leadT1ad

ভারতের গোয়ার নাইটক্লাবে আগুন, পর্যটকসহ ২৫ জনের মৃত্যু

স্ট্রিম ডেস্ক
স্ট্রিম ডেস্ক

গোয়ায় নাইটক্লাবে আগুন। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের গোয়া রাজ্যের উত্তর গোয়ার অরপোরা এলাকায় জনপ্রিয় নাইটক্লাব ‘বার্চ বাই রোমিও লেন’-এ ভয়াবহ আগুনে কমপক্ষে ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (৬ ডিসেম্বর) রাত প্রায় ১টার দিকে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। শুরুতে পুলিশ ধারণা করছিল, রান্নাঘরের কাছে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। তবে প্রাথমিক তদন্তের পর গোয়া পুলিশের মহাপরিদর্শক জানান, পরিদর্শনে সিলিন্ডারগুলো অক্ষত পাওয়া গেছে।

অগ্নিকাণ্ডে আহত বেশ কয়েকজনকে গোয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। কর্মকর্তারা জানান, অধিকাংশের মৃত্যু হয়েছে ধোঁয়ায় দমবন্ধ হয়ে। নিহতদের মধ্যে চারজন পর্যটক এবং ১৪ জন ক্লাবের কর্মী বলে পরিচয় নিশ্চিত করা গেছে। বাকি সাতজনের পরিচয় নিশ্চিতের কাজ চলছে।

অগ্নিকাণ্ডের মুহূর্তে বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে মুহূর্তের মধ্যে আগুন পুরো ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে ভেতরে থাকা অনেকেই বের হতে পারেননি। নিহতদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। আহতদের অবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য এখনও জানানো হয়নি।

ঘটনাস্থলে রাতভর উদ্ধার কাজ চলে। ক্লাবটি সাময়িকভাবে সিলগালা করেছে প্রশাসন। মালিকপক্ষকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে, ক্লাবটি অগ্নিনিরাপত্তার নিয়ম মেনে চলছিল না।

গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সাওয়ান্ত দিনটিকে ‘খুব বেদনাদায়ক’ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি অগ্নিকাণ্ডের কারণ, অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা ও ভবনের নিয়ম মানা হয়েছে কি না, এ নিয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক মাইকেল লোবো বলেছেন, নিহতদের মধ্যে পর্যটক থাকলেও অধিকাংশই রেস্তোরাঁর বেসমেন্টে কাজ করা শ্রমিক। তিনি জানান, অনেকে ধোঁয়া থেকে বাঁচতে বেসমেন্টের দিকে ছুটে গিয়েছিলেন; সেখানেই দমবন্ধ হয়ে তাদের মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘উত্তর গোয়ায় অগ্নিকাণ্ডে বহু প্রাণহানি অত্যন্ত বেদনাদায়ক।’ তিনি নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন।

অরপোরার এই অগ্নিকাণ্ডে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘এই দুর্ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। প্রিয়জন হারানো সব পরিবারের প্রতি সমবেদনা রইল।’ তিনি গোয়ার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, নিহত প্রত্যেক পরিবারের জন্য প্রধানমন্ত্রী জাতীয় ত্রাণ তহবিল থেকে দুই লাখ রুপি এবং আহতদের জন্য ৫০ হাজার রুপি করে সহায়তা দেওয়া হবে।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ঘটনাটিকে ‘অত্যন্ত বেদনাদায়ক’ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, প্রশাসন উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনায় সক্রিয় রয়েছে।

এ ছাড়া সাবেক ওড়িশা মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক ও কেন্দ্রীয় বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী পীযূষ গোয়ালও শোক প্রকাশ করে নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন।

দুই ঘণ্টার চেষ্টায় দমকলের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছে। অগ্নিকাণ্ডের কারণ এবং দায় নির্ধারণে তদন্ত চলছে।

Ad 300x250

সম্পর্কিত