leadT1ad

হাদির জানাজা পড়ালেন তাঁর বড় ভাই আবু বকর, চাইলেন বিচার

স্ট্রিম প্রতিবেদক
স্ট্রিম প্রতিবেদক
ঢাকা

প্রকাশ : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ১০
শরিফ ওসমান হাদির ভাই ড. আবু বকর সিদ্দিক। ছবি; বিটিভির ভিডিও থেকে

রাজধানী ঢাকার রাস্তায় প্রকাশ্যে আততায়ীর গুলিতে নিহত ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। লাখো জনতার উপস্থিতিতে এই জানাজায় ইমামতি করেন ও বক্তব্য দেন নিহতের বড় ভাই ড. আবু বকর সিদ্দিক। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি এই হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করেন এবং পরিবারের করুণ অবস্থার বর্ণনা দেন।

শনিবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুর আড়াইটায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় লাখো জনতার অংশগ্রহণে হাদির জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা অংশগ্রহণ করেন। পরবর্তীতে হাদির মরদেহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে নেওয়া হয়। সেখানে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের পাশে তাঁকে সমাহিত করা হয়।

হাদির জানাজায় লাখো জনতার উপস্থিতি ছিল। জানাজা শুরুর আগে বক্তব্য দেন হাদির বড় ভাই আবু বকর সিদ্দিক। বক্তব্যের শুরুতেই তিনি বলেন, ‘ছয় ভাই-বোনের মধ্যে সবার ছোট ছিল শরিফ ওসমান হাদি। আজকের তার লাশ আমার কাঁধে বহন করতে হচ্ছে—এর চেয়ে বড় পরিতাপের বিষয় আর কী হতে পারে।’

হাদির জানাজায় লাখো জনতার ঢল। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং
হাদির জানাজায় লাখো জনতার ঢল। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং

হত্যাকাণ্ডের সাত-আট দিন পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ না দেখায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন বরিশালের বাঘিয়া আল আমিন কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ড. আবু বকর সিদ্দিক। তিনি প্রশ্ন রাখেন, ‘রাজধানী ঢাকায় জুমার নামাজের পরে খুনি প্রকাশ্যে গুলি করে কীভাবে পার পেয়ে যায়? এর চেয়ে লজ্জার আমাদের আর কিছু নেই। পাঁ থেকে সাত ঘণ্টা সময় পেয়ে তারা যদি বর্ডার পার হয়ে যায়, তবে এই প্রশ্ন আমি জাতির কাছে রেখে গেলাম। আমার ভাই ওসমান হাদির বিচার যেন প্রকাশ্যে এই বাংলার জমিনে আমরা দেখতে পারি—এই ঋণ আমি কোনোদিন ছাড়ব না।’

জানাজায় উপস্থিত মুসল্লিদের সামনে ভাইয়ের আট মাস বয়সী শিশু সন্তান-এর কথা বলতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন আবু বকর সিদ্দিক। তিনি বলেন, ‘ওর বাচ্চার জন্মের সময় ও বলেছিল—ভাই, এমন একটি নাম নির্বাচন করেন যার মধ্যে বিপ্লবী চেতনা ও সাহসিকতা থাকবে। আমি নাম দিয়েছিলাম ‘ফিরনাস’। কিন্তু আজ সেই সন্তানের দিকে তাকানো যায় না। সে কোনোদিন তার বাবার চেহারার কথা মনে করতে পারবে না।’

জাতীয় পতাকায় মোড়ানো ওসমান হাদির মরদেহ
জাতীয় পতাকায় মোড়ানো ওসমান হাদির মরদেহ

তিনি আরও জানান, সন্তানের শোকে তাদের মা ও বোন মাসুমা মানসিক ভারসাম্য হারানোর উপক্রম হয়েছেন। মেজো ভাই ওমর ফারুক, যিনি ঘটনার সময় সঙ্গে ছিলেন, তিনিও ট্রমার মধ্যে আছেন।

বড় ভাই উল্লেখ করেন, শরিফ ওসমান হাদি সবসময় দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার বার্তা দিতেন এবং শহীদি তামান্না লালন করতেন। তিনি বলেন, ‘ওসমান তুমি মরো নাই, তুমি লাখো জনতাকে পাগল বানিয়ে দিয়ে গেছ। আল্লাহ যেন আমার ভাইকে জান্নাতুল ফেরদৌসের মেহমান হিসেবে কবুল করেন।’

পরিশেষে, তিনি দেশবাসীর কাছে নিহত ভাই, তার এতিম সন্তান এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সুস্থতার জন্য দোয়া কামনা করেন।

Ad 300x250

সম্পর্কিত