আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ও ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদের নেতৃত্বে ১৮ দলীয় নতুন জোটের আত্মপ্রকাশ হয়েছে। জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট (এনডিএফ) নামের এই জোটের প্রধান উপদেষ্টা করা হয়েছে জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান মঞ্জুকে এবং আনিসুলকে করা হয়েছে চেয়ারম্যান।
আজ সোমবার (৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর গুলশানের ইমানুয়েলস সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই জোটের ঘোষণা দেন আনিসুল ইসলাম। জোটে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল আছে মাত্র ছয়টি। এছাড়া জাতীয় পার্টি (জাপা) মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারকে মুখপাত্র করা হয়েছে।
এনডিএফের শরিক দলগুলো হলো—জাতীয় পার্টি (জাপা-আনিসুল), বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (জেপি), বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম), বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট, তৃণমূল বিএনপি, জাতীয় পার্টি বাংলাদেশ (জেপিবি), বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (মহসিন রশিদ), জাতীয় সাংস্কৃতিক জোট, বাংলাদেশ নেজামে ঈসলামী পার্টি (একাংশ), ডেমোক্রেটিক পার্টি এবং গণতান্ত্রিক জোট বাংলাদেশ, এলায়েন্স ডেমোক্রেটিক পার্টি (এডিপি), বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক আন্দোলন, বাংলাদেশ স্বাধীনতা পার্টি, বাংলাদেশ স্বাধীন পার্টি, ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক পার্টি, বাংলাদেশ গণআন্দোলন, গণফ্রন্ট এবং জাতীয় একতা পার্টি।
জোট গঠন উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথি হয়ে বক্তব্য দেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। জোটের ঘোষণাপত্র পাঠ করেন আনিসুল ইসলাম। এসময়ে তিনি আগামী নির্বাচন মব কালচারের নির্বাচন হতে যাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন।
আনিসুল ইসলাম বলেন, ‘সবার প্রশ্ন নির্বাচন হবে কি-না। অর্থাৎ সরকার এখনো নির্বাচনি পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারেনি। এই নির্বাচন হতে যাচ্ছে মব কালচারের নির্বাচন। যদি না এই সরকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক করতে না পারে, নির্বাচন যদি আমরা ঠিকভাবে না করতে পারি, অতীতের নির্বাচনগুলোর ভুল থেকে যদি শিক্ষা নিতে না পারি, তাহলে কিভাবে সম্ভব? বর্তমান যে অবস্থা চলছে সে অবস্থা থাকলে এটি প্রকৃত একটি মব কালচারের নির্বাচন হবে।’
জোট সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘১৮টি দল একীভূত হয়ে আমরা আজ জোট করেছি। এই জোট কেবল নির্বাচনি জোট নয়, এটি রাজনৈতিক জোট। আমাদের জোটে অংশগ্রহণকারীরা এতে সম্মতি দিয়েই অংশগ্রহণ করছে। দেশ যে বিভাজনের মাঝে আছে আমরা সে বিভাজন দূর করে একটি ঐক্যবদ্ধ রাজনীতি উপহার দিব।’
সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘মাত্র ৩ মাসের মধ্যেই আগের তত্ত্বাবধায়ক সরকারগুলো প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক করে ফেলেছিল। ১৯৯২, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের নির্বাচন মানুষের কাছে এখনও গ্রহণযোগ্য। এরকম পরিবেশ কেন সৃষ্টি করা হচ্ছে না?’
এসময় জোটের মুখপাত্র ও জাতীয় পার্টির মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার তার স্বাগত বক্তব্যে বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা মহোদয় ও তার সরকার সকল দলকে নিয়ে একটি সুস্থ নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূল নির্বাচন করবেন। কোনো দলকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করলে, সে নির্বাচনের পর গঠিত সরকার ক্ষণস্থায়ী হবে। অতীত থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে ব্রিটিশ হাই কমিশনের রাজনৈতিক কাউন্সিলর টিম ডাকেট, মার্কিন দূতাবাস প্রতিনিধি কামরুল হাসান খান, ব্রুনাই মিশন প্রধান রোজাইমি আবদুল্লাহ, ভারতীয় দূতাবাসের দ্বিতীয় সচিব (রাজনৈতিক) পুজা ঝাও, এফিসাস, কাজী শহীদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।