২৭ জুন: টাকাও যেদিন মেশিন থেকে বেরিয়ে এল
১৯৬৭ সালের ২৭ জুন আজকের এই দিনেই প্রথম চালু হয়েছিল এটিএম মেশিন। কীভাবে টাকা তোলার এই যন্ত্র বানানোর কথা মাথায় এসেছিল, বইপত্র ঘেঁটে জানা যাক সেই চমকপ্রদ গল্প।
গৌতম কে শুভ
বর্তমানে নগদ টাকার দরকার হলে আমরা আর ব্যাংকে দৌড়াই না। আশেপাশে থাকা এটিএম বুথে গিয়ে তুলে ফেলি। ব্যাংকের ডেবিট, ক্রেডিট বা প্রিপেইড কার্ড, সঙ্গে চার অঙ্কের পিন নম্বর মনে রাখলেই চলে। টাকা আমাদের হাতে এসে যায় কয়েক সেকেন্ডেই। কিন্তু এর পেছনের আবিষ্কারের গল্প আমরা কয়জন জানি!
১৯৬৭ সালের আজকে এই দিনে (২৭ জুন) লন্ডনের এনফিল্ডে বার্কলেস ব্যাংকের একটি শাখায় বিশ্বের প্রথম এটিএম মেশিন থেকে টাকা তোলা হয়েছিল।
ঘটনার শুরু ১৯৬৫ সালে, লন্ডনে। ভারতের শিলংয়ে বেড়ে ওঠা স্কটিশ উদ্ভাবক জন শেফার্ড ব্যারন একদিন ব্যাংকে গেলেন টাকা তুলতে। কিন্তু সেখানে পৌঁছাতে তাঁর এক মিনিট দেরি হয়ে গেল। টাকাটা আর তুলতে পারলেন না। সে দিন খুবই সমস্যায় পড়তে হয়েছিল ব্যারনকে। অথচ ওই এক মিনিট দেরি থেকেই তাঁর মাথায় জন্ম নেয় অদ্ভুত এক ভাবনা। যদি চকলেট ভেন্ডিং মেশিনের মতো কোনো মেশিন থেকে টাকা বেরিয়ে আসে!
শুনতে অবাস্তব মনে হলেও তখন জন শেফার্ড ব্যারনের মনে হয়েছিল, এটা সম্ভব। কারণ, তিনি নিজে ব্যাংক নোট ছাপা ও পরিবহনের কাজে যুক্ত ছিলেন। টাকার নিরাপত্তা, ছাপা ও গন্তব্যে পৌঁছানোর ধাপগুলো ভালোভাবেই বুঝতেন। তাই ভেবেছিলেন, ব্যাংকে না গিয়ে নির্দিষ্ট কোড ব্যবহার করে টাকা তুলতে পারলে মন্দ হয় না।
এর পর থেকে তাঁর মাথায় ঘুরতে থাকে কীভাবে এই সমস্যার সমাধান করা যায়!
এল ‘অটোমেটেড টেলার মেশিন’
অবশেষে শেফার্ডের সেই চিন্তাকেই বাস্তবে রূপ দিয়েছিল বার্কলেস ব্যাংক। শুরু হয় নতুন পরিকল্পনা। প্রথম থেকেই এটাকে তাঁরা ভেবেছিলেন ‘অটোমেটেড টেলার মেশিন’ (এটিএম) হিসেবে। অর্থাৎ এটা এমন এক যন্ত্র হবে, যেটা ব্যাংকের টেলার বা ক্যাশ কাউন্টার ব্যবস্থাকেই বদলে দেবে।
এরপর ঠিক বছর দুই পরের কথা। ১৯৬৭ সালের ২৭ জুন তাঁর স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নেয়। উত্তর লন্ডনের এনফিল্ড এলাকায় বার্কলেস ব্যাংকের একটি শাখায় প্রথম বসানো হয় এটিএম মেশিন। ডিজিটাল স্ক্রিনের যুগ তখনো আসেনি। তাই সব নির্দেশনা লেখা ছিল মেশিনের গায়ে। আর টাকা তোলার জন্য ব্যবহার করা হতো ‘টোকেন’। পিন নম্বর দেওয়া হতো আলাদা করে।

এটিএম চালুর প্রথম দিন ব্যাংকের সামনে রীতিমতো উৎসবের আবহ তৈরি হয়েছিল। সেদিন এই মেশিন দেখতে বুথের বাইরে জড়ো হয়েছিল হাজারো উৎসুক মানুষ। বার্কলেস ব্যাংকের ডেপুটি চেয়ারম্যান স্যার থমাস ব্ল্যান্ড সেদিন এটিএম বুথের উদ্বোধন করেন। প্রথম গ্রাহক হিসেবে টাকা তোলেন বিখ্যাত ব্রিটিশ কৌতুক অভিনেতা রেগ ভার্নি। মজার ব্যাপার হলো, তিনি মাত্র ১০ পাউন্ড তুলতে পেরেছিলেন। তা-ও আবার এক পাউন্ডের দশটি নোট। কারণ এটাই ছিল টাকা তোলার সর্বোচ্চ সীমা।
প্রথম দিকের এই এটিএম ছিল একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ের। প্লাস্টিকের ব্যাংক-কার্ড বাজারে আসেনি তখনো। আর মেশিনটি অনলাইনে যুক্তও ছিল না। মানে আপনি টাকা তুললেও সঙ্গে সঙ্গে সেটি ব্যাংকের হিসাবে মিলিয়ে ফেলা যেত না। পরে হাতে-কলমে হিসাব মেলাতে হতো।
এই পুরো পরিকল্পনায় জন শেফার্ড ব্যারনের আরেকটি বড় অবদান হলো ‘পিন নম্বর’ ব্যবস্থা চালু করা। শুরুতে তিনি ছয় অঙ্কের পিন ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর স্ত্রী ক্যারোলিন বলেছিলেন, ‘ছয় অঙ্ক মনে রাখা কষ্টকর।’ তাই পিন নম্বর চার অঙ্কের রাখা হয়। আজও আমরা সেই চার অঙ্কের পিন নম্বরেই অভ্যস্ত। যার পেছনে আছে ক্যারোলিনের সেই সহজ যুক্তি।
তবে জন শেফার্ড ব্যারন তাঁর এই যুগান্তকারী আবিষ্কারের পেটেন্ট নেননি। কারণ, ব্যাংকের আইনজীবীরা তাঁকে পরামর্শ দিয়েছিলেন, পেটেন্ট নিলে পুরো প্রযুক্তির তথ্য প্রকাশ করতে হবে। আর সেটা অপরাধীদের হাতে গেলে বিপদ হতে পারে।
শুরুর দিকে কিন্তু সবাই এটিএম ব্যবহার করতে পারতেন না। মেশিন থেকে টাকা তোলার সুযোগ ছিল শুধুই ‘লেনদেন ভালো থাকা’ গ্রাহকদের। তবুও এই মেশিন বদলে দেয় ব্যাংকের টাকা লেনদেনের ধারাকে। এরপর মানুষ আর ব্যাংকের সময়সূচির মধ্যে আটকে থাকল না। মেশিনটা দাঁড়িয়ে গেল ২৪ ঘণ্টা, সাত দিন, সারা বছর, নগদ টাকা তোলার দরজা খোলা রেখে।
এখন খুব সহজেই এটিএম থেকে টাকা তুলতে পারি আমরা। কিন্তু এই গোটা যাত্রার শুরুটা হয়েছিল সেই ‘এক মিনিটের দেরি’ দিয়ে।
বর্তমানে নগদ টাকার দরকার হলে আমরা আর ব্যাংকে দৌড়াই না। আশেপাশে থাকা এটিএম বুথে গিয়ে তুলে ফেলি। ব্যাংকের ডেবিট, ক্রেডিট বা প্রিপেইড কার্ড, সঙ্গে চার অঙ্কের পিন নম্বর মনে রাখলেই চলে। টাকা আমাদের হাতে এসে যায় কয়েক সেকেন্ডেই। কিন্তু এর পেছনের আবিষ্কারের গল্প আমরা কয়জন জানি!
১৯৬৭ সালের আজকে এই দিনে (২৭ জুন) লন্ডনের এনফিল্ডে বার্কলেস ব্যাংকের একটি শাখায় বিশ্বের প্রথম এটিএম মেশিন থেকে টাকা তোলা হয়েছিল।
ঘটনার শুরু ১৯৬৫ সালে, লন্ডনে। ভারতের শিলংয়ে বেড়ে ওঠা স্কটিশ উদ্ভাবক জন শেফার্ড ব্যারন একদিন ব্যাংকে গেলেন টাকা তুলতে। কিন্তু সেখানে পৌঁছাতে তাঁর এক মিনিট দেরি হয়ে গেল। টাকাটা আর তুলতে পারলেন না। সে দিন খুবই সমস্যায় পড়তে হয়েছিল ব্যারনকে। অথচ ওই এক মিনিট দেরি থেকেই তাঁর মাথায় জন্ম নেয় অদ্ভুত এক ভাবনা। যদি চকলেট ভেন্ডিং মেশিনের মতো কোনো মেশিন থেকে টাকা বেরিয়ে আসে!
শুনতে অবাস্তব মনে হলেও তখন জন শেফার্ড ব্যারনের মনে হয়েছিল, এটা সম্ভব। কারণ, তিনি নিজে ব্যাংক নোট ছাপা ও পরিবহনের কাজে যুক্ত ছিলেন। টাকার নিরাপত্তা, ছাপা ও গন্তব্যে পৌঁছানোর ধাপগুলো ভালোভাবেই বুঝতেন। তাই ভেবেছিলেন, ব্যাংকে না গিয়ে নির্দিষ্ট কোড ব্যবহার করে টাকা তুলতে পারলে মন্দ হয় না।
এর পর থেকে তাঁর মাথায় ঘুরতে থাকে কীভাবে এই সমস্যার সমাধান করা যায়!
এল ‘অটোমেটেড টেলার মেশিন’
অবশেষে শেফার্ডের সেই চিন্তাকেই বাস্তবে রূপ দিয়েছিল বার্কলেস ব্যাংক। শুরু হয় নতুন পরিকল্পনা। প্রথম থেকেই এটাকে তাঁরা ভেবেছিলেন ‘অটোমেটেড টেলার মেশিন’ (এটিএম) হিসেবে। অর্থাৎ এটা এমন এক যন্ত্র হবে, যেটা ব্যাংকের টেলার বা ক্যাশ কাউন্টার ব্যবস্থাকেই বদলে দেবে।
এরপর ঠিক বছর দুই পরের কথা। ১৯৬৭ সালের ২৭ জুন তাঁর স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নেয়। উত্তর লন্ডনের এনফিল্ড এলাকায় বার্কলেস ব্যাংকের একটি শাখায় প্রথম বসানো হয় এটিএম মেশিন। ডিজিটাল স্ক্রিনের যুগ তখনো আসেনি। তাই সব নির্দেশনা লেখা ছিল মেশিনের গায়ে। আর টাকা তোলার জন্য ব্যবহার করা হতো ‘টোকেন’। পিন নম্বর দেওয়া হতো আলাদা করে।

এটিএম চালুর প্রথম দিন ব্যাংকের সামনে রীতিমতো উৎসবের আবহ তৈরি হয়েছিল। সেদিন এই মেশিন দেখতে বুথের বাইরে জড়ো হয়েছিল হাজারো উৎসুক মানুষ। বার্কলেস ব্যাংকের ডেপুটি চেয়ারম্যান স্যার থমাস ব্ল্যান্ড সেদিন এটিএম বুথের উদ্বোধন করেন। প্রথম গ্রাহক হিসেবে টাকা তোলেন বিখ্যাত ব্রিটিশ কৌতুক অভিনেতা রেগ ভার্নি। মজার ব্যাপার হলো, তিনি মাত্র ১০ পাউন্ড তুলতে পেরেছিলেন। তা-ও আবার এক পাউন্ডের দশটি নোট। কারণ এটাই ছিল টাকা তোলার সর্বোচ্চ সীমা।
প্রথম দিকের এই এটিএম ছিল একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ের। প্লাস্টিকের ব্যাংক-কার্ড বাজারে আসেনি তখনো। আর মেশিনটি অনলাইনে যুক্তও ছিল না। মানে আপনি টাকা তুললেও সঙ্গে সঙ্গে সেটি ব্যাংকের হিসাবে মিলিয়ে ফেলা যেত না। পরে হাতে-কলমে হিসাব মেলাতে হতো।
এই পুরো পরিকল্পনায় জন শেফার্ড ব্যারনের আরেকটি বড় অবদান হলো ‘পিন নম্বর’ ব্যবস্থা চালু করা। শুরুতে তিনি ছয় অঙ্কের পিন ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর স্ত্রী ক্যারোলিন বলেছিলেন, ‘ছয় অঙ্ক মনে রাখা কষ্টকর।’ তাই পিন নম্বর চার অঙ্কের রাখা হয়। আজও আমরা সেই চার অঙ্কের পিন নম্বরেই অভ্যস্ত। যার পেছনে আছে ক্যারোলিনের সেই সহজ যুক্তি।
তবে জন শেফার্ড ব্যারন তাঁর এই যুগান্তকারী আবিষ্কারের পেটেন্ট নেননি। কারণ, ব্যাংকের আইনজীবীরা তাঁকে পরামর্শ দিয়েছিলেন, পেটেন্ট নিলে পুরো প্রযুক্তির তথ্য প্রকাশ করতে হবে। আর সেটা অপরাধীদের হাতে গেলে বিপদ হতে পারে।
শুরুর দিকে কিন্তু সবাই এটিএম ব্যবহার করতে পারতেন না। মেশিন থেকে টাকা তোলার সুযোগ ছিল শুধুই ‘লেনদেন ভালো থাকা’ গ্রাহকদের। তবুও এই মেশিন বদলে দেয় ব্যাংকের টাকা লেনদেনের ধারাকে। এরপর মানুষ আর ব্যাংকের সময়সূচির মধ্যে আটকে থাকল না। মেশিনটা দাঁড়িয়ে গেল ২৪ ঘণ্টা, সাত দিন, সারা বছর, নগদ টাকা তোলার দরজা খোলা রেখে।
এখন খুব সহজেই এটিএম থেকে টাকা তুলতে পারি আমরা। কিন্তু এই গোটা যাত্রার শুরুটা হয়েছিল সেই ‘এক মিনিটের দেরি’ দিয়ে।

আজ ৮ ডিসেম্বর জন লেননের মৃত্যুদিন। দুনিয়া কাঁপানো ব্যান্ড বিটলস-এর প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য লেনন ছিলেন একাধারে গায়ক, গীতিকার, সুরকার, চিত্রশিল্পী, লেখক ও শান্তিকর্মী। ‘ইমাজিন’ তাঁর বিখ্যাত গান। এই গানে তিনি কোন পৃথিবীর স্বপ্ন দেখিয়েছেন? কেন গানটি আজও এত প্রাসঙ্গিক?
৪ ঘণ্টা আগে
বর্তমান বিশ্বে সাহসী বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে যাঁর নাম সবার আগে আসে, তিনি নোম চমস্কি। ৭ ডিসেম্বর তাঁর জন্মদিন। একদিকে তিনি আধুনিক ভাষাবিজ্ঞানের স্থপতি, অন্যদিকে শোষিতের পক্ষে দাঁড়ানো এক অকুতোভয় যোদ্ধা। খুঁজে দেখা যাক আধুনিক সময়ের অন্যতম প্রধান চিন্তক ও জনবুদ্ধিজীবী নোম চমস্কির বর্ণাঢ্য জীবন ও কর্ম।
৬ ঘণ্টা আগে
শুনতে অবাক লাগলেও এমন ঘটনাই ঘটেছে মুক্তিযুদ্ধের সময়। যদিও ইতিহাসের পাতায় কচুরিপানা নিয়ে খুব কমই লেখা হয়েছে, কিন্তু কচুরিপানার অবদান অস্বীকার কোনো উপায় নেই। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস কেবল বারুদ আর রক্তের ইতিহাস নয়। এটি ছিল বাংলার মাটি, জল ও প্রকৃতির এক সম্মিলিত সংগ্রাম।
৬ ঘণ্টা আগে
‘আমরা বর্ষার অপেক্ষায় আছি… তাঁরা পানিকে ভয় পায়, আর আমরা হচ্ছি জলের রাজা। প্রকৃতি হবে আমাদের দ্বিতীয় বাহিনী।’ নিউইয়র্ক টাইমসের খ্যাতিমান সাংবাদিক সিডনি শনবার্গের ‘ডেটলাইন বাংলাদেশ’ প্রতিবেদনে এসব কথা বলেছিলেন এক বাঙালি অফিসার।
৬ ঘণ্টা আগে