স্ট্রিম সংবাদদাতা

রাজশাহীতে ক্রমে নামছে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর। একটা সময় পানিই মিলছে না। এতে অগভীর নলকূপ (সেমিডিপ) সরিয়ে বসানো হচ্ছে অন্য জায়গায়। আবার নতুন নলকূপ স্থাপনের ক্ষেত্রেও খনন করতে হচ্ছে একাধিক জায়গায়। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে পরিত্যক্ত নলকূপের গর্তগুলো (বোরহোল) ঠিকমতো ভরাট করা হচ্ছে না। উন্মুক্ত এসব গর্তই পরিণত হয়েছে এক একটি মৃত্যুকূপে।
গত বুধবার (১০ ডিসেম্বর) এমন একটি কূপে পড়েই মারা যায় রাজশাহীর তানোরের কোয়েলহাট পূর্বপাড়া গ্রামের রাকিবুল ইসলামের দুই বছরের শিশু সাজিদ। স্থানীয়রা জানান, রাজশাহীর গোদাগাড়ী ও তানোর, পার্শ্ববর্তী চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সদর ও নাচোল এবং নওগাঁর নিয়ামতপুর, পোরশা ও সাপাহার উপজেলায় এমন শত শত পরিত্যক্ত গর্ত রয়েছে। এগুলোর ব্যাস ৮ থেকে ১২ ইঞ্চি। ফলে শিশু সাজিদের মতো মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে যেকোনো সময়। অথচ প্রশাসন কখনও এগুলো ভরাটে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি।
বরেন্দ্র অঞ্চলে ফসলের মাঠে সেচের পানি সরবরাহ করে কৃষি মন্ত্রণালয়ের স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ)। সেচের জন্য এ অঞ্চলে প্রতিষ্ঠানটির কয়েক হাজার গভীর নলকূপ রয়েছে। এর পাশাপাশি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে আরও কয়েক হাজার সেমিডিপ (অগভীর) নলকূপ বসে গেছে ব্যক্তিমালিকানায়।
এদিকে পানির স্তর ক্রমাগত নিচে নামতে থাকায় ২০১৫ সালের পর বিএমডিএ সিদ্ধান্ত নিয়ে নতুন কোনো গভীর নলকূপ বসায়নি। তবে ব্যক্তিমালিকানায় সেমিডিপ নলকূপ বসানোর কাজ থেমে নেই।
বিদ্যমান সেচ আইন অনুযায়ী, বিএমডিএর অধিক্ষেত্রে (নিজ কর্ম এলাকা) ব্যক্তি মালিকানায় গভীর বা অগভীর নলকূপ স্থাপনের সুযোগ নেই। তারপরও উপজেলা সেচ কমিটিকে ‘ম্যানেজ করে’ ব্যক্তি মালিকানায় সেমিডিপ নলকূপ অনুমোদন দেওয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে লেনদেন হয় মোটা অঙ্কের টাকা। সবশেষ বছরেই তানোরে ৩২টি অগভীর নলকূপ বসানোর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
অনুমোদন ছাড়াই বসছে অগভীর নলকূপ
কৃষি দপ্তর থেকে জানা যায়, তানোর উপজেলায় সেচযন্ত্র আছে ২ হাজার ১৯৫টি। এর মধ্যে বিএমডিএর গভীর নলকূপ ৫২৯টি। ব্যক্তিমালিকানায় এমন নলকূপ আছে ১৬টি। বাকিগুলো অগভীর নলকূপ। এর বাইরে প্রায় আড়াই হাজার অনুমোদনহীন সেমিডিপ নলকূপ চলছে। শুধু তানোর নয়, রাজশাহী, নাটোর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে উপজেলা সেচ কমিটির অনুমোদন ছাড়াই এমন শত শত অগভীর নলকূপ বসানো হয়েছে। কোথাও মুরগির খামার, কোথাও আবাসিক কিংবা ক্ষুদ্রশিল্পের নামে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে চালানো হচ্ছে এসব সেচপাম্প।

সরেজমিনে এর সত্যতাও পাওয়া যায়। শিশু সাজিদের বাড়ি যাওয়ার রাস্তায় পড়ে দুবইল গ্রাম। এ গ্রামের একটি বাড়ির পাশে সাইনবোর্ডে লেখা ‘মোহাম্মদ আলী পোলট্রি খামার’। শফিকুল ইসলামের মালিকানাধীন খামারটিতে কোনো মুরগি নেই। তবে খামারের পাশেই রয়েছে সেমিডিপ নলকূপ।
শফিকুল ইসলাম জানান, মুরগির খামারের বিদ্যুৎ সংযোগে তিনি সেচযন্ত্রটি চালান। তার মতো আরও অনেকেই এটি করেন।
রমরমা ব্যবসা
রাজশাহী, নওগাঁ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে ২০০ ফুট গভীরেও পানির স্তর পাওয়া যায় না অনেক স্থানে। তাই এ তিন জেলার ৪ হাজার ৯১১ মৌজায় এখন খাবারের পানি ছাড়া অন্য কোনো কাজে ব্যবহারের জন্য ভূগর্ভস্থ পানি তোলা নিষিদ্ধ করেছে সরকার। গত ৬ নভেম্বর এ-সংক্রান্ত গেজেট জারি করে সরকার।
তবে পানিসংকট নিয়ে কাজ করেন এমন ব্যক্তিরা বলছেন, এই সংকটের মধ্যেও অবৈধভাবে নতুন নতুন অগভীর নলকূপ বসছে ব্যক্তিমালিকানায়। উন্নয়নকর্মী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বরেন্দ্র অঞ্চলে সেচ একটি দামি ব্যবসা। একটি সেমিডিপ নলকূপ দিয়ে ৩০ থেকে ৪০ বিঘা পর্যন্ত জমিতে সেচ দেওয়া যায়। এখান থেকে ভালো মুনাফা হয়। অন্তত ৭৫ ভাগ লাভ থাকে। তাই অবৈধভাবে শ্যালোমেশিন বসানোর প্রতিযোগিতা চলছে।
জাহাঙ্গীর আলম জানান, পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় বছর-দুবছর পর এক স্থান থেকে সরিয়ে অন্য জায়গায় সেমিডিপ নলকূপ বসাতে দেখা যায়। এটাকে রি-বোরিং বলা হয়। এক-তৃতীয়াংশ অগভীর নলকূপ এভাবে সরানো হয়েছে। তবে স্থান পরিবর্তনের পর গর্তটি অনেক স্থানে থেকে গেছে। আবার নতুন নলকূপ বসানোর সময় অনেক সময় নিচে পানির লেয়ার পাওয়া যায় না। তখন একস্থানে করার পর আবার অন্যস্থানে বোরহোল করতে হয়। এভাবে রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁর সংকটাপন্ন এলাকাগুলোতে বহু গর্ত সৃষ্টি হয়েছে।
অনুমোদন নেননি কছির উদ্দিনও
যেই গর্তে পড়ে শিশু সাজিদের মৃত্যু হয়েছে সেটি করেছিলেন একই গ্রামের বাসিন্দা কছির উদ্দিন। তবে উপজেলা সেচ কমিটির কোনো অনুমোদন নেননি তিনি।
স্থানীয়রা জানান, কছির উদ্দিন দীর্ঘদিন বিদেশে ছিলেন। দেশে ফেরার পর পানির ব্যবসা শুরু করেন। এলাকায় তার পাঁচটি সেমিডিপ নলকূপ রয়েছে। এর মধ্যে দুটি বিদ্যুতের সংযোগ আছে শুধু সেচযন্ত্রের নামে। বাকিগুলোর মধ্যে একটি মৎস্য খামারের নামে এবং অন্য দুটি আরেকজনের সেমিডিপ নলকূপের লাইন থেকে অবৈধভাবে সংযোগ নিয়ে চালান।
তারা আরও জানান, পানির ব্যবসায় ভালো লাভ হওয়ায় প্রায় এক বছর আগে শিশু সাজিদের বাড়ির পাশে নিজের জমিতে আরেকটি অগভীর নলকূপ বসানোর চেষ্টা করেন কছির। এজন্য তিনটি বোরহোল করতে হয় তাকে। তবে ৯০ ফুট গভীরেও পানি না পাওয়ায় শেষপর্যন্ত নলকূপ বসাতে পারেননি। এরপর সামান্য খড়কুটো ও মাটি দিয়ে গর্তের মুখ ঢেকে দেওয়া হয়েছিল। সম্প্রতি তুমুল বৃষ্টিতে ওই স্থান তলিয়ে যায়। তখন মাটি ও খড় পানির সঙ্গে নিচে নেমে বোরহোলের মুখ উন্মুক্ত হয়ে পড়ে।

গত বুধবার এই সরু গর্তে পা দিতেই নিচে চলে যায় শিশু সাজিদ। ৩২ ঘণ্টা পর বৃহস্পতিবার রাতে মাটির প্রায় ৫০ ফুট গভীর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।
সাজিদের মা রুনা খাতুন বলেন, ‘কছির উদ্দিন তিন জায়গা বোরিং (বোরহোল) করে ফেলে রেখেছিল। তার কারণে আমার সাজিদ মারা গেল। আমি কছির উদ্দিনের শাস্তি চাই।’
তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাঈমা খান পদাধিকার বলে উপজেলা সেচ কমিটির সভাপতি। তিনি জানান, কছির উদ্দিনের কয়েকটি সেচপাম্প আছে বলে শুনেছেন। সেগুলো বৈধ কি না, তা যাচাই করবেন। তবে যে সেচপাম্পের বোরহোলে পড়ে সাজিদের মৃত্যু হয়েছে সেটির জন্য কছির উপজেলা সেচ কমিটির কাছে অনুমোদন নেননি।
ঘটনার পর আত্মগোপনে কছির
শিশু সাজিদ বোরহোলে পড়ে যাওয়ার পর থেকেই আত্মগোপনে রয়েছে কছির উদ্দিন। মোবাইল ফোন নম্বরও বন্ধ। তাঁর অবহেলার শাস্তি দাবি করেছেন সাজিদের বাবা রাকিবুল ইসলাম। যদিও মামলা করেননি তিনি।
এ নিয়ে রাকিবুল বলেন, ‘শুধু কছিরের অবহেলার জন্য আমার একটা কলিজা আমি হারিয়ে ফেললাম। প্রশাসন সবই দেখেছে। আমি তাদের কাছে একটা সুষ্ঠু বিচার চাই।’ মামলা করবেন কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘একটু ঠান্ডা মাথায় সবাই মিলে বসে সিদ্ধান্ত নেব।’
তানোরের ইউএনও নাঈমা খান বলেন, ‘কছির উদ্দিনের অবহেলার কারণে এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। ভিকটিমের পরিবার যেভাবে চাইবে, সেভাবে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

রাজশাহীতে ক্রমে নামছে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর। একটা সময় পানিই মিলছে না। এতে অগভীর নলকূপ (সেমিডিপ) সরিয়ে বসানো হচ্ছে অন্য জায়গায়। আবার নতুন নলকূপ স্থাপনের ক্ষেত্রেও খনন করতে হচ্ছে একাধিক জায়গায়। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে পরিত্যক্ত নলকূপের গর্তগুলো (বোরহোল) ঠিকমতো ভরাট করা হচ্ছে না। উন্মুক্ত এসব গর্তই পরিণত হয়েছে এক একটি মৃত্যুকূপে।
গত বুধবার (১০ ডিসেম্বর) এমন একটি কূপে পড়েই মারা যায় রাজশাহীর তানোরের কোয়েলহাট পূর্বপাড়া গ্রামের রাকিবুল ইসলামের দুই বছরের শিশু সাজিদ। স্থানীয়রা জানান, রাজশাহীর গোদাগাড়ী ও তানোর, পার্শ্ববর্তী চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সদর ও নাচোল এবং নওগাঁর নিয়ামতপুর, পোরশা ও সাপাহার উপজেলায় এমন শত শত পরিত্যক্ত গর্ত রয়েছে। এগুলোর ব্যাস ৮ থেকে ১২ ইঞ্চি। ফলে শিশু সাজিদের মতো মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে যেকোনো সময়। অথচ প্রশাসন কখনও এগুলো ভরাটে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি।
বরেন্দ্র অঞ্চলে ফসলের মাঠে সেচের পানি সরবরাহ করে কৃষি মন্ত্রণালয়ের স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ)। সেচের জন্য এ অঞ্চলে প্রতিষ্ঠানটির কয়েক হাজার গভীর নলকূপ রয়েছে। এর পাশাপাশি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে আরও কয়েক হাজার সেমিডিপ (অগভীর) নলকূপ বসে গেছে ব্যক্তিমালিকানায়।
এদিকে পানির স্তর ক্রমাগত নিচে নামতে থাকায় ২০১৫ সালের পর বিএমডিএ সিদ্ধান্ত নিয়ে নতুন কোনো গভীর নলকূপ বসায়নি। তবে ব্যক্তিমালিকানায় সেমিডিপ নলকূপ বসানোর কাজ থেমে নেই।
বিদ্যমান সেচ আইন অনুযায়ী, বিএমডিএর অধিক্ষেত্রে (নিজ কর্ম এলাকা) ব্যক্তি মালিকানায় গভীর বা অগভীর নলকূপ স্থাপনের সুযোগ নেই। তারপরও উপজেলা সেচ কমিটিকে ‘ম্যানেজ করে’ ব্যক্তি মালিকানায় সেমিডিপ নলকূপ অনুমোদন দেওয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে লেনদেন হয় মোটা অঙ্কের টাকা। সবশেষ বছরেই তানোরে ৩২টি অগভীর নলকূপ বসানোর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
অনুমোদন ছাড়াই বসছে অগভীর নলকূপ
কৃষি দপ্তর থেকে জানা যায়, তানোর উপজেলায় সেচযন্ত্র আছে ২ হাজার ১৯৫টি। এর মধ্যে বিএমডিএর গভীর নলকূপ ৫২৯টি। ব্যক্তিমালিকানায় এমন নলকূপ আছে ১৬টি। বাকিগুলো অগভীর নলকূপ। এর বাইরে প্রায় আড়াই হাজার অনুমোদনহীন সেমিডিপ নলকূপ চলছে। শুধু তানোর নয়, রাজশাহী, নাটোর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে উপজেলা সেচ কমিটির অনুমোদন ছাড়াই এমন শত শত অগভীর নলকূপ বসানো হয়েছে। কোথাও মুরগির খামার, কোথাও আবাসিক কিংবা ক্ষুদ্রশিল্পের নামে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে চালানো হচ্ছে এসব সেচপাম্প।

সরেজমিনে এর সত্যতাও পাওয়া যায়। শিশু সাজিদের বাড়ি যাওয়ার রাস্তায় পড়ে দুবইল গ্রাম। এ গ্রামের একটি বাড়ির পাশে সাইনবোর্ডে লেখা ‘মোহাম্মদ আলী পোলট্রি খামার’। শফিকুল ইসলামের মালিকানাধীন খামারটিতে কোনো মুরগি নেই। তবে খামারের পাশেই রয়েছে সেমিডিপ নলকূপ।
শফিকুল ইসলাম জানান, মুরগির খামারের বিদ্যুৎ সংযোগে তিনি সেচযন্ত্রটি চালান। তার মতো আরও অনেকেই এটি করেন।
রমরমা ব্যবসা
রাজশাহী, নওগাঁ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে ২০০ ফুট গভীরেও পানির স্তর পাওয়া যায় না অনেক স্থানে। তাই এ তিন জেলার ৪ হাজার ৯১১ মৌজায় এখন খাবারের পানি ছাড়া অন্য কোনো কাজে ব্যবহারের জন্য ভূগর্ভস্থ পানি তোলা নিষিদ্ধ করেছে সরকার। গত ৬ নভেম্বর এ-সংক্রান্ত গেজেট জারি করে সরকার।
তবে পানিসংকট নিয়ে কাজ করেন এমন ব্যক্তিরা বলছেন, এই সংকটের মধ্যেও অবৈধভাবে নতুন নতুন অগভীর নলকূপ বসছে ব্যক্তিমালিকানায়। উন্নয়নকর্মী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বরেন্দ্র অঞ্চলে সেচ একটি দামি ব্যবসা। একটি সেমিডিপ নলকূপ দিয়ে ৩০ থেকে ৪০ বিঘা পর্যন্ত জমিতে সেচ দেওয়া যায়। এখান থেকে ভালো মুনাফা হয়। অন্তত ৭৫ ভাগ লাভ থাকে। তাই অবৈধভাবে শ্যালোমেশিন বসানোর প্রতিযোগিতা চলছে।
জাহাঙ্গীর আলম জানান, পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় বছর-দুবছর পর এক স্থান থেকে সরিয়ে অন্য জায়গায় সেমিডিপ নলকূপ বসাতে দেখা যায়। এটাকে রি-বোরিং বলা হয়। এক-তৃতীয়াংশ অগভীর নলকূপ এভাবে সরানো হয়েছে। তবে স্থান পরিবর্তনের পর গর্তটি অনেক স্থানে থেকে গেছে। আবার নতুন নলকূপ বসানোর সময় অনেক সময় নিচে পানির লেয়ার পাওয়া যায় না। তখন একস্থানে করার পর আবার অন্যস্থানে বোরহোল করতে হয়। এভাবে রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁর সংকটাপন্ন এলাকাগুলোতে বহু গর্ত সৃষ্টি হয়েছে।
অনুমোদন নেননি কছির উদ্দিনও
যেই গর্তে পড়ে শিশু সাজিদের মৃত্যু হয়েছে সেটি করেছিলেন একই গ্রামের বাসিন্দা কছির উদ্দিন। তবে উপজেলা সেচ কমিটির কোনো অনুমোদন নেননি তিনি।
স্থানীয়রা জানান, কছির উদ্দিন দীর্ঘদিন বিদেশে ছিলেন। দেশে ফেরার পর পানির ব্যবসা শুরু করেন। এলাকায় তার পাঁচটি সেমিডিপ নলকূপ রয়েছে। এর মধ্যে দুটি বিদ্যুতের সংযোগ আছে শুধু সেচযন্ত্রের নামে। বাকিগুলোর মধ্যে একটি মৎস্য খামারের নামে এবং অন্য দুটি আরেকজনের সেমিডিপ নলকূপের লাইন থেকে অবৈধভাবে সংযোগ নিয়ে চালান।
তারা আরও জানান, পানির ব্যবসায় ভালো লাভ হওয়ায় প্রায় এক বছর আগে শিশু সাজিদের বাড়ির পাশে নিজের জমিতে আরেকটি অগভীর নলকূপ বসানোর চেষ্টা করেন কছির। এজন্য তিনটি বোরহোল করতে হয় তাকে। তবে ৯০ ফুট গভীরেও পানি না পাওয়ায় শেষপর্যন্ত নলকূপ বসাতে পারেননি। এরপর সামান্য খড়কুটো ও মাটি দিয়ে গর্তের মুখ ঢেকে দেওয়া হয়েছিল। সম্প্রতি তুমুল বৃষ্টিতে ওই স্থান তলিয়ে যায়। তখন মাটি ও খড় পানির সঙ্গে নিচে নেমে বোরহোলের মুখ উন্মুক্ত হয়ে পড়ে।

গত বুধবার এই সরু গর্তে পা দিতেই নিচে চলে যায় শিশু সাজিদ। ৩২ ঘণ্টা পর বৃহস্পতিবার রাতে মাটির প্রায় ৫০ ফুট গভীর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।
সাজিদের মা রুনা খাতুন বলেন, ‘কছির উদ্দিন তিন জায়গা বোরিং (বোরহোল) করে ফেলে রেখেছিল। তার কারণে আমার সাজিদ মারা গেল। আমি কছির উদ্দিনের শাস্তি চাই।’
তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাঈমা খান পদাধিকার বলে উপজেলা সেচ কমিটির সভাপতি। তিনি জানান, কছির উদ্দিনের কয়েকটি সেচপাম্প আছে বলে শুনেছেন। সেগুলো বৈধ কি না, তা যাচাই করবেন। তবে যে সেচপাম্পের বোরহোলে পড়ে সাজিদের মৃত্যু হয়েছে সেটির জন্য কছির উপজেলা সেচ কমিটির কাছে অনুমোদন নেননি।
ঘটনার পর আত্মগোপনে কছির
শিশু সাজিদ বোরহোলে পড়ে যাওয়ার পর থেকেই আত্মগোপনে রয়েছে কছির উদ্দিন। মোবাইল ফোন নম্বরও বন্ধ। তাঁর অবহেলার শাস্তি দাবি করেছেন সাজিদের বাবা রাকিবুল ইসলাম। যদিও মামলা করেননি তিনি।
এ নিয়ে রাকিবুল বলেন, ‘শুধু কছিরের অবহেলার জন্য আমার একটা কলিজা আমি হারিয়ে ফেললাম। প্রশাসন সবই দেখেছে। আমি তাদের কাছে একটা সুষ্ঠু বিচার চাই।’ মামলা করবেন কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘একটু ঠান্ডা মাথায় সবাই মিলে বসে সিদ্ধান্ত নেব।’
তানোরের ইউএনও নাঈমা খান বলেন, ‘কছির উদ্দিনের অবহেলার কারণে এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। ভিকটিমের পরিবার যেভাবে চাইবে, সেভাবে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

সাতক্ষীরায় জামায়াত প্রার্থীর নির্বাচনী পথসভায় অংশ নেওয়ায় পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মহিবুল্লাহকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় সাতক্ষীরার পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
৩০ মিনিট আগে
সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আজিজ খান এবং তাঁর স্ত্রী ও মেয়ের নামে প্রায় ৭১১ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের সন্ধান পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এসব সম্পদের উৎস জানতে চেয়ে তাঁদের তিনজনের নামে আলাদা সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ জারির অনুমোদন দিয়েছে সংস্থাটি।
১ ঘণ্টা আগে
২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ও বিডিএস ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। রোববার (১৪ ডিসেম্বর) এ ফল প্রকাশ করা হয়। এতে সরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে ভর্তির জন্য প্রাথমিকভাবে ৫ হাজার ৬৪৫ জন প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন।
১ ঘণ্টা আগে
সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। রোববার (১৪ ডিসেম্বর) রাতে পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা স্ট্রিমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
২ ঘণ্টা আগে