দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা এখন ব্যবসায় পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ও সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার। তিনি বলেছেন, একদিকে নির্বাচনকে ব্যবসায়ীকরণ করা হয়েছে, অন্যদিকে ব্যবসাকে রাজনীতিকরণ করা হয়েছে। রাজনীতি ও নির্বাচনী অঙ্গনের এই অস্বচ্ছতা ও দুর্বৃত্তায়ন দূর না করলে সুষ্ঠু গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।
আজ শনিবার (২৯ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে দৈনিক বণিক বার্তার উদ্যোগে ব্যবসা, বিনিয়োগ ও সমষ্টিক অর্থনীতি নিয়ে আয়োজিত এক সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, নির্বাচনই গণতন্ত্র নয়, বরং এটি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার একটি পথ মাত্র। দেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রধান বাধা হলো নির্বাচনী অঙ্গনের অস্বচ্ছতা। রাজনৈতিক অঙ্গনও অস্বচ্ছ এবং এখানে ব্যাপক দুর্বৃত্তায়ন রয়েছে। সংস্কারের অংশ হিসেবে প্রার্থীদের হলফনামা প্রকাশ বাধ্যতামূলক করা হলেও সেখানে দেওয়া তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই করা প্রয়োজন। টাকার খেলা ও মনোনয়ন বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে এবং নির্বাচন কমিশনকে সম্পূর্ণ দলনিরপেক্ষ থাকতে হবে তবেই স্বচ্ছ নির্বাচন সম্ভব।
বিগত সরকারের সমালোচনা করে সুজন সম্পাদক বলেন, শেখ হাসিনা নির্বাচনের মাধ্যমেই ক্ষমতায় গিয়েছিলেন এবং কোনো যুগান্তকারী আবিষ্কার ছাড়াই কেবল পুরোনো নিয়ম ব্যবহার করেই স্বৈরাচার হয়ে ওঠেন। একই ব্যক্তি সরকারপ্রধান, দলীয় প্রধান এবং সংসদ নেতা হওয়ার কারণে তিনি সর্বেসর্বা হয়ে উঠেছিলেন এবং তার কোনো জবাবদিহিতার প্রয়োজন পড়েনি। সরকার ও দলীয় প্রধান আলাদা হলে দল সরকারের কাছে ইশতেহার বাস্তবায়নের কৈফিয়ত চাইতে পারত। কিন্তু এক ব্যক্তি সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী হওয়ায় তিনি যাকে খুশি মনোনয়ন বা মন্ত্রী বানিয়েছেন।
রাষ্ট্র সংস্কারের প্রস্তাবনা তুলে ধরে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আমরা ক্ষমতার এই এককেন্দ্রীকরণ বন্ধে সীমারেখা টেনে দেওয়ার প্রস্তাব করেছি। একজন ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রীর পদে ১০ বছরের বেশি থাকতে পারবেন না এবং একই ব্যক্তি সরকারপ্রধান ও দলীয় প্রধান হতে পারবেন না। এছাড়া আসন্ন গণভোট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গণভোটে চারটি প্রশ্ন থাকলেও এটি মূলত একটি প্যাকেজ। এর মূল কথা হলো জনগণ সংস্কারের পক্ষে নাকি বিপক্ষে। সংস্কার চাইলে ‘হ্যাঁ’ এবং না চাইলে ‘না’ ভোট দিতে হবে।