leadT1ad

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস: শ্রদ্ধাঞ্জলি দেয়নি রাকসু, জাকসুর ছিলেন ‘দুইজন’

স্ট্রিম প্রতিবেদক
স্ট্রিম প্রতিবেদক
ঢাকা

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে শ্রদ্ধা নিবেদন করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু)। স্ট্রিম ছবি

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে শ্রদ্ধা নিবেদন নিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদকে (রাকসু) ঘিরে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। জাকসুর ২৫ সদস্যের মধ্যে মাত্র দুজনকে মূল বেদিতে শ্রদ্ধা জানাতে দেখা গেছে। অন্যদিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন শ্রদ্ধা জানালেও রাকসুর পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলি দেওয়া হয়নি। তবে সমালোচনার মুখে দুপুরে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে রাকসু।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও জাকসুর পক্ষ থেকে মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করা হয়। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. আবদুর রব প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

শ্রদ্ধা নিবেদনের ছবিতে দেখা গেছে, বেদিতে জাকসুর পক্ষ থেকে ছিলেন সহসভাপতি (ভিপি) আব্দুর রশিদ জিতু ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মহিবুল্লাহ শেখ। তাঁদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের পাশাপাশি বিভিন্ন হল সংসদের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

জাকসুর নির্বাচিত সদস্যসংখ্যা ২৫। কিন্তু শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনের সময় উপস্থিত ছিলেন মাত্র দুই জন। এ নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মেহদী আহমেদ ফেসবুকে লিখেছেন, ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি দিচ্ছেন জাকসুর শুধু দুজন সদস্য, শিবিরের প্যানেলের ২০ জনের মধ্যে একজনও নেই, ছাত্রশক্তির দুইজনেরও একজনও নেই। স্বতন্ত্র প্রার্থী যে তিনজন জিতেছিলেন তাঁদের মধ্যে দুইজন আছেন এখানে। এই হচ্ছে আমাদের জাকসুর অবস্থা।’

উল্লেখ্য, জাকসুর নির্বাচিত ২৫ সদস্যের মধ্যে ভিপি, সাংস্কৃতিক সম্পাদক, ক্রীড়া সম্পাদক ও একজন কার্যকরী সদস্য স্বতন্ত্র নির্বাচন করে জয়ী হয়েছেন। সমাজসেবা সম্পাদক ও কার্যকরী সদস্যের একটি পদে নির্বাচিত হন জাতীয় ছাত্রশক্তি প্যানেলের সদস্যরা। বাকি ২০ জনই ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্যানেল থেকে নির্বাচিত হয়েছেন।

শিবির প্যানেল থেকে নির্বাচিত জাকসুর সদস্যরা বলছেন, তাঁদের অনেকেই শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করতে গিয়েছিলেন, তবে ছবিতে আসেননি। এ বিষয়ে জাকসুর সাধারণ সম্পাদক (জিএস) মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ছিলাম সেখানে। ওমরাহ করে আসায় টুপি পরা ছিলাম। এ জন্য হয়তো অনেকে চিনতে পারেননি। আমি শুরু থেকেই ছিলাম। এখন আমি এখানে কী বলব, ক্যামেরা অ্যাঙ্গেলে আসলে আমাকে দেখা যায়নি।’

এদিকে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের নেতারাও শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেছেন। তবে ব্যতিক্রম ঘটেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। রাকসুর নেতারা শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেননি। যদিও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছাড়াও ছাত্রদল ও অন্যান্য সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে।

এ বিষয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সহসভাপতি শেখ নুর উদ্দীন আবির বলেন, ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাকসুর কোনো কর্মসূচি নেই। সমালোচনার মুখে পড়ে দুপুর দুইটায় এসে দোয়া মাহফিলের আয়োজনের কথা জানান তাঁরা। এটি কমেডি ছাড়া আর কী! রাকসুর ভিপি দাঁড়িপাল্লায় ভোট চেয়েই কূল পান না, রাকসু আর বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে ভাববেন কখন?’

সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের রাবি শাখার আহ্বায়ক ফুয়াদ রাতুল বলেন, রাকসুসহ গোটা রাবি একটি মুক্তিযুদ্ধবিরোধী গোষ্ঠীর মতাদর্শ প্রতিষ্ঠার যন্ত্রে পরিণত হয়েছে। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে শ্রদ্ধা না জানানো, বিজয় ফিস্ট (ভোজ) বন্ধ রাখা, পাকিস্তানপন্থীদের ঘটা করে উদ্‌যাপন, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে জাশির প্রোপাগান্ডামূলক বই স্থান দেওয়াসহ ইত্যাদি কর্মকাণ্ডে একাত্তরকে মুছে ফেলার প্রচেষ্টা স্পষ্ট। সমালোচনার মুখে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করলেই এই প্রবণতা আড়াল হয় না।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাকসুর পূর্বঘোষিত কোনো কর্মসূচি ছিল না। তবে রোববার সমালোচনা শুরু হলে কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। দুপুরে রাকসুর মিডিয়া বিভাগ থেকে জানানো হয়, বিকেল সাড়ে চারটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে দোয়া মাহফিল ও বিকেল সাড়ে পাঁচটায় রাকসু ভবনের কনফারেন্স কক্ষে আলোচনা সভা হবে।

এ বিষয়ে রাকসুর ভিপি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ ও সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দীন আম্মারের সঙ্গে যোগাযোগ করেও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

Ad 300x250

সম্পর্কিত