leadT1ad

এ্যানির কোলজুড়ে ৫ সন্তান, ঘুচল দশকের হাহাকার

স্ট্রিম সংবাদদাতা
স্ট্রিম সংবাদদাতা
চট্টগ্রাম

প্রকাশ : ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০: ৫৬
চট্টগ্রামে পাঁচ নবজাতকের সঙ্গে চিকিৎসক ফরিদা ইয়াসমিন। সংগৃহীত ছবি

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার মেয়ে এ্যানি আক্তারের বিয়ে হয় ওয়াহিদুল ইসলাম সুমনের সঙ্গে। এ দম্পতি দীর্ঘ ১০ বছরেও সন্তানের দেখা পাননি। অবশেষে সৃষ্টিকর্তা এ্যানির কোলজুড়ে সন্তান দিয়েছেন। একটি, দুটি নয়; একসঙ্গে তিন কন্যা ও দুই ছেলেসন্তান প্রসব করেছেন তিনি।

গতকাল সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরীর বেসরকারি পিপলস হাসপাতালে সিজারিয়ানের মাধ্যমে পাঁচ সন্তান হয় এ্যানির। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এ্যানি আক্তার সুস্থ আছেন। তাঁর সন্তানদের পার্কভিউ হাসপাতালের নবজাতক নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে (এনআইসিইউ) রাখা হয়েছে।

রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক ও ইনফার্টিলিটি বিশেষজ্ঞ ডা. ফরিদা ইয়াসমিন সুমি জানান, চিকিৎসার জন্য এলে তাঁর পরামর্শে সুমন ও এ্যানি দম্পতি ইন্ট্রা-ইউটেরাইন ইনসেমিনেশন (আইইউআই) পদ্ধতি গ্রহণ করেন। অবশেষে তারা সফল হলেন।

নবজাতকদের অবস্থা সম্পর্কে ডা. ফরিদা বলেন, শিশুগুলো অপরিপক্ব। ৩২ সপ্তাহেই তারা পৃথিবীতে এসেছে। ওজন এক কেজি ৪০০ থেকে ৬০০ গ্রামের মধ্যে। এজন্য তাদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। ৭২ ঘণ্টা গেলে শিশুদের ঝুঁকিমুক্ত বলা যাবে।

ওয়াহিদুল ইসলাম সুমন স্ট্রিমকে বলেন, ‘দীর্ঘ ১০ বছর পর বাবা হয়েছি। এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা অসম্ভব। আল্লাহর কাছে হাজার শুকরিয়া। এখন একটাই চাওয়া, তারা যেন সুস্থ থাকে। সবাই মা ও সন্তানদের জন্য দোয়া করবেন।’

সুমন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। পারিবারিকভাবে অসচ্ছল। এজন্য হাসপাতালের বিল নিয়ে তিনি দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। স্ট্রিমকে সুমন বলেন, ‘আমি সামান্য টাকা রোজগার করি। সন্তানরা পার্কভিউ হাসপাতালের এনআইসিইউতে। এটা অনেক ব্যয়বহুল। বিল পরিশোধ কীভাবে করব, বুঝতে পারছি না।’

২০১৫ সালে চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার বাসিন্দা সুমন ও এ্যানির মধ্যে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। সন্তানের জন্য চেষ্টা করে একাধিকার ব্যর্থ হন তারা। পরে বিভিন্ন চিকিৎসক দেখান। তাতেও সফলতা আসেনি। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালে ডা. ফরিদা ইয়াসমিন সুমির শরণাপন্ন হন এই দম্পতি। তাঁর পরামর্শে আইইউআই পদ্ধতি নেন এ্যানি।

এই পদ্ধতি সম্পর্কে ডা. ফরিদা জানান, এই পদ্ধতিতে পুরুষের শুক্রাণু সংগ্রহ করে দুই ঘণ্টার বিশেষ প্রক্রিয়া শেষে নারীর গর্ভাশয়ে স্থাপন করা হয়। পুরো প্রক্রিয়া হয় ল্যাবে। পদ্ধতিতে এক মাসের মধ্যেই ইতিবাচক ফল আসে এ্যানির।

তিনি বলেন, ‘সুমন-এ্যানি ১০ বছর ধরে চেষ্টা করছিলেন। অনেক পয়সা খরচ করেও ফল পাননি। বেশ হতাশ হন। তবে আইইউআই পদ্ধতি গ্রহণের পর এ্যানি অন্তঃসত্ত্বা হন। আমরা আল্ট্রাসনোগ্রাফিতে চার সন্তান পাই।’

ডা. ফরিদা আরও বলেন, ‘সি-সেকশনেও আমরা চার সন্তান পাই। মজার ব্যাপার, চারটি সন্তান প্রসবের পর আরও একটা পাই। এটা ছিল খুবই বিস্ময়কর ও আনন্দদায়ক মুহূর্ত।’

Ad 300x250
সর্বাধিক পঠিত

সম্পর্কিত