leadT1ad

একীভূত পাঁচ ব্যাংক: চলতি সপ্তাহে মিলতে পারে টাকা, ঘেরাও কর্মসূচি স্থগিত

স্ট্রিম প্রতিবেদক
স্ট্রিম প্রতিবেদক
ঢাকা

প্রকাশ : ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৩৫
রোববার সংবাদ সম্মেলন করেন পাঁচ ইসলামী ব্যাংকের গ্রাহকেরা। ছবি: সংগৃহীত

গভর্নরের আশ্বাস ও চলতি সপ্তাহ থেকে টাকা ফেরত দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরুর খবরে বাংলাদেশ ব্যাংক ঘেরাও কর্মসূচি এক সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছেন গ্রাহকেরা। একীভূত হওয়া পাঁচ ইসলামী ব্যাংকের গ্রাহকেরা গতকাল রোববার (৭ ডিসেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তাঁরা।

রোববার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের ভুক্তভোগী গ্রাহকবৃন্দের’ ব্যানারে এ সংবাদ সম্মেলন হয়। সেখানে গ্রাহকদের প্রতিনিধি মো. পলাশ বলেন, ‘গভর্নর বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নিয়ে আগামী সপ্তাহ থেকে ব্যাংকের কার্যক্রম শুরু করার আশ্বাস দিয়েছেন। ফলে আমাদের পূর্বঘোষিত বাংলাদেশ ব্যাংক ঘেরাও কর্মসূচি আপাতত এক সপ্তাহের জন্য স্থগিত করা হলো। আমরা আশা করি, এই সময়ের মধ্যে আমাদের দাবির অনুকূলে আশানুরূপ ফল পাব।’

এর আগে গত ২৮ নভেম্বর প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত গভর্নরকে আলটিমেটাম দিয়েছিলেন গ্রাহকেরা। গতকালের সংবাদ সম্মেলনে ইউনিয়ন, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ও এক্সিম ব্যাংকসহ ভুক্তভোগী পাঁচ ব্যাংকের গ্রাহক প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

গ্রাহকেরা জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের বিমা তহবিল থেকে দুই লাখ টাকা পর্যন্ত ফেরতের উদ্যোগে তাঁরা আশ্বস্ত। তবে বড় অংকের আমানত নিয়ে তাঁদের উদ্বেগ কাটছে না। মো. পলাশ বলেন, ‘কর্তৃপক্ষ ২ লাখ টাকা পর্যন্ত সঞ্চয়ী হিসাবের নিরাপত্তা দিলেও এর বেশি অংকের আমানত, এফডিআর, ডিপিএস ও সঞ্চয়পত্রের বিষয়ে এখনো কোনো লিখিত বা স্পষ্ট ঘোষণা আসেনি। আমরা এ বিষয়ে পরিষ্কার অবস্থান চাই।’

এ সময় গ্রাহকদের পক্ষ থেকে ছয় দফা দাবি তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে—গেজেটের মাধ্যমে সব আমানতকারীর সম্পূর্ণ আমানতের শতভাগ নিরাপত্তার ঘোষণা; টাকা ফেরতের সুস্পষ্ট রূপরেখা (রোডম্যাপ) দ্রুত প্রকাশ করা; ব্যাংকের সব লেনদেন স্বাভাবিক ও প্রয়োজনে মাসিক উত্তোলনসীমা নির্ধারণ; নির্দিষ্ট সীমা রেখে সব ধরনের অনলাইন লেনদেন চালু; ৬৫ বছরের বেশি বয়সী ও ক্যানসার আক্রান্ত আমানতকারীদের পুরো টাকা তাৎক্ষণিক ফেরত দেওয়ার নীতিমালা এবং ১১ ডিসেম্বরের মধ্যে ব্যাংকের স্বাভাবিক কার্যক্রম পুরোপুরি চালু করা।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, একীভূত প্রক্রিয়ায় থাকা সমস্যাগ্রস্ত পাঁচ ব্যাংক—ফার্স্ট সিকিউরিটি, গ্লোবাল ইসলামী, সোশ্যাল ইসলামী, এক্সিম ও ইউনিয়ন ব্যাংকের গ্রাহকেরা চলতি সপ্তাহ থেকেই টাকা ফেরত পেতে পারেন। ইতিমধ্যে পাঁচ ব্যাংককে অধিগ্রহণ করে ‘সম্মিলিত ইসলামি ব্যাংক পিএলসি’র চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিকল্পনা অনুযায়ী, যাঁদের হিসাবে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত আছে, তাঁরা পুরো টাকা তুলতে পারবেন। আর যাঁদের এর বেশি জমা আছে, তাঁরা আপাতত সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা পাবেন। বাকি টাকার বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত জানানো হবে। এর ওপর নতুন মুনাফার হারও ঠিক করা হবে। এ প্রক্রিয়ায় টাকা ফেরত দিতে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা খরচ হবে বলে প্রাথমিকভাবে দেখা গেছে।

টাকা ফেরত পাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু শর্ত দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। শর্তগুলো হলো—হিসাবটি বৈধ জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে খোলা হতে হবে; একাধিক হিসাব থাকলেও টাকা মিলবে একটির বিপরীতে এবং সংশ্লিষ্ট হিসাবে ঋণ থাকলে তা সমন্বয়ের পর টাকা ফেরতের সিদ্ধান্ত হবে।

নতুন গঠিত ‘সম্মিলিত ইসলামি ব্যাংক পিএলসি’র পরিশোধিত মূলধন ঠিক করা হয়েছে ৩৫ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকার দিচ্ছে ২০ হাজার কোটি এবং আমানত বিমা তহবিল থেকে দেওয়া হবে ১৫ হাজার কোটি টাকা। সরকারের অংশের ২০ হাজার কোটি টাকা ইতিমধ্যে ছাড় করা হয়েছে।

Ad 300x250

সম্পর্কিত