রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আরবি বিভাগে চলমান শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ‘আঞ্চলিকতা ও স্বজনপ্রীতির’ অভিযোগ তুলেছেন বিভাগের কয়েকজন সাবেক শিক্ষার্থী। মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেটে এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এসব অভিযোগ উপস্থাপন করেন। এর আগে উপাচার্য বরাবর একটি স্মারকলিপিও জমা দেন তারা।
লিখিত বক্তব্যে অভিযোগকারীরা জানান, আরবি বিভাগের সাম্প্রতিক নিয়োগ প্রক্রিয়াকে কেন্দ্র করে ‘গুরুতর অনিয়ম, প্রভাব খাটানো, রাজনৈতিক পরিচয় ও ব্যক্তিগত ঘনিষ্ঠতাকে অগ্রাধিকার’ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম, সুষ্ঠু নিয়োগনীতি ও অ্যাকাডেমিক পরিবেশ প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে বলে তারা মনে করেন।
সংবাদ সম্মেলনে তারা পাঁচ দফা দাবি জানান। দাবিগুলো হলো— এ সংক্রান্ত অভিযোগের দ্রুত, স্বাধীন ও স্বচ্ছ তদন্ত কমিটি গঠন; তদন্ত সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট সব নিয়োগ ও সুপারিশ স্থগিত রাখা; তদন্ত কমিটিতে অরাজনৈতিক ও যোগ্য শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্ত করা; আঞ্চলিকতা, অর্থনৈতিক লেনদেন বা ব্যক্তিগত সম্পর্ককে অগ্রাধিকার দিলে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ ঘোষণা এবং ভবিষ্যতের জন্য ‘ট্রান্সপারেন্ট রিক্রুটমেন্ট প্রোটোকল (টিআরপি)’ প্রণয়ন।
সংবাদ সম্মেলনে সাবেক শিক্ষার্থী ড. নুরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, ‘বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী প্রার্থীদের বাদ দিয়ে একটি নির্দিষ্ট অঞ্চল থেকে ৮ পদের মধ্যে পাঁচ থেকে ছয়টি পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এতে প্রশ্ন ওঠে—এটা কি স্বজনপ্রীতি, নাকি প্রশ্নফাঁস?’ তিনি বলেন, ‘বিভাগের চেয়ারম্যান ও সিন্ডিকেট সদস্যের একই অঞ্চলের হওয়ায় ন্যায়বিচার নিয়ে আরও সন্দেহ তৈরি হয়েছে।’
আরেক সাবেক শিক্ষার্থী ড. মো. হাবিবুল্লাহ বলেন, ‘চব্বিশ-পরবর্তী বাংলাদেশে স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়ার প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যেসব অভিযোগ ঘুরে বেড়াচ্ছে, সেগুলো যদি সত্যি হয়—তাহলে এটা জাতির সঙ্গে প্রতারণা।’
২০১৩ সালের পর থেকে আরবি বিভাগে কোনো শিক্ষক নিয়োগ না হলেও অজানা কারণে যোগ্য প্রার্থীরা বঞ্চিত হয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি। তাই অভিযোগ তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত রাখার দাবি জানান সাবেক এই শিক্ষার্থী।