leadT1ad

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্যাখ্যা দেননি, কী করবে ইনকিলাব মঞ্চ

স্ট্রিম প্রতিবেদক
স্ট্রিম প্রতিবেদক
ঢাকা

প্রকাশ : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ১০
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসিজদ সংলগ্ন জাতীয় কবির পাশে শরিফ ওসমান হাদিকে দাফন করা হয়। ছবি সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, তাদের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির নামাজে জানাজা থেকে ঘোষিত দুই দাবির একটিও পূরণ হয়নি। এমনকি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়) খোদা বখস চৌধুরী সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থেকে ব্যাখ্যা পর্যন্ত দেননি।

এমন অবস্থায় সংগঠনটি আগামীকাল সোমবার (২২ ডিসেম্বর) কর্মসূচি ও দাবির বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে। রোববার (২১ ডিসেম্বর) রাতে ইনকিলাব মঞ্চের ফেসবুক পেজে দেওয়া পোস্টে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, ১০ লক্ষাধিক মানুষের উপস্থিতি ও উচ্চকিত সম্মতিতে ঘোষিত ইনকিলাব মঞ্চের দুই দফা দাবির একটিও মানা হয় নাই। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও সহকারী উপদেষ্টা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থেকে ব্যাখ্যা দেয় নাই। সিভিল-মিলিটারি গোয়েন্দা সংস্থার ওপর প্রধান উপদেষ্টার পূর্ণ কর্তৃত্ব স্থাপনপূর্বক সেসব সংস্থা থেকে হাসিনার চরদের গ্রেপ্তারর করা হয় নাই।

ইনকিলাব মঞ্চের অভিযোগ, অ্যাডিশনাল আইজিপিকে দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করিয়ে শহীদ ওসমান হাদি হত্যার ঘটনাকে তুচ্ছ ও অগুরুত্বপূর্ণ দেখানো হয়েছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে আগামীর কর্মসূচি ও দাবি নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের সংবাদ সম্মেলন হবে সোমবার দুপুর ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে।

এর আগে আরেক পোস্টে শহীদ শরিফ ওসমান বিন হাদি হত্যার ঘটনায় এখন পর্যন্ত সরকার কী পদক্ষেপ নিয়েছে, তা জানতে চায় ইনকিলাব মঞ্চ। জুলাই গণঅভ্যুত্থান অনুপ্রাণিত সাংস্কৃতিক প্লাটফর্মটি ফেসবুক পোস্টে বলেছে, আজকের সংবাদ সম্মেলনে যথোপযুক্ত ব্যাখ্যা প্রদানে ব্যর্থ হলে ব্যর্থতার দায় নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও সহকারী উপদেষ্টা– উভয়কে পদত্যাগ করতে হবে।

পোস্টে তারা দুই দফা দাবি জানায়–

১. খুনি, খুনের পরিকল্পনাকারী, খুনের সহায়তাকারী, পলায়নে সহযোগী, আশ্রয়দাতাসহ পুরো খুনি চক্রকে অতি দ্রুত বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। ১২ ডিসেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত বিচারের জন্য কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, সরকারের তরফ থেকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ও সহকারী উপদেষ্টা খোদা বকসকে জাতির সামনে ব্যাখ্যা দিতে হবে।

২. গোয়েন্দা সংস্থার মধ্যে ঘাপটি মেরে লুকিয়ে থাকা ফ্যাসিস্টের দোসরদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার ও বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।

রোববার সন্ধ্যায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেন উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। সেখানে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মূল আসামিরা দেশে আছে নাকি পালিয়ে গেছে, তা নিশ্চিত করা যায়নি বলে জানান পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি খন্দকার রফিকুল ইসলাম।

এ সময় বিজিবি ময়মনসিংহ সেক্টরের কমান্ডার কর্নেল সরকার মুস্তাফিজুর রহমান, ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন নজরুল ইসলাম, ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) শফিকুল ইসলাম ও র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক উইং কমান্ডার এম জেড এম ইন্তেখাব চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে গতকাল শনিবার দুপুরে ওসমান হাদির নামাজে জানাজার আগে বক্তৃতায় ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আবদুল্লাহ আল জাবের বলেছিলেন, আমরা শহীদ শরিফ ওসমান বিন হাদির হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে অগ্রগতি জানাতে চাই। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়) খোদা বখস চৌধুরীকে ২৪ ঘণ্টার সময় মধ্যে এ বিষয়ে জবাব দিতে হবে।

তিনি বলেছিলেন, ‘আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা (জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী) ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (খোদা বখস চৌধুরী) জনতার সামনে এসে বলতে হবে, গত এক সপ্তাহে তাঁরা কতটুকু এগিয়েছেন। এর জবাব দিতে না পারলে তাঁদের অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে। সিভিল-মিলিটারি ইন্টেলিজেন্সের (সামরিক-বেসামরিক গোয়েন্দা) মধ্যে ঘাপটি মেরে বসে থাকা আওয়ামী সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করুন।’

গত ১২ ডিসেম্বর দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরের বক্স কালভার্ট সড়কে রিকশায় করে যাওয়ার সময় ওসমান হাদির মাথায় গুলি করে সন্ত্রাসীরা। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে ঢাকা মেডিকেল, পরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য ১৫ ডিসেম্বর এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ওসমান হাদিকে সিঙ্গাপুর নিয়ে হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার রাতে তাঁর মৃত্যু হয়।

Ad 300x250
সর্বাধিক পঠিত

সম্পর্কিত