স্ট্রিম ডেস্ক

উত্তরাঞ্চলে চায়ে কেন লবন দেওয়া হয় সেই প্রশ্নের উত্তর মিললো কক্সবাজারের হোটেল আল ফাত্তাহর সামনে। বাঁশ রেস্তোরায় রাতের খাবার খেয়ে হোটেলে ফেরার সময় চা খেতে ডাকলেন মানিক ভাই। কক্সবাজারে গেলে তিনি একরকম অভিভাবকের ভূমিকা পালন করেন। ডেভেলপমেন্ট রিসার্চ ইনিশিয়েটিভ (ডিআরআই) থেকে শুধু একবার কল করে কতদিন থাকবো আর কতজন সেটা জানিয়ে দিলে কক্সবাজারে থাকার ব্যপারে নিশ্চিত থাকা যায়।সব ব্যবস্থা মানিক ভাই করেন।
চায়ের কাপে টি ব্যাগ ডুবিয়ে দীপ কুন্ডকে খোঁচা দিয়ে বললাম, চায়ে কিন্তু লবন আছে! তিনি আঁৎকে উঠলেন কি না বোঝা গেল না। তবে মানিক ভাই বললেন, এদিকে চায়ে লবন খুব কম দেওয়া হয়। যারা লবন দেয়, তারা আসলে চিনির পরিমাণ কমানোর জন্য লবন দেয়। কামরুল হাসান আরমান বললেন, ‘কি রকম?’
লবন দিলে মিষ্টি কিছুটা বেড়ে গিয়ে স্বাদটা একটু অন্যরকম হয়। কিন্তু তখন চিনি কম দিলেও চলে। এটা একেবারে খারাপ না বলেও মন্তব্য করলেন তিনি। আমি সায় দিয়ে বললাম, তাতে চিনি কম খাওয়ার কারণে স্বাস্থ্য একটু কম ঝুঁকির মধ্যে পড়লো আরকি। দীপ কুন্ড এবার প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলেন, লবন কি চায়ের মধ্যে স্বাস্থ্যকর?
আন্তজার্তিক সংস্থা কারিতাস বাংলাদেশের একটা মূল্যায়ণ কাজের জন্য গেল বছরের (২০২৩) নভেম্বরের শেষ সপ্তাহটা কক্সবাজারে কাটিয়েছি আমরা। কারিতাসের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পানি, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধির (ওয়াশ) নানান আয়োজন করা হয়েছে। গুটিকতক আয়োজন স্থানীয় বাংলাদেশিদের জন্যও ছিলো কারিতাসের পক্ষ থেকে। কারিতাসের দুই বছর মেয়াদী ওয়াশ কর্মসূচির শেষ মূল্যায়ন করছিলাম আমরা।

রাজধানী ঢাকার যে বস্তিগুলো আছে সেগুলোর পয়নিষ্কাশন ব্যবস্থা তো যাচ্ছেতাই। খুব ভালো স্যানিটেশন ব্যবস্থা নেই। আছে নিরাপদ সুপেয় পানির সংকট, পানি ও বায়ুবাহিত রোগের ছড়াছড়ি, শিশু কিশোরদের পড়াশোনায় মনোযোগ নেই, আরও নানান কিছু।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অবস্থা এতটাও খারাপ নয় এখন। শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের (আরআরআরসি) তথ্য অনুসারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প এবং এগুলোর আশপাশে ১৩১ টি এনজিও কাজ করেছে। এদের মধ্যে কয়েকটি এনজিওকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে সরকার। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের এ সব এনজিও মানুষের মৌলিক চাহিদা তথা খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা ও শিক্ষার নানাবিধ ব্যবস্থা করেছে।
ফলে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মানুষেরা ধীরে ধীরে স্বাস্থ্য সচেতন হয়ে উঠেছেন। আগে যেখানে তাঁরা খোলা জায়গায় পায়খানা করতেন, হাত না ধুয়েই খাবার খেতেন এখন সে সব অভ্যাসের পরিবর্তন ঘটেছে। ধীরে ধীরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার চেষ্টা করছেন তাঁরা। কারিতাসের কর্মকর্তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, আগে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রতি ঘরে ডায়রিয়া লেগে থাকতো। এনজিও’র অস্থায়ী চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোতে ডায়রিয়ার চিকিৎসার জন্য লম্বা লাইন লেগে থাকতো। কিন্তু গেল বছরের (২০২৩) শেষার্ধে ক্যাম্প ১৮ তে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা ছিলো মোটে ১২ জন।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ হয়েছে আমার। দুই দফায় অন্তত ৪০ জন রোহিঙ্গা শরণার্থীর সঙ্গে, পানি, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে কথা বলেছি। তাদের ভাষ্যকে সংক্ষেপ করলে বলা যায়, রোহিঙ্গাদের খাবারের ব্যবস্থা করে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচিসহ (ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম– ডব্লিউএফপি) বেশ কয়েকটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থা। বাসস্থান বানিয়ে দিয়েছে কারিতাসহ বিভিন্ন সংস্থা, ঘরবাড়ি মেরামতও তারাই করে দেন। পাহাড় কেটে সিড়ি বানিয়ে দেওয়া হয়েছে, গাছপালা কেটে ঘরবাড়ি বানানো হয়েছে।
পায়খানা ও গোসলখানা বসিয়েছে বাংলাদেশের সরকারের জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরসহ জাতীয় ও আন্তজার্তিক বিভিন্ন এনজিও এবং তাদের ল্যাট্রিন ভরে গেলে সেগুলো পরিস্কার করে দেওয়ার দায়িত্বও এনজিওগুলো কাঁধে তুলে নিয়েছে।
খাবার পানির জন্য ওয়াটার নেটওয়ার্ক, গৃহস্থালির কাজের জন্য, শ্যালো ও ডিপ টিউবওয়েল, পায়খানা ও গোসলখানা স্থাপন, সেগুলো নিয়মিত পরিস্কার রাখার জন্য পরিস্কারক সামগ্রী, প্রশিক্ষণ, প্রতিবন্ধী ও শিশুদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা, স্বাস্থ্যবিধি বিষয়ক প্রশিক্ষণ, স্বাস্থ্যবিধি ব্যবস্থাপণার জন্য নিয়মিত তদারকি, পরিস্কারক নানা সামগ্রী নিয়মিত বিতরণের ব্যবস্থা করা হয়।
রোহিঙ্গাদের শিক্ষার জন্য এনজিওগুলো নানা ধরনের কর্মসূচি পরিচালনা করছে। যেগুলোর শিক্ষা নিয়ে এনজিওগুলোতেই চাকরি করছে রোহিঙ্গা কিশোর ও নারীরা। তবে অভিযোগও কম নয়, যেসব রোহিঙ্গা নারী এনজিওতে কাজ করেন তাদের অনেকের সংসার ভেঙ্গে গেছে বলেও জানা গেল। তবে রোহিঙ্গাদের দাবি, তারা মায়ানমারের চেয়ে বাংলাদেশের ক্যম্পে কয়েক হাজার গুণ ভালো আছে।
ক্যাম্প ১৮ তে বসে আছি কারিতাসের মাঠ কার্যালয়ে। দুপুর একটার মতো বাজে। দলীয় আলোচনা (ফোকাস গ্রুপ ডিসকাশন– এফজিডি) পরিচালনা করতে হবে। গাইডলাইনে চোখ বুলাচ্ছি আর সহকর্মীদের সাথে আলাপ আলোচনা চলছে। হুট করে একজন সহকর্মী বললেন, পেছনে তাকান, ‘জারা পিছে তো দ্যাখো’। মুখ ঘুরিয়ে দেখি একদল শিশু কিশোর হাতে লম্বা রাম দা, ছোঁরাসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মহড়া দিচ্ছে। কারও মুখে কথা আর সরে না।
এনজিও কর্মীরা জানালেন, এটা এখানকার নিত্যদিনের চিত্র। ব্যাপারটা বেশ কৌতূহলী করে তুললো আমাকে। নির্ধারিত কাজের ফাঁকে তাই জানার চেষ্টা করলাম বিষয়টা কি। স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে যা বুঝলাম, তা অনেকটা এ রকম—
প্রভাব বিস্তারের জন্য ক্যাম্পে বিশেষ কয়েকটি দল আছে। তাদের কাছে নানা ধরনের অস্ত্র থাকে সবসময়। দেশীয় অস্ত্রের পাশাপাশি আগ্নেয়াস্ত্রের সংখ্যাও কম নয়। এই সশস্ত্র দলগুলো রাতের বেলা সক্রিয় হয়ে ওঠে। তাদের কথা না শুনলে নানা ধরনের হুমকি ধামকির ব্যবস্থা আছে। তাদের উদ্দেশ্য শুধুই আধিপত্য বিস্তার।
বাংলাদেশ সরকারের নীতিমালা অনুসারে, এনজিওগুলো কাজ করতে পারে সকাল থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত। এরপর তাদের ক্যাম্প থেকে বেড়িয়ে যেতে হয়। বেলা তিনটার পর মূলত শুরু হয় এ সব সশস্ত্র দলের খেলা। মাঝে মধ্যেই গুলির শব্দ শোনা যায় ক্যাম্পে। এনজিওগুলোর পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাদের চলাচলের রাস্তায় সড়কবাতি দেওয়া হয়েছিল, সেগুলো ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে যাতে রাতে বাইরে বেরোনোর সাহস সাধারণ মানুষ না করে। এনজিও কর্মীরা ক্যাম্প ত্যাগ করার পর জনসাধারণ জরুরী প্রয়োজন না হলে ঘর থেকে বের হয় না।
জাতিসংঘের শরনার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর এর তথ্য অনুসারে, কক্সবাজারে এখন ২৭টি ক্যাম্পে রোহিঙ্গারা বসবাস করছেন। ২০১৭ সালে যখন তারা এ দেশে আশ্রয় নেয় সে সময় তাদের সংখ্যা সাত লাখের মতো হলেও এখন সংখ্যাটা ১০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। আর এই দশ লাখ জনগোষ্ঠীকে ইঁদুর বিড়াল খেলায় আটকে রেখেছে অল্প কিছু সশস্ত্র সন্ত্রাসী।

উত্তরাঞ্চলে চায়ে কেন লবন দেওয়া হয় সেই প্রশ্নের উত্তর মিললো কক্সবাজারের হোটেল আল ফাত্তাহর সামনে। বাঁশ রেস্তোরায় রাতের খাবার খেয়ে হোটেলে ফেরার সময় চা খেতে ডাকলেন মানিক ভাই। কক্সবাজারে গেলে তিনি একরকম অভিভাবকের ভূমিকা পালন করেন। ডেভেলপমেন্ট রিসার্চ ইনিশিয়েটিভ (ডিআরআই) থেকে শুধু একবার কল করে কতদিন থাকবো আর কতজন সেটা জানিয়ে দিলে কক্সবাজারে থাকার ব্যপারে নিশ্চিত থাকা যায়।সব ব্যবস্থা মানিক ভাই করেন।
চায়ের কাপে টি ব্যাগ ডুবিয়ে দীপ কুন্ডকে খোঁচা দিয়ে বললাম, চায়ে কিন্তু লবন আছে! তিনি আঁৎকে উঠলেন কি না বোঝা গেল না। তবে মানিক ভাই বললেন, এদিকে চায়ে লবন খুব কম দেওয়া হয়। যারা লবন দেয়, তারা আসলে চিনির পরিমাণ কমানোর জন্য লবন দেয়। কামরুল হাসান আরমান বললেন, ‘কি রকম?’
লবন দিলে মিষ্টি কিছুটা বেড়ে গিয়ে স্বাদটা একটু অন্যরকম হয়। কিন্তু তখন চিনি কম দিলেও চলে। এটা একেবারে খারাপ না বলেও মন্তব্য করলেন তিনি। আমি সায় দিয়ে বললাম, তাতে চিনি কম খাওয়ার কারণে স্বাস্থ্য একটু কম ঝুঁকির মধ্যে পড়লো আরকি। দীপ কুন্ড এবার প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলেন, লবন কি চায়ের মধ্যে স্বাস্থ্যকর?
আন্তজার্তিক সংস্থা কারিতাস বাংলাদেশের একটা মূল্যায়ণ কাজের জন্য গেল বছরের (২০২৩) নভেম্বরের শেষ সপ্তাহটা কক্সবাজারে কাটিয়েছি আমরা। কারিতাসের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পানি, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধির (ওয়াশ) নানান আয়োজন করা হয়েছে। গুটিকতক আয়োজন স্থানীয় বাংলাদেশিদের জন্যও ছিলো কারিতাসের পক্ষ থেকে। কারিতাসের দুই বছর মেয়াদী ওয়াশ কর্মসূচির শেষ মূল্যায়ন করছিলাম আমরা।

রাজধানী ঢাকার যে বস্তিগুলো আছে সেগুলোর পয়নিষ্কাশন ব্যবস্থা তো যাচ্ছেতাই। খুব ভালো স্যানিটেশন ব্যবস্থা নেই। আছে নিরাপদ সুপেয় পানির সংকট, পানি ও বায়ুবাহিত রোগের ছড়াছড়ি, শিশু কিশোরদের পড়াশোনায় মনোযোগ নেই, আরও নানান কিছু।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অবস্থা এতটাও খারাপ নয় এখন। শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের (আরআরআরসি) তথ্য অনুসারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প এবং এগুলোর আশপাশে ১৩১ টি এনজিও কাজ করেছে। এদের মধ্যে কয়েকটি এনজিওকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে সরকার। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের এ সব এনজিও মানুষের মৌলিক চাহিদা তথা খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা ও শিক্ষার নানাবিধ ব্যবস্থা করেছে।
ফলে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মানুষেরা ধীরে ধীরে স্বাস্থ্য সচেতন হয়ে উঠেছেন। আগে যেখানে তাঁরা খোলা জায়গায় পায়খানা করতেন, হাত না ধুয়েই খাবার খেতেন এখন সে সব অভ্যাসের পরিবর্তন ঘটেছে। ধীরে ধীরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার চেষ্টা করছেন তাঁরা। কারিতাসের কর্মকর্তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, আগে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রতি ঘরে ডায়রিয়া লেগে থাকতো। এনজিও’র অস্থায়ী চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোতে ডায়রিয়ার চিকিৎসার জন্য লম্বা লাইন লেগে থাকতো। কিন্তু গেল বছরের (২০২৩) শেষার্ধে ক্যাম্প ১৮ তে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা ছিলো মোটে ১২ জন।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ হয়েছে আমার। দুই দফায় অন্তত ৪০ জন রোহিঙ্গা শরণার্থীর সঙ্গে, পানি, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে কথা বলেছি। তাদের ভাষ্যকে সংক্ষেপ করলে বলা যায়, রোহিঙ্গাদের খাবারের ব্যবস্থা করে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচিসহ (ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম– ডব্লিউএফপি) বেশ কয়েকটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থা। বাসস্থান বানিয়ে দিয়েছে কারিতাসহ বিভিন্ন সংস্থা, ঘরবাড়ি মেরামতও তারাই করে দেন। পাহাড় কেটে সিড়ি বানিয়ে দেওয়া হয়েছে, গাছপালা কেটে ঘরবাড়ি বানানো হয়েছে।
পায়খানা ও গোসলখানা বসিয়েছে বাংলাদেশের সরকারের জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরসহ জাতীয় ও আন্তজার্তিক বিভিন্ন এনজিও এবং তাদের ল্যাট্রিন ভরে গেলে সেগুলো পরিস্কার করে দেওয়ার দায়িত্বও এনজিওগুলো কাঁধে তুলে নিয়েছে।
খাবার পানির জন্য ওয়াটার নেটওয়ার্ক, গৃহস্থালির কাজের জন্য, শ্যালো ও ডিপ টিউবওয়েল, পায়খানা ও গোসলখানা স্থাপন, সেগুলো নিয়মিত পরিস্কার রাখার জন্য পরিস্কারক সামগ্রী, প্রশিক্ষণ, প্রতিবন্ধী ও শিশুদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা, স্বাস্থ্যবিধি বিষয়ক প্রশিক্ষণ, স্বাস্থ্যবিধি ব্যবস্থাপণার জন্য নিয়মিত তদারকি, পরিস্কারক নানা সামগ্রী নিয়মিত বিতরণের ব্যবস্থা করা হয়।
রোহিঙ্গাদের শিক্ষার জন্য এনজিওগুলো নানা ধরনের কর্মসূচি পরিচালনা করছে। যেগুলোর শিক্ষা নিয়ে এনজিওগুলোতেই চাকরি করছে রোহিঙ্গা কিশোর ও নারীরা। তবে অভিযোগও কম নয়, যেসব রোহিঙ্গা নারী এনজিওতে কাজ করেন তাদের অনেকের সংসার ভেঙ্গে গেছে বলেও জানা গেল। তবে রোহিঙ্গাদের দাবি, তারা মায়ানমারের চেয়ে বাংলাদেশের ক্যম্পে কয়েক হাজার গুণ ভালো আছে।
ক্যাম্প ১৮ তে বসে আছি কারিতাসের মাঠ কার্যালয়ে। দুপুর একটার মতো বাজে। দলীয় আলোচনা (ফোকাস গ্রুপ ডিসকাশন– এফজিডি) পরিচালনা করতে হবে। গাইডলাইনে চোখ বুলাচ্ছি আর সহকর্মীদের সাথে আলাপ আলোচনা চলছে। হুট করে একজন সহকর্মী বললেন, পেছনে তাকান, ‘জারা পিছে তো দ্যাখো’। মুখ ঘুরিয়ে দেখি একদল শিশু কিশোর হাতে লম্বা রাম দা, ছোঁরাসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মহড়া দিচ্ছে। কারও মুখে কথা আর সরে না।
এনজিও কর্মীরা জানালেন, এটা এখানকার নিত্যদিনের চিত্র। ব্যাপারটা বেশ কৌতূহলী করে তুললো আমাকে। নির্ধারিত কাজের ফাঁকে তাই জানার চেষ্টা করলাম বিষয়টা কি। স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে যা বুঝলাম, তা অনেকটা এ রকম—
প্রভাব বিস্তারের জন্য ক্যাম্পে বিশেষ কয়েকটি দল আছে। তাদের কাছে নানা ধরনের অস্ত্র থাকে সবসময়। দেশীয় অস্ত্রের পাশাপাশি আগ্নেয়াস্ত্রের সংখ্যাও কম নয়। এই সশস্ত্র দলগুলো রাতের বেলা সক্রিয় হয়ে ওঠে। তাদের কথা না শুনলে নানা ধরনের হুমকি ধামকির ব্যবস্থা আছে। তাদের উদ্দেশ্য শুধুই আধিপত্য বিস্তার।
বাংলাদেশ সরকারের নীতিমালা অনুসারে, এনজিওগুলো কাজ করতে পারে সকাল থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত। এরপর তাদের ক্যাম্প থেকে বেড়িয়ে যেতে হয়। বেলা তিনটার পর মূলত শুরু হয় এ সব সশস্ত্র দলের খেলা। মাঝে মধ্যেই গুলির শব্দ শোনা যায় ক্যাম্পে। এনজিওগুলোর পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাদের চলাচলের রাস্তায় সড়কবাতি দেওয়া হয়েছিল, সেগুলো ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে যাতে রাতে বাইরে বেরোনোর সাহস সাধারণ মানুষ না করে। এনজিও কর্মীরা ক্যাম্প ত্যাগ করার পর জনসাধারণ জরুরী প্রয়োজন না হলে ঘর থেকে বের হয় না।
জাতিসংঘের শরনার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর এর তথ্য অনুসারে, কক্সবাজারে এখন ২৭টি ক্যাম্পে রোহিঙ্গারা বসবাস করছেন। ২০১৭ সালে যখন তারা এ দেশে আশ্রয় নেয় সে সময় তাদের সংখ্যা সাত লাখের মতো হলেও এখন সংখ্যাটা ১০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। আর এই দশ লাখ জনগোষ্ঠীকে ইঁদুর বিড়াল খেলায় আটকে রেখেছে অল্প কিছু সশস্ত্র সন্ত্রাসী।

আজ ৮ ডিসেম্বর জন লেননের মৃত্যুদিন। দুনিয়া কাঁপানো ব্যান্ড বিটলস-এর প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য লেনন ছিলেন একাধারে গায়ক, গীতিকার, সুরকার, চিত্রশিল্পী, লেখক ও শান্তিকর্মী। ‘ইমাজিন’ তাঁর বিখ্যাত গান। এই গানে তিনি কোন পৃথিবীর স্বপ্ন দেখিয়েছেন? কেন গানটি আজও এত প্রাসঙ্গিক?
৪ ঘণ্টা আগে
বর্তমান বিশ্বে সাহসী বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে যাঁর নাম সবার আগে আসে, তিনি নোম চমস্কি। ৭ ডিসেম্বর তাঁর জন্মদিন। একদিকে তিনি আধুনিক ভাষাবিজ্ঞানের স্থপতি, অন্যদিকে শোষিতের পক্ষে দাঁড়ানো এক অকুতোভয় যোদ্ধা। খুঁজে দেখা যাক আধুনিক সময়ের অন্যতম প্রধান চিন্তক ও জনবুদ্ধিজীবী নোম চমস্কির বর্ণাঢ্য জীবন ও কর্ম।
৬ ঘণ্টা আগে
শুনতে অবাক লাগলেও এমন ঘটনাই ঘটেছে মুক্তিযুদ্ধের সময়। যদিও ইতিহাসের পাতায় কচুরিপানা নিয়ে খুব কমই লেখা হয়েছে, কিন্তু কচুরিপানার অবদান অস্বীকার কোনো উপায় নেই। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস কেবল বারুদ আর রক্তের ইতিহাস নয়। এটি ছিল বাংলার মাটি, জল ও প্রকৃতির এক সম্মিলিত সংগ্রাম।
৬ ঘণ্টা আগে
‘আমরা বর্ষার অপেক্ষায় আছি… তাঁরা পানিকে ভয় পায়, আর আমরা হচ্ছি জলের রাজা। প্রকৃতি হবে আমাদের দ্বিতীয় বাহিনী।’ নিউইয়র্ক টাইমসের খ্যাতিমান সাংবাদিক সিডনি শনবার্গের ‘ডেটলাইন বাংলাদেশ’ প্রতিবেদনে এসব কথা বলেছিলেন এক বাঙালি অফিসার।
৬ ঘণ্টা আগে