leadT1ad

ট্রাইব্যুনাল নিয়ে ‘বিরূপ মন্তব্য’: ফজলুর রহমানকে সশরীরে হাজির হওয়ার নির্দেশ

স্ট্রিম প্রতিবেদক
স্ট্রিম প্রতিবেদক
ঢাকা

প্রকাশ : ৩০ নভেম্বর ২০২৫, ১৪: ০০
ফজলুর রহমান (সংগৃহীত ছবি)

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও এর বিচারকদের নিয়ে ‘বিরূপ মন্তব্যের’ জেরে আদালত অবমাননার অভিযোগের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ফজলুর রহমানকে সশরীরে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আজ রোববার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন দুই সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ আদেশ দেন। আগামী ৮ ডিসেম্বর তাঁকে ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত হয়ে এ বিষয়ে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করতে বলা হয়েছে। বেঞ্চের অপর সদস্য হলেন মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

গত ২৩ নভেম্বর বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের একটি টক শোতে অংশ নিয়ে ফজলুর রহমান ট্রাইব্যুনাল ও এর বিচারকদের নিয়ে ‘অসত্য, ভিত্তিহীন ও উসকানিমূলক’ মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রসিকিউশনের আবেদনের শুনানি শেষে আদালত আজ এই আদেশ দিলেন।

এর আগে বুধবার প্রসিকিউশনের আবেদনে বলা হয়, ওই টকশোতে ফজলুর রহমান বলেন, ‘আমি প্রথম দিন থেকেই বলছি, এই কোর্ট আমি মানি না।’ এ সময় উপস্থাপক বিষয়টি ‘মিডিয়া জানে কি না’ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সবাই জানে, জানবে না কেন? আমার ইউটিউব শোনেন। আমি এই কোর্ট মানি না। এই কোর্টের বিচার আমি মানি না। ইউটিউবে বলছি, টকশোতে বলছি। যদি না বলে থাকি এখন বললে আমার ভুল, আমি মাফ চাবো।’

এ ছাড়া ট্রাইব্যুনালের বিচারক ও পক্ষগুলোর মধ্যে যোগসাজশের ইঙ্গিত দিয়ে তিনি মন্তব্য করেন, ‘এই কোর্টের গঠন প্রক্রিয়া বলে—এই কোর্টে বিচার হইতে পারে না। এই কোর্টে যারা বিচার করতেছে, আমার ধারণা এদের মধ্যে ভেতরে একটা কথা আছে (ইন্টারনাল অ্যারেঞ্জমেন্ট)।’

সেদিন (বুধবার) শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম ও মিজানুল ইসলাম। প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম বলেন, ‘বেশির ভাগ বিরূপ মন্তব্য নাম-ঠিকানা গোপন রেখে বা দেশের বাইরে থেকে করা হয়, যার সবগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু একজন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও দায়িত্বশীল রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব যখন প্রকাশ্যে ট্রাইব্যুনালকে প্রশ্নবিদ্ধ করেন, তখন ব্যবস্থা নেওয়া ছাড়া বিকল্প থাকে না।’

এ সময় প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইনের ১১(৪) ধারা অনুযায়ী, বিচারক, আদালত বা বিচারপ্রক্রিয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত করে—এমন যেকোনো বক্তব্য আদালত অবমাননার শামিল। এই ধারায় এক বছর পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে।

প্রসিকিউশন আরও জানায়, ফজলুর রহমান এর আগেও এ ধরনের মন্তব্য করায় নিজ দল থেকে শাস্তিমূলক পদক্ষেপের মুখে পড়েছিলেন। বারবার তিনি কেন একই ধরনের বক্তব্য দিচ্ছেন, তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।

উল্লেখ্য, জুলাই-আগস্টের গণহত্যার বিচার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য পুনর্গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বর্তমানে সক্রিয় রয়েছে। এরই মধ্যে ট্রাইব্যুনাল নিয়ে বিরূপ মন্তব্যের জেরে জ্যেষ্ঠ এই আইনজীবীকে তলব করা হলো।

Ad 300x250

সম্পর্কিত