leadT1ad

বিজয়ের অনুষ্ঠানে ‘রাজাকারের পাঠ মঞ্চ’ নাটিকায় জামায়াত নেতাদের বাধা, শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ

স্ট্রিম সংবাদদাতা
স্ট্রিম সংবাদদাতা
লক্ষ্মীপুর

প্রকাশ : ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ৫৬
রামগতির আলেকজান্ডার সরকারি কলেজে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান। ছবি: ভিডিও থেকে সংগৃহীত

লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে ‘রাজাকারের পাঠ মঞ্চ’ নাটিকায় বাধা দিয়েছেন জামায়াত ইসলামীর নেতারা। অনুষ্ঠানে ডিসপ্লে (যেমন খুশি তেমন সাজো) অংশে রাজাকারের হাতে নারী নির্যাতনের দৃশ্য পাঞ্জাবি-টুপি পরে অভিনয়কে ‘ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত’ বলে অভিযোগ করেছেন তাঁরা।

গতকাল মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার আলেকজান্ডার আ স ম আব্দুর রব সরকারি কলেজ মাঠে এই ঘটনা ঘটে। এতে কলেজের শিক্ষার্থী, অধ্যক্ষ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও জামায়াত নেতাদের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। পরে জামায়াত নেতাদের বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা। এই ঘটনার ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিরূপ সমালোচনার জন্ম দেয়।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক ব্যক্তি জানান, গতকাল বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে সরকারি কলেজ মাঠে সকাল ১০টার দিকে কুচকাওয়াজ হয়। পরে ডিসপ্লে অংশে ‘রাজাকারের পাঠ মঞ্চ’ নামে একটি নাটিকা মঞ্চায়ন করে শিক্ষার্থীরা। এতে কলেজের ১২ থেকে ১৫ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। নাটিকায় ১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধা ও রাজাকারের মধ্যে ঘটে যাওয়া ঘটনা অভিনয়ের মাধ্যমে তুলে ধরার চেষ্টা করে তারা।

তবে নাটিকায় একটি অংশ রাজাকারের চরিত্রের ব্যক্তিরা পাঞ্জাবি-টুপি পরা থাকাকে ‘মুসলিমদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত’ দাবি করে অতিথি মঞ্চ থেকে প্রতিবাদ জানান উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির আব্দুর রহিম ও পৌর আমির আবুল খায়ের। তাঁরা মঞ্চ থেকে তেড়ে গিয়ে কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মাদ আশরাফ উদ্দিনের কাছে বিষয়টির ব্যাখ্যা জানতে চান। এ সময় দুপক্ষের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা শুরু হয়। এ সময় সেখানে ইউএনও নিলুফা ইয়াসমিন নিপা, রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিটন দেওয়ান ও স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে দুপক্ষের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে কলেজের শতাধিক শিক্ষার্থী শহিদ মিনার চত্বরে গিয়ে জামায়াত নেতাদের বাধার প্রতিবাদ জানায়। এ সময় তারা ‘রাজাকারের আস্তানা, রামগতিতে হবে না’, ‘রাজাকারের আস্তানা, বাংলাদেশে হবে না’, ‘রাজাকারের আস্তানা, এই কলেজে হবে না’ সহ নানা স্লোগান দেয় তারা। পরে ইউএনও ও ওসির হস্তক্ষেপে বিষয়টির সমাধান হলে অনুষ্ঠানটির বাকি অংশ শেষ হয়।

উপজেলা জামায়াত নেতা আবদুর রহিম বলেন, ‘পাঞ্জাবি-টুপি পরে অভিনয় করায় আমি একজন মুসলমান হিসেবে মেনে নিতে পারিনি। তাই আমরা প্রতিবাদ জানিয়ে এ ধরনের অভিনয়ের ব্যাখ্যা জানতে চেয়েছিলাম। পরে ইউএনও ও ওসি সাহেবের মধ্যস্থতায় বিষয়টির সমাধান হয়েছে।’

কলেজের অধ্যক্ষ আশরাফ উদ্দিন বলেন, ‘একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। পরে আমরা সমাধান করে ফেলেছি।’

জানতে চাইলে ওসি লিটন দেওয়ান বলেন, ‘স্বাধীনতাযুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা ও রাজাকারের মধ্যে ঘটে যাওয়া ঘটনাকে নিয়ে নাটক বা অভিনয় চলছিল। এ নাটকে পাঞ্জাবি-টুপি ব্যবহার করায় এক পক্ষ থেকে আপত্তি তোলা হলে একটু কথা-কাটাকাটি হয়েছে। পরে বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে।’

ঘটনা সম্পর্কে জানতে ইউএনও নিলুফা ইয়াসমিন নিপার মোবাইল ফোনে আজ বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) একাধিকবার কল করলেও তাঁর সাড়া পাওয়া যায়নি।

Ad 300x250
সর্বাধিক পঠিত

সম্পর্কিত