leadT1ad

ফোন চুরির অভিযোগে কিশোরকে গাছে বেঁধে মারধর

স্ট্রিম সংবাদদাতা
স্ট্রিম সংবাদদাতা
সাভার, ঢাকা

প্রকাশ : ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০: ৪৯
ধামরাইয়ে কিশোরকে বেঁধে মারধর। সংগৃহীত ছবি

ঢাকার ধামরাইয়ে মোবাইল ফোন চুরির অভিযোগে এক কিশোরকে (১৭) বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করা হয়েছে। গতকাল শনিবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরের দিকে উপজেলার গাংগুটিয়া ইউনিয়নের চারিপাড়া আদর্শ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

রাতের দিকে মারধরের একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি জানাজানি হয়। ভিডিওতে ওই কিশোরকে গাছের সঙ্গে বেঁধে একদল লোককে মারধর করতে দেখা যায়। এ ঘটনায় বিচার চাইছেন কিশোর মা।

কিশোরকে মারধরকারী ব্যক্তিরা হলেন আদর্শ এলাকার বাসিন্দা কুদ্দুস, তাঁর বাবা রউফ, রব, হারুন, আসলাম, শাহ আলম, সাব্বিরসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১৫ জন।

ঘটনা প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানায় একাধিক বাসিন্দা জানান, গত শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) ভোরের দিকে চারিপাড়া এলাকার কুদ্দুসের বাড়ি থেকে একটি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন চুরি হয়। খোঁজাখুঁজি করেও ফোনটি না পেয়ে সন্দেহবশত শনিবার দুপুরে ওই কিশোরের বাড়িতে গিয়ে তাকে মারধর করেন কুদ্দুসসহ অন্যরা। পরে তাকে কুদ্দুসের বাড়িতে এনে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করেন তাঁরা। এদিন বিকেলের দিকে ফোন নেওয়ার কথা স্বীকার করে পার্শ্ববর্তী এলাকার একজনের কাছে বিক্রি কথা জানায় সে। পরে ওই ক্রেতার কাছ থেকে ফোনটি উদ্ধার করেন স্থানীয়রা।

কিশোরের পরিবার জানায়, শুক্রবার দুপুর আনুমানিক সাড়ে ১২টার দিকে কুদ্দুস, তাঁর বাবা রউফ ও আরও একজন কিশোরের বাড়ি গিয়ে তার কাছে মোবাইল ফোন নেওয়ার বিষয়টি জিজ্ঞেস করেন। এর এক পর্যায়ে কাঠের টুকরা দিয়ে আঘাত করলে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে সে। ওই অবস্থায় কিশোরকে টেনে কুদ্দুসের বাড়িতে নেওয়া হয়। সেখানে তাকে গাছের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী মারধর করে উপস্থিত লোকজন। বিকেলের দিকে মোবাইল ফোনের সন্ধান দেওয়ার পর স্থানীয় গণ্যমান্যদের উপস্থিতিতে তাকে মায়ের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়।

শনিবার রাত ১০টার দিকে বাড়িতে গিয়ে কথা হয় কিশোরে সঙ্গে। এ সময় তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত ও জখমের চিহ্ন দেখা যায়। কিশোর বলে, ‘আমি মোবাইল নিয়েছিলাম। তাই আমাকে নিয়ে মারছে। তারপর মা গিয়ে ছাড়িয়ে আনে।’

কিশোরের মা বলেন, ‘কুদ্দুসের বাড়ির লোকজন আমাকে গতকাল (শুক্রবার) বলছিল মোবাইল ফোন নেওয়ার কথা। ওরে জিজ্ঞেস করছি, কিন্তু কিছু বলেনি। আজকে (শনিবার) আমি কাজে গেছি। আমার কাছে তো কোনো ফোন নেই। কাজ থেকে খবর পাই ছেলেকে আটকে মারতেছে। তখন বাড়ি এসে এলাকার লোকজন ধরে তাকে ছাড়িয়ে আনি।’ ওই মা বলেন, ‘আমার ছেলে অন্যায় করছে, তাকে পুলিশে দিত। কি অমানবিকভাবে মারছে! আমি এর বিচার চাই।’

মারধরের কারণ সম্পর্কে কুদ্দুস বলেন, ‘ওর (কিশোরের) বাড়ি থেকে ওরে ধরে এনে মারধর করছি। তারপর স্বীকার করছে। পরে মোবাইলটা পাইছি। না মারলে তো স্বীকার করত না।’

ধামরাই থানার পরিদর্শক (ওসি-অপারেশন) দেবাশীষ সাহা বলেন, ‘কিশোরকে মারধরের ভিডিওটি দেখেছি। তবে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পাওয়া গেলে এই বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Ad 300x250

সম্পর্কিত