাররা যেন ভয়ভীতি ছাড়া কেন্দ্রে আসতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে প্রশাসন ও পুলিশকে সমন্বিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

সভায় প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যান্য কমিশনার এবং ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Ad 300x250
সর্বাধিক পঠিত

সম্পর্কিত