leadT1ad

ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিকে কাজ করছে সরকার: অর্থ উপদেষ্টা

স্ট্রিম প্রতিবেদক
স্ট্রিম প্রতিবেদক
ঢাকা

প্রকাশ : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০: ৪৭
অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। সংগৃহীত ছবি

ভারতের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক থাকলেও রাজনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে সরকার কাজ করছে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ

তিনি বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে রাজনৈতিক সম্পর্ক খুব যে খারাপ হয়ে গেছে, তা নয়। তবে আমরা চেষ্টা করছি যেন কোনোভাবেই অস্বাভাবিক না হয়। বাংলাদেশ কোনো প্রতিবেশীর সঙ্গেই তিক্ত সম্পর্ক চায় না।’

আজ মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেলে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বর্তমান রাজনৈতিক সম্পর্কের প্রেক্ষাপটে অর্থনৈতিক সম্পর্ক কতটা প্রভাবিত হবে—এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি সবসময় বলি, বাণিজ্য আর রাজনীতি আলাদা করে দেখতে হবে। ধরুন, ভারত থেকে যদি চাল না আনি, ভিয়েতনাম থেকে আনতে গেলে প্রতি কেজিতে আরও ১০ টাকা বেশি লাগবে। আমি যদি ভারত থেকে প্রতিযোগিতামূলক দামে চাল পাই, তাহলে অন্য জায়গা থেকে কেন আনব? ভালো হবে। আমি চাল আনতে পারলে খুশিই হব।’

ভারতের সঙ্গে রাজনৈতিক সম্পর্ক কেমন—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক সম্পর্ক এখনো মোটামুটি। পররাষ্ট্রনীতিতে অনেক সময় রেটরিক্স বেশি হয়। রাজনীতিবিদরা অনেক সময় বলার জন্যই কথা বলেন। তবে আমি বিশ্বাস করি, সম্পর্ক একেবারে খারাপের দিকে যাবে না।’

সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা যে চেষ্টা করছি, তার প্রমাণ হলো—এর আগেও আমি ভারত থেকে চাল এনেছি। কিছুদিন আগে পেঁয়াজের ব্যাপারে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে একটু দেরি হয়ে গেছে। হয়তো আরও দাম কমত। কারণ ভারতীয় পেঁয়াজ তারা ৫–১০ টাকাতেও বিক্রি করতে পারেনি।’

দেড় মাসের মধ্যে রাজনৈতিক সম্পর্ক উন্নত করতে সরকার কী করবে—এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘রাজনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে কাজ হচ্ছে। একটু পরে আপনারা জানতে পারবেন। ভারতের বিষয়ে আমাদের প্রধান উপদেষ্টা অবহিত আছেন। এত বিস্তারিত বলা যাবে না। আমি নিজে ভারতের হাইকমিশনারের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বলেছেন, তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন। বাইরে আপনারা যা শুনছেন, কিছু বক্তব্য আসে—সেগুলো আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না। আপনারাও তো গণমাধ্যমের স্বাধীনতা চান।’

দেশের একটি বড় গোষ্ঠী ভারতবিরোধী বক্তব্য দিচ্ছে—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যারা এসব বলছে, তা আমাদের জন্য বিষয়টিকে জটিল করে তুলছে। তবে এগুলো আমাদের জাতীয় অনুভূতি নয়। আমরা কেউই তা চাই না। পার্শ্ববর্তী দেশের সঙ্গে কেন, কোনো দেশের সঙ্গেই আমরা তিক্ততা চাই না। ভারতও বিষয়টি মূল্যায়ন করে—সবাই যে এসব বিশ্বাস করে, তা নয়।’

ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো রাখতে চান কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই ভালো রাখতে চাই। খারাপ তো হয়নি কিছুই।’

এ ধরনের বক্তব্য বন্ধে সরকার কোনো উদ্যোগ নিয়েছে কি না—জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সবকিছু কি বন্ধ করা যায়? কেউ দাঁড়িয়ে কিছু বলে দিল, সেটাকে কীভাবে থামাবেন?’

ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কারা কথা বলছেন—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার বন্ধুবান্ধব আছেন, যাদের ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। অন্য দেশেও এমন অনেকে আছেন, যাদের ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক আছে।’

বিদেশি কোনো শক্তি বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক নষ্ট করতে ইন্ধন দিচ্ছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সেটাই তো আরও বড় কারণ যে আমরা চাই না দুই দেশের মধ্যে কোনো তিক্ততা থাকুক। বাইরে থেকে কেউ কিছু করলে আমরা চাই না তা দুই দেশের সম্পর্কে প্রভাব ফেলুক। দৃশ্যত কোনো বড় সমস্যা নেই। আমাদের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্কে কোনো ঝামেলা নেই। রাজনৈতিকভাবেও তারা আমাদের রাজনীতিতে সরাসরি হস্তক্ষেপ করছে—এমনটা নয়। কিছু বক্তব্য আসে, আমরাও দিই। কেউ যদি কিছু করে থাকে, পুরোপুরি সমস্যা নেই—এ কথা নিশ্চিত করে বলা যায় না। তবে আমরা চেষ্টা করছি যেন কোনোভাবেই অস্বাভাবিক কিছু না ঘটে।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভারত একটি বড় দেশ। আমাদের প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, “আমরা আঞ্চলিকতায় বিশ্বাস করি।” ভারতের পাশাপাশি ভুটান, নেপাল ও পাকিস্তানের সঙ্গেও সম্পর্ক উন্নয়নে কাজ করা হচ্ছে। আমরা শুধু বাংলাদেশ নিয়ে আলাদা করে থাকতে পারি না। অর্থনীতি, স্বাস্থ্যসহ নানা ক্ষেত্রে ভারতের সঙ্গে আমাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।’

Ad 300x250
সর্বাধিক পঠিত

সম্পর্কিত