স্ট্রিম ডেস্ক

বিএনপি চেয়ারপারসন ও বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুর খবর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ব্যাপক গুরুত্ব পায়। বিশ্বের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যমগুলো একে বাংলাদেশের রাজনীতির একটি যুগের অবসান হিসেবে উল্লেখ করে।
বিবিসি তাঁকে বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তুলে ধরে। প্রতিবেদনে বলা হয়, তিনি ছিলেন আপসহীন একজন নেতা। সামরিক শাসনের সময় নির্বাচন বর্জন এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে তাঁর ভূমিকার কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়।
দ্য গার্ডিয়ান লিখেছে, শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক বৈরিতা একটি প্রজন্মের রাজনীতিকে সংজ্ঞায়িত করেছে। সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে তাঁর আন্দোলনের কথাও প্রতিবেদনে উঠে আসে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সে খবরে তার সংক্ষিপ্ত জীবনী তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্ষমতার পালাবদলের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর তিক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে ওঠে। কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশর রাজনীতিতে সেই সেই প্রতিদ্বন্দ্বীতার প্রভাব বিস্তারের বিষয়টি তুলে ধরা হয়। স্বামীর মৃত্যুর পর রাজনীতিতে তাঁর উত্থান এবং সাম্প্রতিক খালাস পাওয়ার বিষয়টিও গুরুত্ব পায়।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সমর্থকদের কাছে বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন ভদ্র, রুচিশীল ও ঐতিহ্যবাহী ব্যক্তিত্বের অধিকারী একজন রাজনীতিক। তিনি কথা বলার ক্ষেত্রে ছিলেন সংযত ও পরিমিত। শব্দ বাছাই করে বক্তব্য দেওয়াই ছিল তাঁর স্বভাব। তবে দল ও রাজনৈতিক অবস্থানের প্রশ্নে তিনি ছিলেন দৃঢ় ও আপসহীন। প্রতিপক্ষের মুখোমুখি হতে তিনি কখনোই পিছপা হননি।
অন্যদিকে শেখ হাসিনা ছিলেন অনেক বেশি সরব ও প্রত্যক্ষভাষী। তাঁর রাজনৈতিক আচরণ ছিল আক্রমণাত্মক ও দৃঢ়। এই দুই নেত্রীর সম্পূর্ণ ভিন্ন ব্যক্তিত্বই দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের রাজনীতিতে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে আরও উসকে দেয়। কয়েক দশক ধরে এই দ্বন্দ্ব দেশের রাজনীতিকে প্রভাবিত করে।
১৯৯১ সালে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো একটি অবাধ ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে বেগম খালেদা জিয়া শেখ হাসিনাকে পরাজিত করে চমকপ্রদ বিজয় অর্জন করেন।
এই বিজয়ের মধ্য দিয়ে বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। একই সঙ্গে তিনি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে দ্বিতীয় নারী সরকারপ্রধান হন। এর আগে পাকিস্তানে বেনজির ভুট্টো এই মর্যাদা অর্জন করেন।
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর খালেদা জিয়া রাষ্ট্র পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার আনেন। তিনি রাষ্ট্রপতি শাসনব্যবস্থার পরিবর্তে সংসদীয় শাসনব্যবস্থা পুনর্বহাল করেন। এর ফলে নির্বাহী ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীর হাতে কেন্দ্রীভূত হয়।
এ ছাড়া তিনি বিদেশি বিনিয়োগের ওপর আরোপিত নানা বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করেন। দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে গতি আনার উদ্যোগ নেন। পাশাপাশি প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক ও বিনামূল্যে চালু করেন। এই সিদ্ধান্ত সামাজিক উন্নয়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হয়।
কাতার ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরা তাঁকে বাংলাদেশের অস্থির রাজনীতির এক প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব হিসেবে বর্ণনা করে। তাঁকে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রতীক হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, শেখ হাসিনার সঙ্গে কয়েক দশকের দ্বন্দ্বের মধ্য দিয়ে তিনি বাংলাদেশের রাজনীতিকে গড়ে তুলেছেন। ওয়াশিংটন পোস্ট এবং সিএনএনও একইভাবে তাঁর রাজনৈতিক ভূমিকা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাসহ দুর্নীতি মামলায় খালাস পাওয়ার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরে।
ভারতের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু, এনডিটিভি, হিন্দুস্তান টাইমস, দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া ও দ্য ইকোনমিক টাইমস বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুর খবর গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশ করে। অনেক গণমাধ্যম লাইভ আপডেট ও ছবি প্রকাশ করে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গভীর শোক ও সমবেদনা জানান।
কিছু প্রতিবেদনে তাঁর শাসনামলে ভারতের প্রতি তুলনামূলকভাবে দূরত্বপূর্ণ অবস্থানের কথা উল্লেখ করা হয়। পাকিস্তান ও চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের বিষয়টিও উঠে আসে। তবে অধিকাংশ প্রতিবেদনে তাঁর রাজনৈতিক উত্তরাধিকার এবং শেখ হাসিনার সঙ্গে দীর্ঘ প্রতিদ্বন্দ্বিতার দিকটিই বেশি গুরুত্ব পায়। শেখ হাসিনাকে সাধারণত ভারতপন্থী নেতা হিসেবে তুলে ধরা হয়।
পাকিস্তানের গণমাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়াকে পাকিস্তানের একজন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করা হয়। দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ শোক প্রকাশ করেন এবং বাংলাদেশের জনগণের প্রতি সংহতি জানান। বড় প্রতিবেদনে তাঁর পাকিস্তানের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব এবং ভারতবিরোধী বক্তব্যের প্রসঙ্গও তুলে ধরা হয়।
কাতারভিত্তিক আল জাজিরাসহ মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য গণমাধ্যমেও বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যু নিয়ে বিস্তারিত ও গুরুত্বসহকারে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তাঁকে ক্ষমতা ও প্রতিরোধের প্রতীক হিসেবে বর্ণনা করা হয়। তাঁকে বেনজির ভুট্টোর পর মুসলিম বিশ্বে অন্যতম প্রভাবশালী নারী রাজনৈতিক নেতা হিসেবে তুলে ধরা হয়।
আন্তর্জাতিকভাবে গুরুত্বের মাত্রা
বিশ্বজুড়ে বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খবর হিসেবে বিবেচিত হয়। বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে এই মৃত্যু আরও গুরুত্ব পায়। অধিকাংশ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এটি শীর্ষ সংবাদ বা বিশেষ খবর হিসেবে প্রকাশ করে। ছবি ও ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটও যুক্ত করা হয়।
বাংলাদেশ ও প্রতিবেশী দেশগুলোতে এই খবর দীর্ঘ সময় ধরে সংবাদচক্রে প্রাধান্য পায়। শান্তি বজায় রাখা এবং দোয়ার আহ্বান জানানো হয়। পশ্চিমা গণমাধ্যমে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক ঘটনা হিসেবে উপস্থাপিত হয়।
মূল্যায়ন ও উপস্থাপন
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে মূল্যায়ন ছিল মোটামুটি ভারসাম্যপূর্ণ, তবে সামগ্রিকভাবে ইতিবাচক।
তাঁকে স্বৈরশাসনবিরোধী আন্দোলনের প্রতীক হিসেবে প্রশংসা করা হয়। নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে তাঁর ভূমিকা বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়।
অনেক প্রতিবেদনে তাঁকে ‘আপসহীন’, ‘প্রভাবশালী’ এবং ‘জাতীয় নেতা’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়। শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক দ্বন্দ্বকে বাংলাদেশের রাজনীতির মূল চালিকাশক্তি হিসেবে তুলে ধরা হয়।
একই সঙ্গে কিছু সমালোচনাও উঠে আসে। তাঁর শাসনামলে নির্বাচন ব্যবস্থার দুর্বলতা, দুর্নীতির অভিযোগ এবং নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্তের কথা উল্লেখ করা হয়। তবে এসব মামলাকে অনেক প্রতিবেদনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেও উল্লেখ করা হয়।
সমর্থকেরা তাঁকে রাজনৈতিক নিপীড়নের শিকার হিসেবে দেখেন। সমালোচকেরা মনে করেন, গণতান্ত্রিক অগ্রগতি টেকসই করতে তিনি পুরোপুরি সফল হননি।
সামগ্রিকভাবে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে তাঁর মৃত্যু একটি অস্থির ও গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক অধ্যায়ের সমাপ্তি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে বিএনপির ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব, বিশেষ করে তারেক রহমানের ভূমিকা নিয়ে সতর্ক আশাবাদ বা উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
২০২৬ সালের শুরুর দিকে সম্ভাব্য নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যু বাংলাদেশের বিরোধী রাজনীতির গতিপথে নতুন প্রভাব ফেলতে পারে বলে মত দেওয়া হয়।

বিএনপি চেয়ারপারসন ও বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুর খবর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ব্যাপক গুরুত্ব পায়। বিশ্বের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যমগুলো একে বাংলাদেশের রাজনীতির একটি যুগের অবসান হিসেবে উল্লেখ করে।
বিবিসি তাঁকে বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তুলে ধরে। প্রতিবেদনে বলা হয়, তিনি ছিলেন আপসহীন একজন নেতা। সামরিক শাসনের সময় নির্বাচন বর্জন এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে তাঁর ভূমিকার কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়।
দ্য গার্ডিয়ান লিখেছে, শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক বৈরিতা একটি প্রজন্মের রাজনীতিকে সংজ্ঞায়িত করেছে। সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে তাঁর আন্দোলনের কথাও প্রতিবেদনে উঠে আসে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সে খবরে তার সংক্ষিপ্ত জীবনী তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্ষমতার পালাবদলের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর তিক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে ওঠে। কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশর রাজনীতিতে সেই সেই প্রতিদ্বন্দ্বীতার প্রভাব বিস্তারের বিষয়টি তুলে ধরা হয়। স্বামীর মৃত্যুর পর রাজনীতিতে তাঁর উত্থান এবং সাম্প্রতিক খালাস পাওয়ার বিষয়টিও গুরুত্ব পায়।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সমর্থকদের কাছে বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন ভদ্র, রুচিশীল ও ঐতিহ্যবাহী ব্যক্তিত্বের অধিকারী একজন রাজনীতিক। তিনি কথা বলার ক্ষেত্রে ছিলেন সংযত ও পরিমিত। শব্দ বাছাই করে বক্তব্য দেওয়াই ছিল তাঁর স্বভাব। তবে দল ও রাজনৈতিক অবস্থানের প্রশ্নে তিনি ছিলেন দৃঢ় ও আপসহীন। প্রতিপক্ষের মুখোমুখি হতে তিনি কখনোই পিছপা হননি।
অন্যদিকে শেখ হাসিনা ছিলেন অনেক বেশি সরব ও প্রত্যক্ষভাষী। তাঁর রাজনৈতিক আচরণ ছিল আক্রমণাত্মক ও দৃঢ়। এই দুই নেত্রীর সম্পূর্ণ ভিন্ন ব্যক্তিত্বই দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের রাজনীতিতে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে আরও উসকে দেয়। কয়েক দশক ধরে এই দ্বন্দ্ব দেশের রাজনীতিকে প্রভাবিত করে।
১৯৯১ সালে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো একটি অবাধ ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে বেগম খালেদা জিয়া শেখ হাসিনাকে পরাজিত করে চমকপ্রদ বিজয় অর্জন করেন।
এই বিজয়ের মধ্য দিয়ে বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। একই সঙ্গে তিনি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে দ্বিতীয় নারী সরকারপ্রধান হন। এর আগে পাকিস্তানে বেনজির ভুট্টো এই মর্যাদা অর্জন করেন।
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর খালেদা জিয়া রাষ্ট্র পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার আনেন। তিনি রাষ্ট্রপতি শাসনব্যবস্থার পরিবর্তে সংসদীয় শাসনব্যবস্থা পুনর্বহাল করেন। এর ফলে নির্বাহী ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীর হাতে কেন্দ্রীভূত হয়।
এ ছাড়া তিনি বিদেশি বিনিয়োগের ওপর আরোপিত নানা বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করেন। দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে গতি আনার উদ্যোগ নেন। পাশাপাশি প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক ও বিনামূল্যে চালু করেন। এই সিদ্ধান্ত সামাজিক উন্নয়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হয়।
কাতার ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরা তাঁকে বাংলাদেশের অস্থির রাজনীতির এক প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব হিসেবে বর্ণনা করে। তাঁকে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রতীক হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, শেখ হাসিনার সঙ্গে কয়েক দশকের দ্বন্দ্বের মধ্য দিয়ে তিনি বাংলাদেশের রাজনীতিকে গড়ে তুলেছেন। ওয়াশিংটন পোস্ট এবং সিএনএনও একইভাবে তাঁর রাজনৈতিক ভূমিকা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাসহ দুর্নীতি মামলায় খালাস পাওয়ার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরে।
ভারতের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু, এনডিটিভি, হিন্দুস্তান টাইমস, দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া ও দ্য ইকোনমিক টাইমস বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুর খবর গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশ করে। অনেক গণমাধ্যম লাইভ আপডেট ও ছবি প্রকাশ করে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গভীর শোক ও সমবেদনা জানান।
কিছু প্রতিবেদনে তাঁর শাসনামলে ভারতের প্রতি তুলনামূলকভাবে দূরত্বপূর্ণ অবস্থানের কথা উল্লেখ করা হয়। পাকিস্তান ও চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের বিষয়টিও উঠে আসে। তবে অধিকাংশ প্রতিবেদনে তাঁর রাজনৈতিক উত্তরাধিকার এবং শেখ হাসিনার সঙ্গে দীর্ঘ প্রতিদ্বন্দ্বিতার দিকটিই বেশি গুরুত্ব পায়। শেখ হাসিনাকে সাধারণত ভারতপন্থী নেতা হিসেবে তুলে ধরা হয়।
পাকিস্তানের গণমাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়াকে পাকিস্তানের একজন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করা হয়। দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ শোক প্রকাশ করেন এবং বাংলাদেশের জনগণের প্রতি সংহতি জানান। বড় প্রতিবেদনে তাঁর পাকিস্তানের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব এবং ভারতবিরোধী বক্তব্যের প্রসঙ্গও তুলে ধরা হয়।
কাতারভিত্তিক আল জাজিরাসহ মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য গণমাধ্যমেও বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যু নিয়ে বিস্তারিত ও গুরুত্বসহকারে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তাঁকে ক্ষমতা ও প্রতিরোধের প্রতীক হিসেবে বর্ণনা করা হয়। তাঁকে বেনজির ভুট্টোর পর মুসলিম বিশ্বে অন্যতম প্রভাবশালী নারী রাজনৈতিক নেতা হিসেবে তুলে ধরা হয়।
আন্তর্জাতিকভাবে গুরুত্বের মাত্রা
বিশ্বজুড়ে বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খবর হিসেবে বিবেচিত হয়। বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে এই মৃত্যু আরও গুরুত্ব পায়। অধিকাংশ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এটি শীর্ষ সংবাদ বা বিশেষ খবর হিসেবে প্রকাশ করে। ছবি ও ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটও যুক্ত করা হয়।
বাংলাদেশ ও প্রতিবেশী দেশগুলোতে এই খবর দীর্ঘ সময় ধরে সংবাদচক্রে প্রাধান্য পায়। শান্তি বজায় রাখা এবং দোয়ার আহ্বান জানানো হয়। পশ্চিমা গণমাধ্যমে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক ঘটনা হিসেবে উপস্থাপিত হয়।
মূল্যায়ন ও উপস্থাপন
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে মূল্যায়ন ছিল মোটামুটি ভারসাম্যপূর্ণ, তবে সামগ্রিকভাবে ইতিবাচক।
তাঁকে স্বৈরশাসনবিরোধী আন্দোলনের প্রতীক হিসেবে প্রশংসা করা হয়। নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে তাঁর ভূমিকা বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়।
অনেক প্রতিবেদনে তাঁকে ‘আপসহীন’, ‘প্রভাবশালী’ এবং ‘জাতীয় নেতা’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়। শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক দ্বন্দ্বকে বাংলাদেশের রাজনীতির মূল চালিকাশক্তি হিসেবে তুলে ধরা হয়।
একই সঙ্গে কিছু সমালোচনাও উঠে আসে। তাঁর শাসনামলে নির্বাচন ব্যবস্থার দুর্বলতা, দুর্নীতির অভিযোগ এবং নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্তের কথা উল্লেখ করা হয়। তবে এসব মামলাকে অনেক প্রতিবেদনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেও উল্লেখ করা হয়।
সমর্থকেরা তাঁকে রাজনৈতিক নিপীড়নের শিকার হিসেবে দেখেন। সমালোচকেরা মনে করেন, গণতান্ত্রিক অগ্রগতি টেকসই করতে তিনি পুরোপুরি সফল হননি।
সামগ্রিকভাবে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে তাঁর মৃত্যু একটি অস্থির ও গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক অধ্যায়ের সমাপ্তি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে বিএনপির ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব, বিশেষ করে তারেক রহমানের ভূমিকা নিয়ে সতর্ক আশাবাদ বা উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
২০২৬ সালের শুরুর দিকে সম্ভাব্য নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যু বাংলাদেশের বিরোধী রাজনীতির গতিপথে নতুন প্রভাব ফেলতে পারে বলে মত দেওয়া হয়।

বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন মালদ্বীপের প্রধানমন্ত্রী। এক্সে এক শোকবার্তায় তিনি বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানান।
২ ঘণ্টা আগে
বিএনপি চেয়ারপারসন ও বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক শোকবার্তায় তিনি খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক অবদান এবং বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক উন্নয়নে তাঁর ভূমিকার কথা স্মরণ করেন।
৪ ঘণ্টা আগে
বিএনপি চেয়ারপারসন ও বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক বার্তায় তিনি খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক অবদান ও বাংলাদেশের উন্নয়নে তাঁর ভূমিকার কথা স্মরণ করেন।
৪ ঘণ্টা আগে
চলতি বছর সমুদ্রপথে স্পেন পৌঁছাতে গিয়ে অন্তত তিন হাজার ৯০ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী নিহত হয়েছেন। সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) স্পেনের বেসরকারি সংস্থা ‘কামিনান্দো ফ্রোন্তেরাস’ এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
১৫ ঘণ্টা আগে