আমেরিকার রাজনীতির গতিপথ বদলে দেওয়ার মতো এক আরেক ঐতিহাসিক নির্বাচনের সাক্ষী হলো যুক্তরাষ্ট্রের শহর সিয়াটল। বড় প্রযুক্তি সংস্থাগুলোর টাকা আর করপোরেট শক্তির পৃষ্ঠপোষকতাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে সিয়াটলের নতুন মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন ৪৩ বছর বয়সী সমাজতান্ত্রিক জননেত্রী কেইটি উইলসন।
স্ট্রিম ডেস্ক

আমেরিকার রাজনীতির গতিপথ বদলে দেওয়ার মতো এক আরেক ঐতিহাসিক নির্বাচনের সাক্ষী হলো যুক্তরাষ্ট্রের শহর সিয়াটল। বড় প্রযুক্তি সংস্থাগুলোর টাকা আর করপোরেট শক্তির পৃষ্ঠপোষকতাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে সিয়াটলের নতুন মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন ৪৩ বছর বয়সী সমাজতান্ত্রিক জননেত্রী কেইটি উইলসন। তিনি বর্তমান মেয়র ব্রুস হ্যারেলকে পরাজিত করে সিয়াটলের মেয়র হলেন। এই জয়কে নিউইয়র্কের জোহরান মামদানির উত্থানের পর আমেরিকায় সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের দ্বিতীয় বড় ‘বিস্ফোরণ’ হিসেবে দেখছে রাজনৈতিক মহল।
আয় বৈষম্যের প্রতিক্রিয়া
ধনীদের কোমর ভাঙার ডাক দিয়ে নির্বাচনে নামেন উইলসন। তিনি সিয়াটলের ট্রানজিট রাইডার্স ইউনিয়নের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। তাঁর এই বিজয় শুধু একটি স্থানীয় চমক নয়। এটি ধনকুবের শ্রেণি এবং সব কিছু যেমন আছে তেমনই চলবে— এই ধারণার বিরুদ্ধে সিয়াটলের সাধারণ মানুষের এক সুস্পষ্ট হুঁশিয়ারি। ভাড়াটিয়া, বাস-যাত্রী এবং কমিউনিটি সংগঠক হিসেবে উইলসনের প্রচারের মূলমন্ত্র ছিল সরল— ধনীদের উপর কর বসাও, মানুষের জন্য আবাসন নিশ্চিত করো, আর শহরকে পুঁজি তহবিলের জন্য নয়, মানুষের জন্য তৈরি করো।
সিয়াটল ইমার্জেন্সি ফিনান্সিয়াল আউটলুক অনুযায়ী, ২০২০ সালে সিয়াটলে সর্বোচ্চ বার্ষিক ১ শতাংশ ধনী ব্যক্তির গড় আয় ছিল ৭ লাখ ৯৭ হাজার মার্কিন ডলারের বেশি। অপর দিকে নিম্নতম ২০ শতাংশ আয়কারীর গড় আয় মাত্র ২৩ হাজার ডলার। এই ক্রমবর্ধমান আয় বৈষম্যই ছিল উইলসনের প্রধান নির্বাচনী বক্তব্য।
উইলসনের জয়ের মূল কারণ হিসেবে বিশ্লেষকরা বলছেন, আবাসন সঙ্কট। রিয়েল এস্টেট সংস্থা যিলো-এর তথ্য অনুযায়ী, সিয়াটলের গড় মাসিক ভাড়া গত পাঁচ বছরে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে সাধারণ কর্মজীবী মানুষ, বিশেষত তরুণ প্রজন্ম মিলেনিয়াল ও জেন জি-এর জীবনযাত্রা কঠিন হয়ে গেছে। উইলসনের দাবি, আবাসনকে 'মানবাধিকার' হিসেবে ঘোষণা করে ধনী ব্যক্তিদের ওপর নতুন 'ক্যাপিটাল গেইনস ট্যাক্স' বসিয়ে সাশ্রয়ী আবাসন প্রকল্পে অর্থায়ন করা হবে। এই প্রস্তাবটি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হ্যারেলের মতো মধ্যপন্থী রাজনীতিবিদরা বাতিল করার চেষ্টা করেছিলেন। এর ফলে উইলসনের জনপ্রিয়তা আরও বেড়ে যায়।

প্রতিষ্ঠিত রাজনীতির পতন
কেইটি উইলসন থাকেন ৬০০ বর্গফুটের একটা ভাড়া ফ্ল্যাটে। নিজের গাড়ি নেই। বাসে চড়ে যাতায়াত করেন। তিনি সেই ব্রুস হ্যারেলকে পরাজিত করলেন যিনি দীর্ঘ দুই দশক ধরে সিয়াটলের রাজনীতিতে সক্রিয়। যার সঙ্গে আছে করপোরেট দুনিয়ার সমর্থন।
নির্বাচনের শুরুতে হ্যারেল এগিয়ে থাকলেও, শেষ মুহূর্তে গণনায় আসা তরুণ ভোটার, ভাড়াটিয়া এবং ট্রানজিট ব্যবহারকারীদের 'লেইট ব্যালট' উইলসনের পক্ষে নাটকীয় মোড় নেয়। এই ভোটাররা সিয়াটলের জনসংখ্যার একটি বড় অংশ। এমাজনের মতো বড় প্রযুক্তি সংস্থাগুলোর আবাসন বাজারে যে মুনাফা লুটছে তাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এরাই।
এই নির্বাচনে শুধু মেয়র পদেই নয়, সিটি কাউন্সিলের প্রগতিশীল প্রার্থীরাও জয়লাভ করেছেন। সিয়াটলের ভোটাররা স্পষ্ট করে দিয়েছে, তথাকথিত 'অভিজ্ঞতা' কোনো কাজে আসে না। কারণ সেই অভিজ্ঞতা শুধুমাত্র আকাশছোঁয়া ভাড়া এবং ধনীদের আরাম নিশ্চিত করে। উইলসনের বিজয় প্রমাণ করলো, সিয়াটলের অস্থির জনগণ স্থিতাবস্থা এবং করপোরেট স্বার্থের রাজনীতির প্রতি ক্লান্ত।
নতুন আমেরিকার স্বপ্ন
সিয়াটলের এই নির্বাচনকে জাতীয় পর্যায়ে একটি 'ব্লুপ্রিন্ট' হিসেবে দেখা হচ্ছে। নিউইয়র্কে জোহরান মামদানির উত্থানের পর কেইটি উইলসনের বিজয় দেশের অন্যান্য বড় শহরগুলোর করপোরেট-সমর্থিত রাজনীতিবিদদের কাছে এক স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে। শ্রমজীবী মানুষ আর অপেক্ষা করতে প্রস্তুত নয়।
উইলসন তাঁর বিজয়ের পর বলেছেন, "আমরা সিয়াটলে শুধু একজন মেয়র নির্বাচন করিনি, আমরা আমেরিকার ধনী শ্রেণির বিরুদ্ধে এক নতুন যুদ্ধের সূচনা করলাম।"
এই জয় সিয়াটলকে নিউইয়র্কের পাশাপাশি আমেরিকার সবচেয়ে বড় বামপন্থী যুদ্ধক্ষেত্রগুলোর একটিতে পরিণত করতে প্রস্তুত। উইলসনের সমাজতান্ত্রিক প্ল্যাটফর্ম এখন নতুন মেয়র এবং নতুন সিটি কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন কিছু করতে প্রস্তুতি নিচ্ছে। সিয়াটল এখন মানুষের জন্য, পুঁজির জন্য নয়—উইলসনের এই সংকল্প এক নতুন ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে রয়েছে।

আমেরিকার রাজনীতির গতিপথ বদলে দেওয়ার মতো এক আরেক ঐতিহাসিক নির্বাচনের সাক্ষী হলো যুক্তরাষ্ট্রের শহর সিয়াটল। বড় প্রযুক্তি সংস্থাগুলোর টাকা আর করপোরেট শক্তির পৃষ্ঠপোষকতাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে সিয়াটলের নতুন মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন ৪৩ বছর বয়সী সমাজতান্ত্রিক জননেত্রী কেইটি উইলসন। তিনি বর্তমান মেয়র ব্রুস হ্যারেলকে পরাজিত করে সিয়াটলের মেয়র হলেন। এই জয়কে নিউইয়র্কের জোহরান মামদানির উত্থানের পর আমেরিকায় সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের দ্বিতীয় বড় ‘বিস্ফোরণ’ হিসেবে দেখছে রাজনৈতিক মহল।
আয় বৈষম্যের প্রতিক্রিয়া
ধনীদের কোমর ভাঙার ডাক দিয়ে নির্বাচনে নামেন উইলসন। তিনি সিয়াটলের ট্রানজিট রাইডার্স ইউনিয়নের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। তাঁর এই বিজয় শুধু একটি স্থানীয় চমক নয়। এটি ধনকুবের শ্রেণি এবং সব কিছু যেমন আছে তেমনই চলবে— এই ধারণার বিরুদ্ধে সিয়াটলের সাধারণ মানুষের এক সুস্পষ্ট হুঁশিয়ারি। ভাড়াটিয়া, বাস-যাত্রী এবং কমিউনিটি সংগঠক হিসেবে উইলসনের প্রচারের মূলমন্ত্র ছিল সরল— ধনীদের উপর কর বসাও, মানুষের জন্য আবাসন নিশ্চিত করো, আর শহরকে পুঁজি তহবিলের জন্য নয়, মানুষের জন্য তৈরি করো।
সিয়াটল ইমার্জেন্সি ফিনান্সিয়াল আউটলুক অনুযায়ী, ২০২০ সালে সিয়াটলে সর্বোচ্চ বার্ষিক ১ শতাংশ ধনী ব্যক্তির গড় আয় ছিল ৭ লাখ ৯৭ হাজার মার্কিন ডলারের বেশি। অপর দিকে নিম্নতম ২০ শতাংশ আয়কারীর গড় আয় মাত্র ২৩ হাজার ডলার। এই ক্রমবর্ধমান আয় বৈষম্যই ছিল উইলসনের প্রধান নির্বাচনী বক্তব্য।
উইলসনের জয়ের মূল কারণ হিসেবে বিশ্লেষকরা বলছেন, আবাসন সঙ্কট। রিয়েল এস্টেট সংস্থা যিলো-এর তথ্য অনুযায়ী, সিয়াটলের গড় মাসিক ভাড়া গত পাঁচ বছরে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে সাধারণ কর্মজীবী মানুষ, বিশেষত তরুণ প্রজন্ম মিলেনিয়াল ও জেন জি-এর জীবনযাত্রা কঠিন হয়ে গেছে। উইলসনের দাবি, আবাসনকে 'মানবাধিকার' হিসেবে ঘোষণা করে ধনী ব্যক্তিদের ওপর নতুন 'ক্যাপিটাল গেইনস ট্যাক্স' বসিয়ে সাশ্রয়ী আবাসন প্রকল্পে অর্থায়ন করা হবে। এই প্রস্তাবটি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হ্যারেলের মতো মধ্যপন্থী রাজনীতিবিদরা বাতিল করার চেষ্টা করেছিলেন। এর ফলে উইলসনের জনপ্রিয়তা আরও বেড়ে যায়।

প্রতিষ্ঠিত রাজনীতির পতন
কেইটি উইলসন থাকেন ৬০০ বর্গফুটের একটা ভাড়া ফ্ল্যাটে। নিজের গাড়ি নেই। বাসে চড়ে যাতায়াত করেন। তিনি সেই ব্রুস হ্যারেলকে পরাজিত করলেন যিনি দীর্ঘ দুই দশক ধরে সিয়াটলের রাজনীতিতে সক্রিয়। যার সঙ্গে আছে করপোরেট দুনিয়ার সমর্থন।
নির্বাচনের শুরুতে হ্যারেল এগিয়ে থাকলেও, শেষ মুহূর্তে গণনায় আসা তরুণ ভোটার, ভাড়াটিয়া এবং ট্রানজিট ব্যবহারকারীদের 'লেইট ব্যালট' উইলসনের পক্ষে নাটকীয় মোড় নেয়। এই ভোটাররা সিয়াটলের জনসংখ্যার একটি বড় অংশ। এমাজনের মতো বড় প্রযুক্তি সংস্থাগুলোর আবাসন বাজারে যে মুনাফা লুটছে তাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এরাই।
এই নির্বাচনে শুধু মেয়র পদেই নয়, সিটি কাউন্সিলের প্রগতিশীল প্রার্থীরাও জয়লাভ করেছেন। সিয়াটলের ভোটাররা স্পষ্ট করে দিয়েছে, তথাকথিত 'অভিজ্ঞতা' কোনো কাজে আসে না। কারণ সেই অভিজ্ঞতা শুধুমাত্র আকাশছোঁয়া ভাড়া এবং ধনীদের আরাম নিশ্চিত করে। উইলসনের বিজয় প্রমাণ করলো, সিয়াটলের অস্থির জনগণ স্থিতাবস্থা এবং করপোরেট স্বার্থের রাজনীতির প্রতি ক্লান্ত।
নতুন আমেরিকার স্বপ্ন
সিয়াটলের এই নির্বাচনকে জাতীয় পর্যায়ে একটি 'ব্লুপ্রিন্ট' হিসেবে দেখা হচ্ছে। নিউইয়র্কে জোহরান মামদানির উত্থানের পর কেইটি উইলসনের বিজয় দেশের অন্যান্য বড় শহরগুলোর করপোরেট-সমর্থিত রাজনীতিবিদদের কাছে এক স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে। শ্রমজীবী মানুষ আর অপেক্ষা করতে প্রস্তুত নয়।
উইলসন তাঁর বিজয়ের পর বলেছেন, "আমরা সিয়াটলে শুধু একজন মেয়র নির্বাচন করিনি, আমরা আমেরিকার ধনী শ্রেণির বিরুদ্ধে এক নতুন যুদ্ধের সূচনা করলাম।"
এই জয় সিয়াটলকে নিউইয়র্কের পাশাপাশি আমেরিকার সবচেয়ে বড় বামপন্থী যুদ্ধক্ষেত্রগুলোর একটিতে পরিণত করতে প্রস্তুত। উইলসনের সমাজতান্ত্রিক প্ল্যাটফর্ম এখন নতুন মেয়র এবং নতুন সিটি কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন কিছু করতে প্রস্তুতি নিচ্ছে। সিয়াটল এখন মানুষের জন্য, পুঁজির জন্য নয়—উইলসনের এই সংকল্প এক নতুন ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে রয়েছে।

জাপানের উত্তর-পূর্ব উপকূলে শক্তিশালী ৭ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। ভূমিকম্পের পর ওই এলাকায় সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়েছে এবং বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
৬ ঘণ্টা আগে
পর্যটকদের কাছে হিমালয় এবং কাঠমাণ্ডু আকর্ষণীয় স্থানের শীর্ষে। কিন্তু বন্যপ্রাণীতে ভরপুর, জাতীয় পার্ক এবং দৃষ্টিনন্দন অতিথিশালাসমৃদ্ধ নেপালের তেরাই নিম্নাঞ্চল সম্পর্কে পর্যটকরা খুব একটা জানে না।
৭ ঘণ্টা আগে
গত জানুয়ারিতে চীন জানায় যে তাদের পণ্য ও সেবাখাতে বাণিজ্য উদ্বৃত্ত প্রায় ১ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে—যা বিশ্বে কোনো দেশের জন্য প্রথম অভিজ্ঞতা। কিন্তু ২০২৫ সালের প্রথম ১১ মাসে চীন সেই সীমাও অতিক্রম করেছে। সোমবার প্রকাশিত কাস্টমস তথ্য অনুযায়ী, নভেম্বর পর্যন্ত চীনের মোট বাণিজ্য উদ্বৃত্ত দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ৮
৯ ঘণ্টা আগে
সিরিয়ায় আসাদ পরিবারের ৫৩ বছরের শাসনের পতনের এক বছর পূর্ণ হলো আজ। গত বছর এই দিনে বাশার আল-আসাদের পতনের মধ্য দিয়ে সিরিয়ায় প্রায় ১৪ বছরের গৃহযুদ্ধেরও সমাপ্তি ঘটে। আহমদ আল-শারা (সাবেক আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি) নেতৃত্বাধীন হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) অন্তর্বর্তী সরকার এখন দেশ পরিচালনা করছে।
১২ ঘণ্টা আগে