leadT1ad

ভারতের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান পররাষ্ট্র উপদেষ্টার

উগ্রপন্থীদের বাংলাদেশ হাইকমিশনে আসতে দেওয়া হয়েছে

স্ট্রিম প্রতিবেদক
স্ট্রিম প্রতিবেদক
ঢাকা

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। ফাইল ছবি

ভারতের নয়াদিল্লিতে হিন্দু চরমপন্থী গোষ্ঠীর ৩০ জনের দলকে কূটনৈতিক এলাকার গভীরে থাকা বাংলাদেশের হাইকমিশনের সামনে আসার সুযোগ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেন, পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ছিল না এবং বাংলাদেশের হাইকমিশনারের পরিবার হুমকিবোধ করেছে। রোববার (২১ ডিসেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।

নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে ‘অখণ্ড হিন্দু রাষ্ট্রসেনা’ ব্যানারে স্লোগান দেওয়ার ঘটনায় কোনো ধরনের নিরাপত্তা বেষ্টনী লঙ্ঘনের চেষ্টা হয়নি বলে দাবি করেছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ভারত সরকারের দাবি, কোনো নিরাপত্তা পরিস্থিতির সৃষ্টি করেনি তারা। বরং কয়েক মিনিট পর পুলিশ তাদের সরিয়ে দিয়েছে। কিন্তু এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের গণমাধ্যম ভ্রান্তিমূলক প্রচারে লিপ্ত হয়েছে।

দিল্লির এই বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ভারতীয় প্রেসকোর যা বলেছে, আমরা তা সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করেছি। বিষয়টি যত সহজভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, তত সহজ নয়। দিল্লিতে বাংলাদেশ মিশন কূটনৈতিক এলাকার গভীরে অবস্থিত। এটি বাইরে কোথাও নয় বা কূটনৈতিক এলাকার শুরুতে নয়।

প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, হিন্দু চরমপন্থী দলের ২৫ থেকে ৩০ সদস্য এতদূর পর্যন্ত আসতে পারবে কেন? এটি একটি স্যানিটাইজড এলাকা। এর মানে তাদের আসতে দেওয়া হয়েছে, যেভাবেই হোক। স্বাভাবিকভাবে আসতে পারা উচিত ছিল না।

তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘তারা হিন্দু নাগরিক হত্যার প্রতিবাদে স্লোগান দিয়ে চলে গেছে, তা নয়। তারা আরও অনেক কিছু বলেছেন, আমরা তা জানি। আমাদের পত্রপত্রিকায় যে নিউজ এসেছে, তা বিভ্রান্তিমূলক বলা হয়েছে। তবে আমাদের মিডিয়ায় মোটামুটি সঠিক রিপোর্ট এসেছে, যেটুকু তথ্য আমরা পেয়েছি।’

তিনি বলেন, আমার কাছে প্রমাণ নেই যে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। তবে আমরা শুনেছি যে হুমকি দেওয়া হয়েছে। কোনো একজনের কথার মধ্যে এটা আসতে পারে। তবে আমার প্রশ্ন হলো, তারা এতদূর এসে হুমকি দিতে পারবে কেন?

হিন্দুত্ববাদীদের হুমকির বিষয় আগে থেকে বাংলাদেশকে জানানো হয়নি উল্লেখ করে তৌহিদ হোসেন বলেন, সাধারণত কোনো বিক্ষোভকারী গোষ্ঠী যখন যায়, সেটা আগে থেকে অবগত করা হয়। পুলিশ তাদের দূরে একটি জায়গায় আটকে দেয়। কখনো কোনো কাগজপত্র থাকলে দুজন এসে দেয়। এটি হলো নর্মস। সবখানে এমনই হয়, আমাদের এখানে আমরা এটা গ্রহণ করি না।

তিনি বলেন, একজন বাংলাদেশি নাগরিক নৃশংসভাবে নিহত হয়েছেন। এ ঘটনার সঙ্গে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা গুলিয়ে ফেলার কোনো মানে নেই। তিনি বাংলাদেশের নাগরিক, যাকে হত্যা করা হয়েছে। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে পদক্ষেপ নিয়েছে, কয়েকজন হয়েছে। এ ধরনের ঘটনা কেবল বাংলাদেশে ঘটে না, এ অঞ্চলের সব দেশেই ঘটে। প্রতিটি দেশের দায়িত্ব হলো যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া। অন্যদেরও তা করা উচিত ছিল। কাজেই এভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, তা গ্রহণযোগ্য নয়।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমরা মনে করি, এই ক্ষেত্রে নরমাল সিকিউরিটি যথাযথভাবে পালন করা হয়নি। তারা বলেছে, আমাদের সব মিশনের নিরাপত্তা দিচ্ছে, আমরা তা নোট করেছি।

আগরতলায় আমাদের মিশন ধ্বংসের ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভারতে অন্যান্য বাংলাদেশি মিশনের ওপর এভাবে হামলার শঙ্কা আছে কিনা, তা আমরা সেনসিটাইজ করেছি। আশা করছি, এ ধরনের পরিবেশ আর কখনো সৃষ্টি হবে না। তারা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখে, আমরাও রাখি। আমরা যেটা বলার, বলি। এখনো ভরসা রাখছি, যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তৌহিদ হোসেন বলেন, হিন্দু উগ্রপন্থীরা এখানে এসে দুটি স্লোগান দিয়েছে, শুধু সেটিই। সেখানে একটি পরিবার বাস করে, বাংলাদেশের হাইকমিশনারের পরিবার। তারা হুমকিবোধ করেছে। কারণ তখন পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ছিল না। দুটি সিকিউরিটি গার্ড ছিল, যারা চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিল।

Ad 300x250
সর্বাধিক পঠিত

সম্পর্কিত