সারা আওয়াদ

যারা এখনো আমাদের নিয়ে ভাবেন, তাদের জন্য—এটাই হয়তো গাজা থেকে লেখা আমার শেষ চিঠি।
যেকোনো মুহূর্তে ইসরায়েলের আনুষ্ঠানিক ‘উচ্ছেদের নির্দেশ’ আসার অপেক্ষায় রয়েছি আমরা। আমার প্রিয় শহর গাজা ইসরায়েলি সেনাদের পুরোপুরি সামরিক দখলের কিনারায় দাঁড়িয়ে আছে। তাদের পরিকল্পনা হলো আমাদের ঘরবাড়ি থেকে জোর করে উচ্ছেদ করে সবাইকে দক্ষিণ গাজায় তাঁবুর নিচে নিয়ে যাওয়া। এই সিদ্ধান্ত না মানলে কী হবে? আমরা জানি না। হয়তো গাজা শহরে জীবনের শেষ দিনগুলো কাটাচ্ছি আমরা।
যুদ্ধের শুরু থেকেই শুনে আসছি, ইসরায়েল আমাদের শহর দখল করতে চায়। গাজাকে ইসরায়েলিরা নিজেদের বসতি বানিয়ে ফেলতে চায়। প্রথমে আমরা এ কথা বিশ্বাস করিনি। ভেবেছিলাম, এই ধরনের খবর মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধের অংশ। আগেও অনেকবার ‘উচ্ছেদের নির্দেশ’ পেয়েছি আমরা। তারপরেও মানুষ ঘরে ফিরতে পেরেছে। হোক না সেই ঘর ধ্বংসস্তূপ।
এবার গণহত্যা শুরুর পরপরই গত ১৩ অক্টোবর ইসরায়েলি সেনারা গাজা শহর ও উত্তর গাজার সবাইকে দক্ষিণে চলে যাওয়ার নির্দেশ জারি করে। সঙ্গে চলতে থাকে অবিরাম বোমাবর্ষণ। কখনো একদিনেই শত মানুষ মারা গেছেন। জীবন বাঁচাতে লাখ লাখ মানুষ চলে গেছেন দক্ষিণ গাজায়।
আমরা যাইনি। আমার বাবা নিজের বাড়ি ছেড়ে যেতে রাজি হননি। আমরা সবাই থেকে যাই। অসহ্য যন্ত্রণা আর ভয়ের ভেতর মাসের পর মাস বাড়িতেই থেকেছি। চোখের সামনে পুরো এলাকা ধ্বংস হয়ে যেতে দেখেছি।
এরপর ইসরায়েলি সেনারা উত্তর গাজাকে দক্ষিণ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়। কোনো মানবিক সহায়তা উত্তরে পৌঁছতে দেওয়া হতো না। ২০২৪ এর জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত আমার পরিবার যুদ্ধের সবচেয়ে দমবন্ধ দিনগুলো কাটিয়েছি। আমরা না খেয়ে ছিলাম। দিন কাটত ক্ষুধা তাড়ানোর জন্য কিছু একটা খুঁজতে। পশুখাদ্য খেয়েও বেঁচে থাকতে বাধ্য হয়েছি কখনো।
চলতি বছর জানুয়ারিতে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলে মানুষকে উত্তর গাজায় ফিরে আসতে দেওয়া হয়। এই ফিরে আসাটা ছিল আবেগের। আমরা ফিলিস্তিনিরা আমাদের মাটির সঙ্গে যে কত গভীরভাবে মিশে আছি সেদিন আরেকবার টের পেলাম।
তবে এবার পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। ইসরায়েলের স্থায়ী দখলদারিত্ব আর গাজাবাসীর স্থায়ীভাবে নিজেদের ভূমি হারানোর হুমকিকে এবার ভীষণ বাস্তব মনে হচ্ছে।

ফেসবুকে ইসরায়েলি সেনাদের মুখপাত্র আবিখাই আদ্রায়ি পোস্ট করেছেন, ‘যুদ্ধক্ষেত্র থেকে দক্ষিণে বেসামরিক মানুষদের স্থানান্তরের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে… বিপুল সংখ্যক তাঁবু ও আশ্রয় সামগ্রী গাজায় আনা হবে।’
এই খবর পড়ে গাজার মানুষের হৃদয় ভেঙে গেছে। অনেক প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কিন্তু এসবের কোনো উত্তর কি আছে? আমরা কোথায় পালাব? কবে এই উচ্ছেদ শুরু হচ্ছে? কেউ কি মধ্যস্থতা করতে আসবে? কেউ কি আসবে এই বিপর্যয় ঠেকাতে?
মানুষ ক্লান্ত। মানসিক, শারীরিক, আর্থিক—সব ভাবে। গাজার মানুষ আর সহ্য করতে পারছে না।
গাজা খালি করে দেওয়ার ইসরায়েলি ঘোষণার পর থেকেই বিভ্রান্ত ও আতঙ্কিত চোখে পরিবারের সবাই একে অপরের দিকে তাকিয়ে আছি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গাজা শহরে প্রবেশ করা তাঁবু ও ত্রিপলের ছবি দেখলাম। হৃদয়টা ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গেল। আমার ভবিষ্যৎকে একটা তাঁবুর ভেতর ঠেসে ঢুকিয়ে দেওয়ার চিন্তা আমাকে ভীত করে তুলল। আমার স্বপ্নগুলো বড়। কীভাবে সেগুলো একটি ছোট্ট তাঁবুর ভেতর ঢুকিয়ে ফেলব?
বাবাকে বললাম, আমি তাঁবুতে থাকতে চাই না। এ কথা বলার সময় অশ্রু গড়িয়ে পড়ছিল। বাবা অসহায় চোখে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘আমাদের আর কোনো উপায় নেই।’
বাড়ি ছেড়ে কোথাও যেতে চাই না আমরা। কিন্তু মনে হচ্ছে, আমাদের আর কোনো বিকল্প নেই। আবারও অবিরাম বোমা আর গোলাবর্ষণ নেমে এলে আমরা কী করে সহ্য করব! এবার সম্ভবত ইসরায়েলিরা আগের চেয়েও বেশি নিষ্ঠুর হবে। এবার শুধু শাস্তি নয়; এবার হবে পুরোপুরি মুছে ফেলা।
নিজের শহরে কাটানো দিন ফুরিয়ে আসছে। প্রতি মুহূর্তে মনে হচ্ছে, আজই গাজায় জীবনের শেষ দিন। একবেলা যে খাবার জুটছে, সেটাই পরিবারের সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে বসে খাচ্ছে মানুষ। পাড়া-মহল্লায় হাঁটছে, শৈশবের স্মৃতিবিজড়িত জায়গাগুলোর সঙ্গে ছবি তুলে রাখছে। এসব জায়গা শিগগিরই মুছে যাবে হয়তো।
আমি এই কথাগুলো লিখছি একটি কাজের জায়গা থেকে। সেখানে অনেক মানুষ। অনেক ছাত্রছাত্রী ও লেখক পড়াশোনা আর কাজ করে ভয় তাড়ানোর চেষ্টা করছেন। ভয়ের মাঝে সামান্য স্বাভাবিকতা খুঁজে পেতে রুটিন আঁকড়ে ধরছেন তাঁরা।
গাজার মানুষ জীবনকে ভালোবাসে। যদিও জীবন এখানে কোনোভাবে টিকে থাকা ছাড়া আর কিছু নয়। সবচেয়ে অন্ধকার মুহূর্তেও আমরা আশা, আনন্দ আর সুখের পথ খুঁজে বের করে ফেলি।
আমিও আশা রাখতে চাই। আমার ভয় শুধু বোমা, জোরপূর্বক উচ্ছেদ, তাঁবু আর নির্বাসন নিয়ে নয়। আমি আতঙ্কিত বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার চিন্তায়। আমাদের চুপ করিয়ে দেওয়ার আশঙ্কায়।
আমার মনে হচ্ছে, দক্ষিণে আমাদের জন্য বানানো হচ্ছে এক বন্দি শিবির। সেখানে আমরা বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাব। আমাদের কণ্ঠ স্তব্ধ করে দেওয়া হবে। মুছে ফেলা হবে আমাদের অস্তিত্ব।
আমি জানি না, আমার কথা আর কতদিন বাইরের পৃথিবীতে পৌঁছাবে। আমার কণ্ঠ স্তব্ধ হওয়ার আগেই একটি আবেদন জানিয়ে যাই।
আমাকে ভুলে যেয়ো না। আমি সারা আওয়াদ। এক ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী। আমার স্বপ্ন ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক শেষ করে সাংবাদিক হওয়া।
গাজার মানুষদের ভুলে যেয়ো না। আমাদের ভালোবাসা আর টিকে থাকার ২০ লাখ গল্প আছে।
আমার শহর গাজাকে ভুলে যেয়ো না। এ এক প্রাচীন মহানগরী। ইতিহাস আর সংস্কৃতিতে ভরপুর, ভালোবাসায় ভরা।
ভুলে যেয়ো না, যখন প্রায় পুরো পৃথিবী আমাদেরে একা ছেড়ে গেছে, তখন কেমন করে আমরা প্রতিরোধ করেছি। আঁকড়ে ধরেছি নিজেদের ঘরবাড়ি। নিজেদের মাটি।
লেখক: গাজায় বসবাসকারী একজন ইংরেজি সাহিত্যের শিক্ষার্থী, লেখিকা ও গল্পকার
(আল-জাজিরা ইংরেজি থেকে অনুবাদ করেছেন সালেহ ফুয়াদ)

যারা এখনো আমাদের নিয়ে ভাবেন, তাদের জন্য—এটাই হয়তো গাজা থেকে লেখা আমার শেষ চিঠি।
যেকোনো মুহূর্তে ইসরায়েলের আনুষ্ঠানিক ‘উচ্ছেদের নির্দেশ’ আসার অপেক্ষায় রয়েছি আমরা। আমার প্রিয় শহর গাজা ইসরায়েলি সেনাদের পুরোপুরি সামরিক দখলের কিনারায় দাঁড়িয়ে আছে। তাদের পরিকল্পনা হলো আমাদের ঘরবাড়ি থেকে জোর করে উচ্ছেদ করে সবাইকে দক্ষিণ গাজায় তাঁবুর নিচে নিয়ে যাওয়া। এই সিদ্ধান্ত না মানলে কী হবে? আমরা জানি না। হয়তো গাজা শহরে জীবনের শেষ দিনগুলো কাটাচ্ছি আমরা।
যুদ্ধের শুরু থেকেই শুনে আসছি, ইসরায়েল আমাদের শহর দখল করতে চায়। গাজাকে ইসরায়েলিরা নিজেদের বসতি বানিয়ে ফেলতে চায়। প্রথমে আমরা এ কথা বিশ্বাস করিনি। ভেবেছিলাম, এই ধরনের খবর মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধের অংশ। আগেও অনেকবার ‘উচ্ছেদের নির্দেশ’ পেয়েছি আমরা। তারপরেও মানুষ ঘরে ফিরতে পেরেছে। হোক না সেই ঘর ধ্বংসস্তূপ।
এবার গণহত্যা শুরুর পরপরই গত ১৩ অক্টোবর ইসরায়েলি সেনারা গাজা শহর ও উত্তর গাজার সবাইকে দক্ষিণে চলে যাওয়ার নির্দেশ জারি করে। সঙ্গে চলতে থাকে অবিরাম বোমাবর্ষণ। কখনো একদিনেই শত মানুষ মারা গেছেন। জীবন বাঁচাতে লাখ লাখ মানুষ চলে গেছেন দক্ষিণ গাজায়।
আমরা যাইনি। আমার বাবা নিজের বাড়ি ছেড়ে যেতে রাজি হননি। আমরা সবাই থেকে যাই। অসহ্য যন্ত্রণা আর ভয়ের ভেতর মাসের পর মাস বাড়িতেই থেকেছি। চোখের সামনে পুরো এলাকা ধ্বংস হয়ে যেতে দেখেছি।
এরপর ইসরায়েলি সেনারা উত্তর গাজাকে দক্ষিণ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়। কোনো মানবিক সহায়তা উত্তরে পৌঁছতে দেওয়া হতো না। ২০২৪ এর জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত আমার পরিবার যুদ্ধের সবচেয়ে দমবন্ধ দিনগুলো কাটিয়েছি। আমরা না খেয়ে ছিলাম। দিন কাটত ক্ষুধা তাড়ানোর জন্য কিছু একটা খুঁজতে। পশুখাদ্য খেয়েও বেঁচে থাকতে বাধ্য হয়েছি কখনো।
চলতি বছর জানুয়ারিতে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলে মানুষকে উত্তর গাজায় ফিরে আসতে দেওয়া হয়। এই ফিরে আসাটা ছিল আবেগের। আমরা ফিলিস্তিনিরা আমাদের মাটির সঙ্গে যে কত গভীরভাবে মিশে আছি সেদিন আরেকবার টের পেলাম।
তবে এবার পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। ইসরায়েলের স্থায়ী দখলদারিত্ব আর গাজাবাসীর স্থায়ীভাবে নিজেদের ভূমি হারানোর হুমকিকে এবার ভীষণ বাস্তব মনে হচ্ছে।

ফেসবুকে ইসরায়েলি সেনাদের মুখপাত্র আবিখাই আদ্রায়ি পোস্ট করেছেন, ‘যুদ্ধক্ষেত্র থেকে দক্ষিণে বেসামরিক মানুষদের স্থানান্তরের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে… বিপুল সংখ্যক তাঁবু ও আশ্রয় সামগ্রী গাজায় আনা হবে।’
এই খবর পড়ে গাজার মানুষের হৃদয় ভেঙে গেছে। অনেক প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কিন্তু এসবের কোনো উত্তর কি আছে? আমরা কোথায় পালাব? কবে এই উচ্ছেদ শুরু হচ্ছে? কেউ কি মধ্যস্থতা করতে আসবে? কেউ কি আসবে এই বিপর্যয় ঠেকাতে?
মানুষ ক্লান্ত। মানসিক, শারীরিক, আর্থিক—সব ভাবে। গাজার মানুষ আর সহ্য করতে পারছে না।
গাজা খালি করে দেওয়ার ইসরায়েলি ঘোষণার পর থেকেই বিভ্রান্ত ও আতঙ্কিত চোখে পরিবারের সবাই একে অপরের দিকে তাকিয়ে আছি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গাজা শহরে প্রবেশ করা তাঁবু ও ত্রিপলের ছবি দেখলাম। হৃদয়টা ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গেল। আমার ভবিষ্যৎকে একটা তাঁবুর ভেতর ঠেসে ঢুকিয়ে দেওয়ার চিন্তা আমাকে ভীত করে তুলল। আমার স্বপ্নগুলো বড়। কীভাবে সেগুলো একটি ছোট্ট তাঁবুর ভেতর ঢুকিয়ে ফেলব?
বাবাকে বললাম, আমি তাঁবুতে থাকতে চাই না। এ কথা বলার সময় অশ্রু গড়িয়ে পড়ছিল। বাবা অসহায় চোখে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘আমাদের আর কোনো উপায় নেই।’
বাড়ি ছেড়ে কোথাও যেতে চাই না আমরা। কিন্তু মনে হচ্ছে, আমাদের আর কোনো বিকল্প নেই। আবারও অবিরাম বোমা আর গোলাবর্ষণ নেমে এলে আমরা কী করে সহ্য করব! এবার সম্ভবত ইসরায়েলিরা আগের চেয়েও বেশি নিষ্ঠুর হবে। এবার শুধু শাস্তি নয়; এবার হবে পুরোপুরি মুছে ফেলা।
নিজের শহরে কাটানো দিন ফুরিয়ে আসছে। প্রতি মুহূর্তে মনে হচ্ছে, আজই গাজায় জীবনের শেষ দিন। একবেলা যে খাবার জুটছে, সেটাই পরিবারের সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে বসে খাচ্ছে মানুষ। পাড়া-মহল্লায় হাঁটছে, শৈশবের স্মৃতিবিজড়িত জায়গাগুলোর সঙ্গে ছবি তুলে রাখছে। এসব জায়গা শিগগিরই মুছে যাবে হয়তো।
আমি এই কথাগুলো লিখছি একটি কাজের জায়গা থেকে। সেখানে অনেক মানুষ। অনেক ছাত্রছাত্রী ও লেখক পড়াশোনা আর কাজ করে ভয় তাড়ানোর চেষ্টা করছেন। ভয়ের মাঝে সামান্য স্বাভাবিকতা খুঁজে পেতে রুটিন আঁকড়ে ধরছেন তাঁরা।
গাজার মানুষ জীবনকে ভালোবাসে। যদিও জীবন এখানে কোনোভাবে টিকে থাকা ছাড়া আর কিছু নয়। সবচেয়ে অন্ধকার মুহূর্তেও আমরা আশা, আনন্দ আর সুখের পথ খুঁজে বের করে ফেলি।
আমিও আশা রাখতে চাই। আমার ভয় শুধু বোমা, জোরপূর্বক উচ্ছেদ, তাঁবু আর নির্বাসন নিয়ে নয়। আমি আতঙ্কিত বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার চিন্তায়। আমাদের চুপ করিয়ে দেওয়ার আশঙ্কায়।
আমার মনে হচ্ছে, দক্ষিণে আমাদের জন্য বানানো হচ্ছে এক বন্দি শিবির। সেখানে আমরা বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাব। আমাদের কণ্ঠ স্তব্ধ করে দেওয়া হবে। মুছে ফেলা হবে আমাদের অস্তিত্ব।
আমি জানি না, আমার কথা আর কতদিন বাইরের পৃথিবীতে পৌঁছাবে। আমার কণ্ঠ স্তব্ধ হওয়ার আগেই একটি আবেদন জানিয়ে যাই।
আমাকে ভুলে যেয়ো না। আমি সারা আওয়াদ। এক ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী। আমার স্বপ্ন ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক শেষ করে সাংবাদিক হওয়া।
গাজার মানুষদের ভুলে যেয়ো না। আমাদের ভালোবাসা আর টিকে থাকার ২০ লাখ গল্প আছে।
আমার শহর গাজাকে ভুলে যেয়ো না। এ এক প্রাচীন মহানগরী। ইতিহাস আর সংস্কৃতিতে ভরপুর, ভালোবাসায় ভরা।
ভুলে যেয়ো না, যখন প্রায় পুরো পৃথিবী আমাদেরে একা ছেড়ে গেছে, তখন কেমন করে আমরা প্রতিরোধ করেছি। আঁকড়ে ধরেছি নিজেদের ঘরবাড়ি। নিজেদের মাটি।
লেখক: গাজায় বসবাসকারী একজন ইংরেজি সাহিত্যের শিক্ষার্থী, লেখিকা ও গল্পকার
(আল-জাজিরা ইংরেজি থেকে অনুবাদ করেছেন সালেহ ফুয়াদ)

২০০৭ সালের ‘ওয়ান-ইলেভেন’ থেকে ২০২৪-এর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান এবং তৎপরবর্তী অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়কাল পর্যন্ত বাংলাদেশের দীর্ঘ রাজনৈতিক যাত্রার একটি সমালোচনামূলক বিশ্লেষণ এই লেখা। এতে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের অভাব, আমলাতান্ত্রিক নির্ভরতার সংকট এবং কর্তৃত্ববাদী শাসনের ফলে সৃষ্ট সামাজিক ক্ষত ত
৭ ঘণ্টা আগে
ঢাকার ভারতীয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে গত ৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ভিন্ন আবহে পালিত হয় ৫৪তম মৈত্রী দিবস। এতে ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা বলেন, ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে সমতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে স্থিতিশীল, ইতিবাচক ও গঠনমূলক সম্পর্ক চায়।
১ দিন আগেবাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) আয়োজিত বার্ষিক ডেভেলপমেন্ট কনফারেন্সের এবারের আলোচনার শিরোনাম ‘গণতন্ত্র ও উন্নয়ন’, যা অত্যন্ত সময়োপযোগী। আমরা সবাই এখন এই বিষয়টি নিয়েই ভাবছি।
১ দিন আগে
পেরুর বিচারক লুজ দেল কারমেন ইবানিয়েজ কারাঞ্জর ওপর গত জুনে নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। কারণ, তিনি ২০০৩ সালের পর আফগানিস্তানে মার্কিন সেনাদের অপরাধ তদন্তের অনুমতি দিয়েছিলেন। তাকে নিয়ে গত এক বছরে ছয়জন আইসিসি বিচারকের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র।
১ দিন আগে