স্ট্রিম সংবাদদাতা

হিমালয়ের পাদদেশ পেরিয়ে শীতের শুরুতে খাদ্যের সন্ধানে রংপুরে নেমে এসেছিল বিরল পরিযায়ী পাখি হিমালিয়ান গৃধিনী শকুন। কিন্তু নিরাপদ আশ্রয়ের বদলে পীরগাছা উপজেলার এক গ্রামীণ উঠানে নির্মম পরিণতির শিকার হয় পাখিটি। স্থানীয় এক ব্যক্তি শকুনটি ধরে জবাই করে খেয়ে ফেলেন। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
গত সোমবার উপজেলার পারুল ইউনিয়নের মনুরছড়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। স্থানীয় বাসিন্দা ও ভ্যানচালক মো. ইদ্রিস মিয়া (৪৩) তাঁর বাড়ির আঙিনায় পড়ে থাকা একটি বড় আকৃতির শকুনকে ধরে জবাই করেন। পরে সেই মাংস রান্না করে পরিবারের সঙ্গে খান এবং অবশিষ্ট মাংস ফ্রিজে সংরক্ষণ করেন। স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে খবরটি ছড়িয়ে পড়লে গ্রামজুড়ে শুরু হয় আলোচনা ও বিস্ময়। অনেকেই বিষয়টি জানলেও এটি যে একটি সংরক্ষিত ও বিলুপ্তপ্রায় পাখি—তা সম্পর্কে ধারণা ছিল না বলে জানা গেছে।
ঘটনার খবর প্রথমে নজরে আনেন ‘ওয়াইল্ডলাইফ অ্যান্ড স্নেক রেসকিউ টিম ইন বাংলাদেশের’ রংপুর জেলা প্রতিনিধি নূর হাসান নাহিদ। তিনি বিষয়টি দ্রুত পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট দপ্তর এবং বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটকে জানান। এর পরপরই মঙ্গলবার দুপুরে বন বিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসন যৌথভাবে ঘটনাস্থলে অভিযান চালায়।
অভিযানকালে বাড়ির ভেতর থেকে শকুনটির রান্না করা মাংস, ফ্রিজে রাখা কাঁচা মাংস এবং ছিন্নভিন্ন হাড়, চামড়া ও পাখার অংশ উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক তদন্তে নিশ্চিত হওয়া যায়, নিহত পাখিটি হিমালিয়ান গৃধিনী, যা বাংলাদেশে অত্যন্ত বিরল এবং আইন অনুযায়ী সম্পূর্ণরূপে সংরক্ষিত প্রজাতি।
বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনের নজরে এলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেবাশীষ বসাক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। আদালতে অভিযুক্ত ইদ্রিস মিয়া নিজের অপরাধ স্বীকার করেন। তাকে বন্য প্রাণী সংরক্ষণ আইনের আওতায় দুই হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয় এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের অপরাধ না করার শর্তে লিখিত অঙ্গীকারনামা নেওয়া হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেবাশীষ বসাক বলেন, ‘খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছি। অভিযুক্ত ব্যক্তি অপরাধ স্বীকার করেছেন। তবে এই ঘটনার মাধ্যমে স্পষ্ট হয়েছে—গ্রামীণ এলাকায় বন্য প্রাণী আইন সম্পর্কে মানুষের সচেতনতা এখনও খুব কম। আমরা শিগগিরই সচেতনতামূলক কার্যক্রম শুরু করব।’
এ বিষয়ে ওয়াইল্ডলাইফ অ্যান্ড স্নেক রেসকিউ টিম ইন বাংলাদেশের প্রতিনিধি নূর হাসান নাহিদ বলেন, ‘শকুনকে প্রকৃতির ঝাড়ুদার বলা হয়। তারা মৃত প্রাণীর দেহ খেয়ে পরিবেশকে রোগজীবাণু থেকে পরিষ্কার রাখে। শকুনের মাংস খাওয়া মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। কিন্তু অজ্ঞতার কারণে মানুষ বিষয়টি জানে না। শকুন হত্যা আইনত গুরুতর অপরাধ হলেও সেটির প্রয়োগ ও প্রচার এখনও যথেষ্ট নয়।’

সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা সহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা শুরু থেকেই বন বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করেছি। ভবিষ্যতে যেন এমন ঘটনা আর না ঘটে, সে জন্য মাঠপর্যায়ে সচেতনতা বাড়াতে আমরা আরও সক্রিয় হব।’
গত তিন বছরে ১০টি শকুন উদ্ধার করেছেন সাপ ও বন্য প্রাণী উদ্ধারকর্মী লিজেন আহম্মেদ প্রান্ত। তিনি জানান, পশুচিকিৎসায় ডাইক্লোফেনাক ও কিটোপ্রোফেনের নির্বিচার ব্যবহারের কারণে দেশীয় শকুন আজ চরমভাবে বিলুপ্তপ্রায়। ২০১৫ সালের জরিপে দেশে মাত্র ২৬০টি দেশীয় শকুন অবশিষ্ট থাকার তথ্য পাওয়া যায়; এক দশক পর এই সংখ্যা হয়তো আরও কমেছে।
লিজেন আহম্মেদ প্রান্ত বলেন, ‘খাদ্য ও আশ্রয়ের খোঁজে হিমালয় থেকে নেমে আসা হিমালয়ান গৃধিনীগুলোও যদি আমরা সঠিকভাবে সংরক্ষণ করতে না পারি, তাহলে ভবিষ্যতে আবারও কোনো বড় ধরনের জুনোটিক মহামারির ঝুঁকিতে পড়তে পারে দেশ। কারণ, এনথ্রাক্স ভাইরাস মাটির নিচে একশ বছর পর্যন্ত টিকে থাকতে পরে। সেই এনথ্রাক্স শকুনের পাকস্থলীতে হজম হয়। শুধু আইন প্রয়োগ নয়, শকুন সংরক্ষণে সচেতনতা বৃদ্ধি, নিরাপদ ওষুধ ব্যবহারে কঠোর তদারকি, এবং সরকারসহ সংশ্লিষ্ট স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর সমন্বিত উদ্যোগ এখন অত্যন্ত জরুরি।’

হিমালয়ের পাদদেশ পেরিয়ে শীতের শুরুতে খাদ্যের সন্ধানে রংপুরে নেমে এসেছিল বিরল পরিযায়ী পাখি হিমালিয়ান গৃধিনী শকুন। কিন্তু নিরাপদ আশ্রয়ের বদলে পীরগাছা উপজেলার এক গ্রামীণ উঠানে নির্মম পরিণতির শিকার হয় পাখিটি। স্থানীয় এক ব্যক্তি শকুনটি ধরে জবাই করে খেয়ে ফেলেন। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
গত সোমবার উপজেলার পারুল ইউনিয়নের মনুরছড়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। স্থানীয় বাসিন্দা ও ভ্যানচালক মো. ইদ্রিস মিয়া (৪৩) তাঁর বাড়ির আঙিনায় পড়ে থাকা একটি বড় আকৃতির শকুনকে ধরে জবাই করেন। পরে সেই মাংস রান্না করে পরিবারের সঙ্গে খান এবং অবশিষ্ট মাংস ফ্রিজে সংরক্ষণ করেন। স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে খবরটি ছড়িয়ে পড়লে গ্রামজুড়ে শুরু হয় আলোচনা ও বিস্ময়। অনেকেই বিষয়টি জানলেও এটি যে একটি সংরক্ষিত ও বিলুপ্তপ্রায় পাখি—তা সম্পর্কে ধারণা ছিল না বলে জানা গেছে।
ঘটনার খবর প্রথমে নজরে আনেন ‘ওয়াইল্ডলাইফ অ্যান্ড স্নেক রেসকিউ টিম ইন বাংলাদেশের’ রংপুর জেলা প্রতিনিধি নূর হাসান নাহিদ। তিনি বিষয়টি দ্রুত পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট দপ্তর এবং বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটকে জানান। এর পরপরই মঙ্গলবার দুপুরে বন বিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসন যৌথভাবে ঘটনাস্থলে অভিযান চালায়।
অভিযানকালে বাড়ির ভেতর থেকে শকুনটির রান্না করা মাংস, ফ্রিজে রাখা কাঁচা মাংস এবং ছিন্নভিন্ন হাড়, চামড়া ও পাখার অংশ উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক তদন্তে নিশ্চিত হওয়া যায়, নিহত পাখিটি হিমালিয়ান গৃধিনী, যা বাংলাদেশে অত্যন্ত বিরল এবং আইন অনুযায়ী সম্পূর্ণরূপে সংরক্ষিত প্রজাতি।
বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনের নজরে এলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেবাশীষ বসাক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। আদালতে অভিযুক্ত ইদ্রিস মিয়া নিজের অপরাধ স্বীকার করেন। তাকে বন্য প্রাণী সংরক্ষণ আইনের আওতায় দুই হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয় এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের অপরাধ না করার শর্তে লিখিত অঙ্গীকারনামা নেওয়া হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেবাশীষ বসাক বলেন, ‘খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছি। অভিযুক্ত ব্যক্তি অপরাধ স্বীকার করেছেন। তবে এই ঘটনার মাধ্যমে স্পষ্ট হয়েছে—গ্রামীণ এলাকায় বন্য প্রাণী আইন সম্পর্কে মানুষের সচেতনতা এখনও খুব কম। আমরা শিগগিরই সচেতনতামূলক কার্যক্রম শুরু করব।’
এ বিষয়ে ওয়াইল্ডলাইফ অ্যান্ড স্নেক রেসকিউ টিম ইন বাংলাদেশের প্রতিনিধি নূর হাসান নাহিদ বলেন, ‘শকুনকে প্রকৃতির ঝাড়ুদার বলা হয়। তারা মৃত প্রাণীর দেহ খেয়ে পরিবেশকে রোগজীবাণু থেকে পরিষ্কার রাখে। শকুনের মাংস খাওয়া মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। কিন্তু অজ্ঞতার কারণে মানুষ বিষয়টি জানে না। শকুন হত্যা আইনত গুরুতর অপরাধ হলেও সেটির প্রয়োগ ও প্রচার এখনও যথেষ্ট নয়।’

সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা সহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা শুরু থেকেই বন বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করেছি। ভবিষ্যতে যেন এমন ঘটনা আর না ঘটে, সে জন্য মাঠপর্যায়ে সচেতনতা বাড়াতে আমরা আরও সক্রিয় হব।’
গত তিন বছরে ১০টি শকুন উদ্ধার করেছেন সাপ ও বন্য প্রাণী উদ্ধারকর্মী লিজেন আহম্মেদ প্রান্ত। তিনি জানান, পশুচিকিৎসায় ডাইক্লোফেনাক ও কিটোপ্রোফেনের নির্বিচার ব্যবহারের কারণে দেশীয় শকুন আজ চরমভাবে বিলুপ্তপ্রায়। ২০১৫ সালের জরিপে দেশে মাত্র ২৬০টি দেশীয় শকুন অবশিষ্ট থাকার তথ্য পাওয়া যায়; এক দশক পর এই সংখ্যা হয়তো আরও কমেছে।
লিজেন আহম্মেদ প্রান্ত বলেন, ‘খাদ্য ও আশ্রয়ের খোঁজে হিমালয় থেকে নেমে আসা হিমালয়ান গৃধিনীগুলোও যদি আমরা সঠিকভাবে সংরক্ষণ করতে না পারি, তাহলে ভবিষ্যতে আবারও কোনো বড় ধরনের জুনোটিক মহামারির ঝুঁকিতে পড়তে পারে দেশ। কারণ, এনথ্রাক্স ভাইরাস মাটির নিচে একশ বছর পর্যন্ত টিকে থাকতে পরে। সেই এনথ্রাক্স শকুনের পাকস্থলীতে হজম হয়। শুধু আইন প্রয়োগ নয়, শকুন সংরক্ষণে সচেতনতা বৃদ্ধি, নিরাপদ ওষুধ ব্যবহারে কঠোর তদারকি, এবং সরকারসহ সংশ্লিষ্ট স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর সমন্বিত উদ্যোগ এখন অত্যন্ত জরুরি।’

ভারতে আটক ৩২ বাংলাদেশি ও বাংলাদেশে আটক ৪৭ ভারতীয় জেলের পারস্পরিক প্রত্যাবাসন সম্পন্ন হয়েছে।
৩ ঘণ্টা আগে
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, বাংলাদেশের শ্রমবাজারে অনানুষ্ঠানিক শ্রমিকের সংখ্যা ৮৫ শতাংশ হলেও তাঁদের অধিকাংশেরই স্বীকৃতি নেই। চা শ্রমিক, মৎস্যজীবী বা গৃহশ্রমিকদের অবদান ছাড়া অর্থনীতি অচল।
৩ ঘণ্টা আগে
ইউরোফাইটার টাইফুন জঙ্গি বিমান কিনতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এই লক্ষ্যে ইতালীয় প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম নির্মাতা প্রতিষ্ঠান লিওনার্দো এসপিও’র সঙ্গে লেটার অব ইনটেন্ট (এলওআই) বা সম্মতিপত্র সই করেছে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী।
৪ ঘণ্টা আগে
যুব হকি বিশ্বকাপের চ্যালেঞ্জার বিভাগে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় বাংলাদেশ যুব হকি দলকে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
৪ ঘণ্টা আগে