‘বিজয়’ শব্দটিকে আমরা প্রায়শই রাজনৈতিক বিজয় হিসেবে দেখি। কিন্তু বাংলাদেশের বর্তমান ক্রান্তিকালে, একটি বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ যখন অঙ্গীকারবদ্ধ ও সচেষ্ট, তখন অর্থনৈতিক বিজয় বিষয়টিও আমাদের জন্যে গুরুত্বপূর্ণ—বিশেষত এবারের বিজয় দিবসে। সেখানে প্রাসঙ্গিক একটি প্রশ্ন হলো এই অর্থনৈতিক বিজয় লাভের অন্তরায়গুলো কী।
গত বছরের পট পরিবর্তনের সময়ে বিভিন্ন অঙ্গনে দেশের অর্থনীতি অত্যন্ত নাজুক অবস্থায় ছিল। প্রাপ্ত সকল তথ্য-উপাত্তই অর্থনীতির নানান দুর্বলতার দিকেই অঙ্গুলি নির্দেশ করছিল। এটা খুব পরিষ্কার ছিল যে, বাংলাদেশ অর্থনীতি একটি সঙ্কটের মধ্যে ছিল। গত বারো মাসে কিছু কিছু উন্নতি পরিলক্ষিত হয়েছে। যেমন, বৈদেশিক মুদ্রা মজুত এবং বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় হার স্থিতিশীল হয়েছে, ব্যাংকিং খাতের কিছু কিছু সমস্যার সমাধান হয়েছে, বিদেশ থেকে শ্রমিকদের পাঠানো অর্থের পরিমাণ বেড়েছে।
এসব সত্ত্বেও নানান অর্থনৈতিক অন্তরায় এখনও বিদ্যমান। যেমন, মূল্য পরিস্থিতিতে কিছুটা উন্নতি দেখা গেছে; কিন্তু দেশের মূল্যস্ফীতি এখনো খুব বেশি। বাজারে চালের দাম এখনো কমেনি। ফলে সাধারণ মানুষের জীবনে উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপ এখনো বিরাজমান। তারা এখনো স্বস্তির মুখ দেখতে পাচ্ছে না। প্রায় ৩০ লাখের মতো মানুষ কর্মহীন। অর্থনীতিতে দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগ প্রত্যাশিত হারে বাড়েনি; ৩ দশমিক ৫ হারে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার এখনো খুব শ্লথ। আশঙ্কা করা হচ্ছে, আরও প্রায় ৬ কোটি ২০ লাখ মানুষ দারিদ্র্য ঝুঁকিতে আছে।
প্রশ্ন হচ্ছে, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ অগ্রযাত্রায় কী কী অন্তরায় আমাদের মোকাবিলা করতে হতে পারে?
তিন রকমের অন্তরায় বাংলাদেশের ভবিষ্যত যাত্রাপথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে—রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক। বাংলাদেশ অর্থনীতির ভবিষ্যৎ অন্তরায়গুলোকে বিচ্ছিন্নভাবে দেখলে চলবে না, বরং তারা দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক চালচিত্রের সঙ্গে জড়িত। বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা একটি বড় সমস্যা, যা দেশের অর্থনীতির ওপর বিরাট একটা প্রভাব ফেলবে।
রাজনৈতিক অঙ্গনে নানান বিষয় নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে--সংবিধান সংস্কার, জনপ্রশাসন কাঠামোর সংস্কার, রাজনৈতিক মতৈক্য, এবং সর্বোপরি, নির্বাচন ও নির্বাচনের সময়কাল। তিনটি বিশেষ পথ ধরে এ সব রাজনৈতিক অনিশ্চয়তাগুলো দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও প্রবৃদ্ধিকে প্রভাবিত করছে। প্রথমত, এ সব রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে দেশি বা বিদেশী কোনোরকমের বিনিয়োগই প্রত্যাশিত হারে বাংলাদেশ অর্থনীতিতে আসছে না। বিনিয়োগের শ্লথতা দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করছে, যার ফলে দেশে কর্মহীনতা বাড়ছে, দেশের প্রবৃদ্ধি সম্ভাবনা ব্যাহত হচ্ছে।
দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে আমাদের বাণিজ্য অংশীজনেরা ভবিষ্যত সম্পর্কে নিশ্চিত নয় এবং সে কারণে বাংলাদেশের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি বাণিজ্য চুক্তি করতে ইতস্তত করছে। যেমন, তৈরি পোশাকখাতে বৈদেশিক চাহিদা প্রত্যাশিত হারে তরান্বিত হয়নি।
তৃতীয়ত, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে নানা মহলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দক্ষতা ও কার্যকারিতা সম্পর্কে নানান প্রশ্নের জন্ম হয়েছে। এ জাতীয় জনদৃষ্টিভঙ্গি একটি নাজুক অর্থনীতির উত্তরণের পক্ষে শুভ নয়।
সামাজিক অঙ্গনে বাংলাদেশ অর্থনীতি নানান অন্তরায়ের সম্মুখীন। সমাজে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, সার্বিক একটি নিরাপত্তাহীনতার উপলব্ধি ও দুর্নীতির বিস্তার ব্যবসা-বাণিজ্যকে শঙ্কিত করছে; এ কারণে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো কিংবা ব্যবসায়ীরা নিরাপদ বোধ করছেন না। এ অবস্থায় উৎপাদন, বাণিজ্য কিংবা সেবা প্রদানের মতো কাজ প্রত্যাশিত উন্নতি করতে পারে না।
সেই সঙ্গে আমাদের সমাজে ‘মব সংস্কৃতি’ ব্যতিক্রম নয়, নিয়মে পরিণত হয়েছে। ফলে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য অঙ্গণেও সংঘাত ও সহিংসতার অনুপ্রবেশ ঘটেছে। দেশের ব্যবসায়ীগোষ্ঠী বিভিন্ন গ্যাং, রাজনৈতিক গোষ্ঠীর বেপরোয়া চাঁদাবাজি, অর্থদাবি ও নিয়মবহির্ভূত সুবিধার বেআইনি দাবির শিকার হচ্ছেন। এ সব কিছু ব্যবসার বিস্তারকে অবরুদ্ধ করে।
যেকোনো ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাস্তা অবরোধ, যত্রতত্র সমাবেশ, আন্দোলন এবং সেই সঙ্গে সংঘাত, সহিংসতা ও সংঘর্ষ নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। এ জাতীয় কর্মকাণ্ড পরিবহন ও যাতায়াত ব্যবস্থাকে বিপর্যস্ত করে, দেশের দৈনন্দিন অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে ব্যাহত করে। দেশের বর্তমান সামাজিক অস্থিরতা ও অস্থিতিশীলতা বাংলাদেশ অর্থনীতির ভবিষ্যত অগ্রযাত্রায় বিরাট একটি অন্তরায়।
আগামী দিনগুলোতে বাংলাদেশ যেসব অর্থনৈতিক অন্তরায়ের সন্মুখীন হবে সেসবের কিছু দেশজ, কিছু বৈশ্বিক। দেশজ অঙ্গনে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা একটি বিরাট সমস্যা হিসেবে অব্যাহত থাকবে। শ্লথ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে অপর্যাপ্ত বিনিয়োগ ও বিস্তৃত কর্মহীনতা দেশের অর্থনীতিকে দুর্বল করতে থাকবে। দেশের কৃষি ও শিল্প উৎপাদন এখনো প্রার্থিত স্তরে পৌঁছয়নি। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সঙ্কট ও সামাজিক অস্থিরতা এই উৎপাদন স্তরকে আরও বিপর্যস্ত করতে পারে। উচ্চ মূল্যস্ফীতির নেতিবাচক প্রভাব অব্যাহত থাকবে বলে মনে হয়। সেখানে জনগণ এখনো কোনো স্বস্তির চিহ্ন দেখতে পাচ্ছে না, যদিও উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন, বর্তমান মূল্যস্ফীতির হার সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। তাঁরা আরও আশা করছেন যে আগামী মাসের মধ্যে মূল্যস্ফীতি কমে আসবে।
দারিদ্র্যের বিস্তার ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর নাজুকতা আগামী দিনগুলোতে বাংলাদেশ অর্থনীতির জন্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা হিসেবে দেখা দিতে পারে। সামষ্টিক পর্যায়ে বাংলাদেশে দারিদ্র্যের আপাতন গত তিন বছরে ১৮ শতাংশ থেকে ২১ শতাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশের ৩ কোটি ৬০ লাখ লোক দারিদ্র্য সীমার নীচে বসবাস করে। আরও ৬ কোটি ২০ লাখ মানুষ দারিদ্র্য ফাঁদে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
ব্যাষ্টিক পর্যায়ে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত থেকে দেশে দারিদ্র্যের বিস্তার ও নাজুকতার গভীরতা সম্পর্কে একটি ধারণা করা যায়। যেমন, নিম্ন আয়ের মানুষদের ৮৮ শতাংশ মানুষ দুবেলা ভাত খেতে পারে না। তারা একবেলা পাউরুটি কিংবা বিস্কুট খেয়ে কাটিয়ে দেয়। এ সব জনগোষ্ঠীর মধ্যে যাদের মাসিক আয় ১০ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকার মধ্যে, তাঁদের তিন-পঞ্চমাংশ মানুষ আজকাল সকালের নাস্তা খান না। কারণ সেটা খাওয়ার মতো সামর্থ্য তাঁদের নেই। এ প্রবণতা চলতে থাকলে পুষ্টিহীনতা একটি মানব উন্নয়ন সমস্যা হিসবে দেখা দিতে পারে, বিশেষত শিশুদের মধ্যে।
দেশে অসমতা উর্ধমুখী। বৈষম্য কেবল আয় ও সম্পদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বৈষম্য আজ সুযোগের মধ্যে বিস্তৃত। এ সব সুযোগের মধ্যে আছে শিক্ষার সুযোগ, স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তিতে অভিগমনের সুযোগ। আগামী দিনগুলোতে বাংলাদেশি সমাজে সার্বিক অসমতার অন্যতম চালিকা শক্তি হবে সুযোগের বৈষম্য।
যদিও দেশের ব্যাংকিং খাতে কিছু কিছু উন্নতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। যেমন বিধি-নিষেধের যথাযথ প্রয়োগ, অর্থ-পাচার বন্ধ ইত্যাদি। কিন্তু ব্যাংকের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে ব্যাংকিং শৃঙ্খলার প্রয়োগ এখনো অর্জিত হয়নি। কু-ঋণ, ঋণের অপর্যাপ্ততা, অদক্ষতা ও অকার্যকারিতা, দুর্বল ব্যবস্থাপনা এ খাতে সমস্যা হিসবে এখনো বিরাজ করছে।
বৈদেশিক মুদ্রার মজুত একটি সু-অবস্থানে আছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এটা কি অধিক পরিমাণে বৈদেশিক ঋণ বাংলাদেশ অর্থনীতিতে অনুপ্রবেশ করেছে বলে, না কি বৈদেশিক খাতে কাঠামোগত উন্নতির ফলে? আগামী দিনগুলোতে সরকারি ঋণ একটি সমস্যা হিসেবে আবির্ভূত হবে।
বর্তমান অর্থবছরের প্রথমার্ধে সরকারি ঋণ ৩ শতাংশ বেড়ে গেছে। গত ৩ বছরে বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে গেছে—৫ লাখ কোটি টাকা থেকে ৯ লাখ কোটি টাকায়। বর্তমান বছরের প্রথম তিন মাসে বেসরকরি খাতের বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ৪৫ কোটি ডলার বেড়ে গেছে। বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের অতিরিক্ত সময় শিগগিরই উতরে যাবে। তখন ঋণ পরিশোধের চাপ অর্থ ব্যবস্থায় টের পাওয়া যাবে। আশঙ্কা করা হচ্ছে ২০২৮ সালের অর্থবছর নাগাদ সরকারের ঋণভার ২৮ লাখ কোটি টাকায় পৌঁছুতে পারে।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সমস্যা বাংলাদেশ অর্থনীতির একটি সমস্যা হিসেবে বিরাজ করবে। একদিকে উচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় একটি সমস্যা, অন্যদিকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে দেয় ভর্তুকিও একটি ভাবনা। প্রতিযোগিতামূলক প্রক্রিয়া বাদ দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন চুক্তি সম্পাদন এবং জ্বালানি উৎপাদনে আমদানিকৃত উপকরণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতার ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যায়।
জ্বালানী খাতে যথাযথ সমন্বয়ের অনুপস্থিতি ও টাকার অবমূল্যায়ন বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় আরও বাড়িয়ে দেয়। জ্বালানি খাতে যে বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি দেওয়া হয়, তার বেশির ভাগই ভোগ করেন সমাজের ধনাঢ্য ও সম্পদশালী অংশ। আমাদের জ্বালানি খাতে দেয় ভর্তুকির ৫৪ শতাংশই যায় আমাদের দেশের ৪০ শতাংশ সবচেয়ে সম্পদশালী গোষ্ঠীর কাছে।
আগামী দিনগুলোতে রাজস্ব আদায়ের শ্লথতা বাংলাদেশের জন্যে একটি উন্নয়ন সমস্যা হিসবে দেখা দিতে পারে। ২০২৪-২৫ সালের অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি ছিল ১ লক্ষ কোটি টাকা। এই ঘাটতির বেশ কিছু কারণ রয়েছে। যেমন, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের শ্লথতা, বার্ষিক উন্নয়ন পরিকল্পনার ছাঁটাই এবং কিছুদিন ধরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ধর্মঘট ও কর্মবিরতি।
অনেক বিশেষজ্ঞ অবশ্য মনে করেন, রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রাই বাস্তবসম্মত ছিল না। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, এ সব প্রবণতার কিছু কিছু আগামী দিনগুলোতেও অব্যাহত থাকবে। সুতরাং রাজস্ব আদায়ের সমস্যাগুলোও আগামী সময়ে দেখা যাবে। এ ছাড়া এখনও বাংলাদেশের রাজস্ব আহরণ আয়করের মতো প্রত্যক্ষ করের পরিবর্তে মূল্য সংযোজন করের মতো অপ্রত্যক্ষ করের ওপরে বেশি নির্ভর করে। প্রত্যক্ষ করের মাধ্যমে অধিকতর রাজস্ব আহরণ সম্পর্কে আন্তর্জাতিক মুদ্রা ভান্ডারের শর্তও সরকারের ওপরে চাপ সৃষ্টি করবে।
বৈদেশিক খাতে বাংলাদেশ অর্থনীতি তিনটি বিষয়ে চাপের সন্মুখীন হবে। প্রথমত, এ বছর ও আগামী বছরও বৈশ্বিক অর্থনীতি একটি প্রবৃদ্ধি-শ্লথতায় ভুগবে। এর নেতিবাচক প্রভাব বাংলাদেশ অর্থনীতি এড়াতে পারবে না। সেই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক-লড়াইয়ের কারণে উন্নত বিশ্বে বাংলাদেশের রপ্তানি ব্যাহত হবে। এ সব শুল্কের মোকাবিলা বাংলাদেশকে করতে হবে। দ্বিতীয়ত, কিছুদিনের মধ্যেই বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের পর্যায়ে উন্নীত হবে। এই উত্তরণের ফলে বাংলাদেশ বৈশ্বিক অর্থনীতিতে কিছু সুযোগ বাংলাদেশ হারাবে—যেমন, স্বল্প বা শূন্য শুল্কে রপ্তানি সুবিধা, অনুদান সুবিধা ইত্যাদি। উন্নয়নশীল দেশ পর্যায়ে উন্নীত হলে বাংলাদেশ এ সব সুবিধা পাবে না। আর তাই, উত্তরণ-পরবর্তীকালে উত্থিত বিষয়গুলোকেও বাংলাদেশকে মোকাবিলা করতে হবে। তৃতীয়ত, বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের যুদ্ধ ও সংঘাতের প্রভাবও বাংলাদেশ অর্থনীতিতে পড়বে।
আগামী দিনগুলোতে বাংলাদেশ অর্থনীতি অভ্যন্তরীণ জটিলতাগুলো অব্যাহত থাকবে। দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক জটিলতা এ সব অর্থনৈতিক সমস্যাকে আরও গভীর করে তুলবে। সেই সঙ্গে থাকবে নানান বৈশ্বিক সঙ্কট। বাংলাদেশ অর্থনীতির একটি বড় লক্ষ্য হবে সেই সব জটিলতা ও সঙ্কট কাটিয়ে একটি বৈষম্যবিহীন মানব-উন্নয়নমুখী অর্থনৈতিক পথযাত্রা।
লেখক: ভূতপূর্ব পরিচালক, মানব উন্নয়ন প্রতিবেদন দপ্তর ও দারিদ্র্যদূরীকরণ বিভাগ, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি, নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র।