leadT1ad

‘অচিন পাখি’তে এলেন তারেক রহমান, কী বৈশিষ্ট্য এই বিমানের

স্ট্রিম প্রতিবেদক
স্ট্রিম প্রতিবেদক
ঢাকা

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের অচিন পাখি। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে দেশে ফিরেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বোয়িং ৭৮৭-৯ ড্রিমলাইনার ‘অচিন পাখি’। আজ বৃহস্পতিবার সকালে লন্ডন থেকে আসা বিজি-২০২ ফ্লাইটটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। দীর্ঘ নির্বাসন শেষে দেশে ফেরার বাহন হিসেবে তিনি বেছে নিয়েছেন জাতীয় পতাকাবাহী সংস্থার অত্যাধুনিক এই উড়োজাহাজটিকে।

বিমানের বিশেষত্ব ও যাত্রীসুবিধা

অত্যাধুনিক প্রযুক্তিসুবিধা সংবলিত এই উড়োজাহাজটিতে মোট আসন রয়েছে ২৯৮টি। এর মধ্যে বিজনেস ক্লাস ৩০টি, প্রিমিয়াম ইকোনমি ক্লাস ২১টি এবং ইকোনমি ক্লাসের আসন রয়েছে ২৪৭টি।

ড্রিমলাইনার ৭৮৭-৯ মডেলের এই উড়োজাহাজটির দৈর্ঘ্য ২০৬ ফুট। এটি টানা প্রায় ১৪ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে সক্ষম। এভিয়েশন বিশেষজ্ঞদের মতে, এই মডেলের বিমানগুলো অত্যন্ত জ্বালানি সাশ্রয়ী এবং অন্য উড়োজাহাজের তুলনায় প্রায় ২০ শতাংশ কম জ্বালানি খরচ করে।

যাত্রীদের স্বাচ্ছন্দ্যের কথা মাথায় রেখে ‘অচিন পাখি’তে যুক্ত করা হয়েছে আধুনিক সব সুবিধা। এতে রয়েছে ওয়াইফাই এবং মোবাইল ফোনে রোমিং সুবিধা। এছাড়া প্রতিটি আসনে রয়েছে অত্যাধুনিক বিনোদন ব্যবস্থা। আকাশের অনেক উঁচুতেও যাত্রীরা যেন ভূমির মতো স্বাভাবিক চাপ অনুভব করেন, সেজন্য এই বিমানে বিশেষ প্রেশার কন্ট্রোল প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। এর জানালাগুলো সাধারণ বিমানের চেয়ে বেশ বড়।

বিমানে ওঠার পর ফেসবুকে ছবি পোস্ট করেন তারেক রহমান। ফেসবুক থেকে নেওয়া ছবি
বিমানে ওঠার পর ফেসবুকে ছবি পোস্ট করেন তারেক রহমান। ফেসবুক থেকে নেওয়া ছবি

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রাক্তন বৈমানিক কর্নেল (অব.) সোহেল রানা স্ট্রিমকে বলেন, ‘বোয়িং ৭৮৭-৯ ড্রিমলাইনার বর্তমান বিশ্বের অন্যতম আধুনিক ও নিরাপদ একটি ওয়াইড-বডি বিমান। কার্বন ফাইবারের মতো হালকা অথচ শক্তিশালী কম্পোজিট ম্যাটেরিয়াল দিয়ে তৈরি হওয়ায় এটি যেমন জ্বালানি সাশ্রয়ী, তেমনি দীর্ঘ পথের যাত্রায় অত্যন্ত কার্যকর। এটি টানা প্রায় ১৪ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে সক্ষম।’

তিনি আরও বলেন, ‘যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যের দিক থেকেও এটি অনন্য। এর উন্নত কেবিন প্রেশার ও আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা এবং বিশেষ লাইটিং দীর্ঘ ভ্রমণের ক্লান্তি বা জেট ল্যাগ কমাতে সাহায্য করে। একুশ শতকের এভিয়েশন শিল্পে এই বিমানটি দক্ষতা ও আরামদায়ক ভ্রমণের এক চমৎকার সমন্বয়।’

‘অচিন পাখি’র ইতিহাস

২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার ‘রাজহংস’ উদ্বোধনের সময় তৎকালীন সরকার আরও দুটি বোয়িং কেনার ঘোষণা দেয়। এরপর মাসখানেক ধরে বোয়িং কোম্পানির সঙ্গে দর-কষাকষি চলে। শেষ পর্যন্ত প্রতিটি ৭৮৭-৯ ড্রিমলাইনার বর্তমান বাজারমূল্যের প্রায় অর্ধেক দামে, অর্থাৎ ১৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের কমে কেনা হয়। কেনার পর নতুন দুটি ড্রিমলাইনারের নামকরণ করা হয় ‘সোনার তরী’ ও ‘অচিন পাখি’।

বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ২৩ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটলে বোয়িং কারখানার এভারেট ডেলিভারি সেন্টার থেকে স্থানীয় সময় বেলা আড়াইটার দিকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেয় ‘অচিন পাখি’। পরে ২৪ ডিসেম্বর রাতে এটি ঢাকায় পৌঁছায় এবং ২৮ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে এর উদ্বোধন করা হয়।

সেই ‘অচিন পাখি’র ডানায় ভর করেই আজ সপরিবারে দেশের মাটিতে পা রাখলেন তারেক রহমান।

Ad 300x250

সম্পর্কিত