leadT1ad

বিচার বিভাগে দ্বৈত শাসনের অবসান, মিলেছে পূর্ণাঙ্গ স্বায়ত্তশাসন: প্রধান বিচারপতি

স্ট্রিম প্রতিবেদক
স্ট্রিম প্রতিবেদক
ঢাকা

প্রকাশ : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ৫৮
বাণিজ্যিক আদালত বিষয়ক এক উচ্চপর্যায়ের সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ। সংগৃহীত ছবি

দীর্ঘদিনের প্রশাসনিক ও আর্থিক পরাধীনতা কাটিয়ে প্রথমবারের মতো পূর্ণাঙ্গ স্বায়ত্তশাসন পেয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। ‘সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় অধ্যাদেশ-২০২৫’ জারির মাধ্যমে বিচার বিভাগ দ্বৈত শাসনের সীমাবদ্ধতা থেকে মুক্ত হলো। এর ফলে বাজেট বরাদ্দ, পদ সৃষ্টি, বিচারিক সংস্কার ও উন্নয়ন নীতিমালা তৈরিতে সুপ্রিম কোর্ট এখন সম্পূর্ণ স্বাধীন।

শনিবার (৬ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামে সুপ্রিম কোর্ট ও ইউএনডিপির যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত বাণিজ্যিক আদালত বিষয়ক এক উচ্চপর্যায়ের সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা জানান প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ। বিচার বিভাগের এই পরিবর্তনকে তিনি একটি ‘নতুন প্রাতিষ্ঠানিক যুগ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন।

সেমিনারে প্রধান বিচারপতি গত দেড় বছরের বিচারিক সংস্কার এবং অন্তর্বর্তী সরকারের ইতিবাচক ভূমিকার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, গত ২১ সেপ্টেম্বর ঘোষিত রোডম্যাপ ছিল বিচার বিভাগের প্রতি জনগণের আস্থা ফেরানোর অঙ্গীকার। সরকার সুপ্রিম কোর্টের প্রস্তাবগুলো দ্রুত অনুমোদন দিয়ে স্বাধীন বিচারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় ঐকমত্যের প্রমাণ দিয়েছে। বিচার বিভাগ এখন প্রশাসনিক ও আর্থিকভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ, তাই সংস্কার কার্যক্রমের জন্য আর অন্য দপ্তরের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে না।

অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি দেশের অর্থনীতিতে গতি আনতে বিশেষায়িত ‘বাণিজ্যিক আদালত’ প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি জানান, ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বাণিজ্যিক আদালত আইনটি মন্ত্রিসভায় নীতিগত অনুমোদন পেয়েছে।

প্রস্তাবিত বাণিজ্যিক আদালতের সুবিধা ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, এই আদালত বিরোধ নিষ্পত্তিতে মাইলফলক হবে। খসড়া আইনে বাণিজ্যিক বিরোধের স্পষ্ট সংজ্ঞা, হাইকোর্টে পৃথক আপিল বেঞ্চ, বাধ্যতামূলক মধ্যস্থতা এবং মামলার স্বচ্ছ পরিসংখ্যান প্রকাশের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এটি বিশ্ব অর্থনীতিতে বাংলাদেশের সক্ষমতা ও প্রতিযোগিতা বাড়াবে।

আইন পাসের পাশাপাশি এর যথাযথ বাস্তবায়নে জোর দেন প্রধান বিচারপতি। তিনি জানান, ইউরোপীয় ইউনিয়নের কারিগরি সহায়তা ও অংশীজনদের মতামতের ভিত্তিতে আইনটি চূড়ান্ত করা হয়েছে। তবে এর সুফল পেতে অবকাঠামো উন্নয়ন, ডিজিটাল সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং আইনজীবীদের বিশেষায়িত প্রশিক্ষণের কোনো বিকল্প নেই। এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট প্রয়োজনীয় নির্দেশিকা (প্র্যাকটিস ডিরেকশন) জারি করতে প্রস্তুত বলেও তিনি জানান।

ইউএনডিপির বাংলাদেশ প্রতিনিধি স্টেফান লিলার অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন। এ সময় বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল, বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা এবং চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

Ad 300x250

সম্পর্কিত