ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে তলব করে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরীফ ওসমান হাদির ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে প্রতিবেশী দেশটির সহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশ। আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টার সঙ্গে জড়িত সন্দেহভাজন ব্যক্তিরা যাতে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিতে না পারে, সে বিষয়ে ভারতের সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে। এমনকি হামলাকারীরা যদি ভারতে ঢুকেও থাকে, তবে তাদের তাৎক্ষণিক গ্রেপ্তার করে বাংলাদেশে প্রত্যর্পণের আহ্বান জানানো হয়েছে।
জুলাই অভ্যুত্থানের সক্রিয় নেতা শরীফ ওসমান হাদিকে গত শুক্রবার ঢাকায় গুলি করে দুর্বৃত্তরা। তিনি এখনো হাসপাতালে সংকটাপন্ন অবস্থায় চিকিৎসাধীন। হাদিকে গুলিবর্ষণকারীরা ভারতে পালিয়ে গেছে বলে গুঞ্জন রয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ভারতীয় হাইকমিশনারকে তলব করে বাংলাদেশে আসন্ন সংসদ নির্বাচন বানচালের লক্ষ্যে পলাতক শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে সমর্থকদের উদ্দেশে উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ দেওয়ায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে সরকার। এ ছাড়া কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের পলাতক নেতা-কর্মীরা ভারতে বসে বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন বানচালে নানা ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানোর ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছেন বলেও প্রণয় ভার্মাকে জানানো হয়। এসব সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা।
সাক্ষাৎকালে মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিত শেখ হাসিনা এবং তাঁর সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে ফেরত পাঠানোর আহ্বানও পুনর্ব্যক্ত করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আশা প্রকাশ করেছে, প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সুরক্ষায় ভারত সরকার বাংলাদেশের জনগণের পাশে দাঁড়াবে। জবাবে ভারতীয় হাইকমিশনার বলেন, বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে—এমন প্রত্যাশা ভারতের রয়েছে এবং এ বিষয়ে সর্বাত্মক সহযোগিতা দিতে তাঁর দেশ প্রস্তুত।
উল্লেখ্য, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বিভিন্ন ঘটনায় এ নিয়ে অন্তত পাঁচবার প্রতিবেশী দেশটির হাইকমিশনারকে তলব করা হলো। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতন ও ভারতে পলায়নের পর থেকে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে। অভ্যুত্থানের পক্ষশক্তিগুলোর অভিযোগ, বাংলাদেশে বিতর্কিত সব নির্বাচনের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার ক্ষমতায় টিকে থাকার পেছনে ভারত সরকার সমর্থন দিয়ে আসছিল।