leadT1ad

হাতিয়ায় নিহতদের মধ্যে নেই বাহিনী প্রধান সামছু, মামলা হয়নি এখনো

স্ট্রিম সংবাদদাতা
স্ট্রিম সংবাদদাতা
নোয়াখালী

দুর্গম চরাঞ্চল হওয়ায় ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছাতে দেরি হয়। ছবি: সংগৃহীত

নোয়াখালীর হাতিয়ায় চর দখল নিয়ে সংঘর্ষের পর থেকেই নিখোঁজ রয়েছেন ‘কোপা সামছু’ বাহিনীর প্রধান মো. সামছু। নিহত পাঁচজনের মধ্যেও পাওয়া যায়নি তাঁর মরদেহ। আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সকালে পরিবারের সদস্যরা থানায় গিয়ে চারজনের মরদেহ দেখে তাঁদের মধ্যে সামছু নেই বলে জানান। তবে এ সময় সন্তানের মরদেহ শনাক্ত করেন সামছুর স্ত্রী মাহফুজা বেগম। এদিকে হত্যাকাণ্ডে এখন পর্যন্ত থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি বলে জানিয়েছে পুলিশ।

সামছু নিখোঁজ আছেন জানিয়ে তাঁর বড় ছেলে ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘চরের জমির লোভ দেখিয়ে কিছু লোক বাবাকে নিয়ে আসে। থানায় এসে ছোট ভাইয়ের মরদেহ পেয়েছি, কিন্তু বাবার পাইনি।’ এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানান ফখরুল।

এর আগে মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার সুখচর ইউনিয়নের ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সীমান্তবর্তী জাগলার চরে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের সময় গুলিতে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার বিকালে পুলিশ নদী পার হয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে চারজনের মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। আজ সকালে তাঁদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন, উপজেলার জাহাজমারা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মো. সামছুর ছেলে মোবারক হোসেন সিহাব, সুখচর ইউনিয়নের চর আমান উল্যাহ গ্রামের মহি উদ্দিনের ছেলে আলাউদ্দিন, হাতিয়া পৌরসভার পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের হকসাব ও উপজেলার চানন্দী ইউনিয়নের কামাল উদ্দিন। আরেকজন পার্শ্ববর্তী সুবর্নচর উপজেলার চরমজিদ ইউনিয়নের জয়নাল আবেদিনের ছেলে আবুল কাশেম। এই ঘটনায় সোরাব উদ্দিন নামে আহত একজনকে পুলিশ উদ্ধার হাতিয়া হাসপাতালে ভর্তি করেছে। তাঁর বাড়ি উপজেলার নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নে। তবে নিখোঁজ রয়েছেন ‘কোপা সামছু’ বাহিনীর প্রধান মো. সামছু।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, নতুন জেগে উঠা জাগলার চরের জমি এখন পর্যন্ত কাউকে বন্দোবস্ত দেয়নি সরকার। এই সুযোগে গত বছরের ৫ আগস্টের পর জাহাজমারা ইউনিয়নের ‘কোপা সামছু’ বাহিনী চরের বেশ কিছু জমি বিক্রি করে। কিছু দিন পর পার্শ্ববর্তী সুখচর ইউনিয়নের আলাউদ্দিন বাহিনী চরের জমির দখল নিতে মরিয়া হয়ে উঠে। এ নিয়ে গত দুমাস ধরে উভয় গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ চলছিল। এতে সামছু চরের দক্ষিণ পাশে চরকিং ইউনিয়নের সীমানায় এবং উত্তর পাশে সুখচর ইউনিয়ন সীমানায় অবস্থান নেয় আলাউদ্দিন গ্রুপ।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে চরের জমি দখলকে কেন্দ্র করে কোপা সামছু ও আলাউদ্দিন গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটে। একপর্যায়ে উভয় পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে বন্দুক যুদ্ধে লিপ্ত হয়। এতে প্রতিপক্ষের গুলিতে আহত অবস্থায় আলাউদ্দিনকে উদ্ধার করে নোয়াখালী সদর হাসপাতালে পাঠানো হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। একই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান আরও চারজন।

হাতিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল আলম বলেন, ‘গোলাগুলির ঘটনায় সামছু নামে একজন নিখোঁজ রয়েছে। চরে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও আর মরদেহ পাওয়া যায়নি। থানায় আনা চারজনের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালী জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় এখনো কেউ থানায় লিখিত কোনো অভিযোগ দেয়নি।’

Ad 300x250

সম্পর্কিত