ভ্লাদিমির পুতিনের বাসভবনে ড্রোন হামলার কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ রাশিয়া দিতে পারে নি বলে মন্তব্য করেছেন ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রি সিবিকা। তিনি এই ঘটনাকে শান্তি আলোচনা বাধাগ্রস্ত করার জন্য ক্রেমলিনের ‘সাজানো মিথ্যা’ বলে অভিহিত করেছেন।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাশিয়ার দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেন, ‘রাশিয়া এখনও কোনো বাস্তবসম্মত প্রমাণ দিতে পারেনি। মিথ্যা অভিযোগ তোলা রাশিয়ার পুরোনো কৌশল। তারা নিজেরা যা করার পরিকল্পনা করে, প্রায়ই অন্যদের বিরুদ্ধে সেই অভিযোগ আনে।’
‘কথিত’ এই হামলা নিয়ে ভারত, পাকিস্তান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের উদ্বেগ প্রকাশের সমালোচনা করে সিবিকা বলেন, ‘২০২৫ সালের ৭ সেপ্টেম্বর যখন রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেনের সরকারি ভবনে আঘাত হেনেছিল, তখন এই তিন দেশ কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি। অথচ যে হামলা ঘটেইনি, তা নিয়ে তারা উদ্বেগ জানাচ্ছে; এটি হতাশাজনক ও বিস্ময়কর।’
এর আগে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ দাবি করেন, তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা বাহিনী রাতভর ৯১টি ইউক্রেনীয় ড্রোন ভূপাতিত করেছে। এর মধ্যে নভগোরোড এলাকায় পুতিনের বাসভবনও লক্ষ্যবস্তু ছিল। তিনি একে ‘রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদ’ আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘এ ধরনের বেপরোয়া কর্মকাণ্ডের জবাব দেওয়া হবে।’ লাভরভ আরও জানান, ইউক্রেনের ভেতরে পাল্টা হামলার লক্ষ্যবস্তু ইতিমধ্যে নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এই হামলায় কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের ছবি মস্কো দেখাতে পারেনি।
লাভরভের এই দাবি এমন সময়ে এলো যখন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ফ্লোরিডায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধের পরিকল্পনা নিয়ে দীর্ঘ বৈঠক করেছেন। এদিকে ক্রেমলিনের উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ দাবি করেছেন, পুতিন নিজেই ট্রাম্পকে এই হামলার বিষয়ে অবহিত করেছেন।
এই খবর শুনে ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বলে জানা গেছে। ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট পুতিনের কাছ থেকে আমি বিষয়টি জেনেছি। এই সংবেদনশিল সময়ে এটা মোটেও ভালো খবর নয়।’
তবে হামলার কোনো প্রমাণ আছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা খুঁজে বের করব। হতে পারে হামলার ঘটনা ঘটেইনি, তবে পুতিন আমাকে আজ সকালে এটি জানিয়েছেন।‘
ট্রাম্পের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট পুতিন ও ট্রাম্পের এই ফোনালাপকে ‘ইতিবাচক’ বলে বর্ণনা করেছেন। অন্যদিকে রুশ কর্মকর্তারা এই কথিত উসকানির পেছনে ব্রিটেনেরও হাত রয়েছে বলে দাবি করেছেন। ইউক্রেন মনে করছে, রাশিয়ার এই সাজানো গল্প মূলত বড় ধরনের কোনো হামলার অজুহাত তৈরির চেষ্টা।