গতকাল থেকে ফেসবুকে সবাই স্বপ্নীলের বন্ধু হতে চায়। কে এই স্বপ্নীল? কেন সবাই স্বপ্নীলের বন্ধু হতে চাচ্ছে? এসব প্রশ্ন কি আপনাকে দিশেহারা করে তুলছে? তাহলে পড়ুন এই লেখাটি।
কে এম রাকিব

শিবরাম চক্রবর্তী সারাজীবন নির্মল হাস্যরস করে গেছেন। তবে শেষ বয়সে বন্ধু বিষয়ে মন খারাপ করা এক পিস ফিলসফিও তিনি দিয়া গেছেন। ঈশ্বর পৃথিবী ভালোবাসা নামের বইয়ে শিবরাম লিখছেন:
বন্ধু পাওয়া যায় সেই ছেলেবেলায় স্কুল-কলেজে। প্রাণের বন্ধু। তারপর আর না।
‘আর না? সারাজীবনে আর না?’
জীবনজুড়ে যারা থাকে তারা কেউ কারো বন্ধু নয়। তারা দু’রকমের। এনিমি আর নন-এনিমি। নন-এনিমিদেরই বন্ধু বলে ধরতে হয়।
এই ঘনঘোর পুজিবাদে, প্রফিট ম্যাক্সিমাইজিংয়ের জগতে, চক্রবর্তী মশায়ের কথারে ভুল বলাও কঠিন। আমরা হয়তো আসলেই বাস করি এনিমি আর নন-এনিমির দুনিয়ায়। অথচ গতকাল থেকে ফেসবুকে দেখতেছি, সবাই বন্ধু হইতে চায়। আমার বন্ধু হইতে চায় না। ডিয়ার রিডার, আপনারও বন্ধু হইতে চায় না, স্যরি; সবাই বন্ধু হইতে চায় স্বপ্নীলের।
কেবল স্বপ্নীলের বন্ধু হওয়াতেই সীমাবদ্ধ না। এক ছেলে ফেসবুকে পোস্ট দিছে যে, আমরা যারা স্বপ্নীলের বন্ধু হতে চাই, আসেন, আমরা একটা গ্রুপ খুলি। সেই পোস্টও ভাইরাল। মানে পোস্টদাতারও সাথে এখন অনেকে বন্ধু হইতে চাইবে। ভাইরালিটির খেলাই এমন।
কিন্তু কে এই স্বপ্নীল?
আরিফা বেগমের ছেলে।
আরিফা বেগম কে?
একজন ভ্লগার।
আরিফা বেগম লাইফস্টাইল ভ্লগ করেন। মুলত রান্নাবান্নার ভিডিওই তিনি বানান। আরিফা বেগমের ফেসবুকের কাভার ফটোতে তার হাজবেন্ড ও সঙ্গে দুই ছেলের ছবি আছে। দুই ছেলের একজন স্বপ্নীল। এই মূহূর্তে আরিফা বেগমের ফেইসবুক পেইজে ফলোয়ার সংখ্যা ৬৬ হাজার। ২ দিন আগেও সংখ্যাটা ২০ হাজারের নিচে ছিল। গতকাল থেকে হিসাব বদলে গেছে। ২০ সেপ্টেম্বর আপলোড করা ৩৫ সেকেন্ডের ছোট্ট একটা ছোট্ট ভিডিও গতকাল (২৭ সেপ্টেম্বর) থেকে ভাইরাল হইতে শুরু করে।
ভিডিওতে আমরা দেখি, টেবিল ভর্তি হরেক পদের খাবার সাজানো। আরিফা বেগম সেগুলার কয়েকটা আইটেম দেখায়ে বলেন:
‘আজকে স্বপ্নীলের ফ্রেন্ডরা আসছে। তো, আমি ওদের জন্য মোটামুটি একটু খাবারের আয়োজন করেছি। কিছু বার্গার বানিয়েছি, এটা…আছে আলুর দম। এটা কালাভূনা, এটা কেক করেছি। এটা কাস্টার্ড, এটা খুব মজার সেমাইয়ের ডেজার্ট। এখানে আছে সালাদ। এইটা আছে হানি চিকেন। এখানে আছে ঘরে বানানো সমুচা। (বার্গার দেখায়ে) এইটাও ঘরে তৈরি, শুধু বানটা কেনা। এই মোটামুটি একটু স্বপ্নীলের জন্য আয়োজন করেছি। কারণ অনেক দিন পরে স্বপ্নীলের ফ্রেন্ডরা আসছে। এজন্য হালকা কিছু আয়োজন…’
ভাইরাল হওয়ার পর, প্রচুর মানুষ এখন স্বপ্নীলের বন্ধু হতে চায়, বান্ধবী হতে চায়। অনেকে স্বপ্নীলের আম্মুরও বন্ধু হইতে চায়।
কেন চায়?
সহজ উত্তর: স্বপ্নীলের মায়ের হাতের খাবার খাওয়ার লোভে। কিন্তু লাখ লাখ মানুষ, বন্ধু হইতে চায় বইলা যারা ভিডিও শেয়ার করতেছে, বা পোস্ট দিতেছে তারা জানে যে স্বপ্নে সম্ভব হইলেও, বাস্তবে স্বপ্নীলের বন্ধু হয় কয়েকজনমাত্র। তারা মজা করতে করতেই স্বপ্নীলের বন্ধু হইতে চাইতেছে।
প্রশ্ন হইতেছে, ভিডিওটা ভাইরাল হইলো কেন?
যেকোনো ভাইরাল কন্টেন্টের কিছু কমন ফিচার থাকে। তীব্র ইমোশন, সার্প্রাইজ, সিলি ও উইয়ার্ড কিছু, কিছু বিগ একাউন্টের শেয়ার করা, শেয়ারিবিলিটি, রিলেটেবিলিটি— এইসব ফিচারের উপস্থিতি দিয়া ভাইরালিটি ব্যাখ্যা করা হয়। তবে এগুলা সবই ভাইরাল হয়া যাওয়ার পরে সেগুলার কমন প্যাটার্ন বিশ্লেষণ করে বানানো কথাবার্তা। বাস্তবে, ভাইরালিটি প্রেডিক্ট করা যায় না।
অবশ্য, সোশ্যাল মিডিয়ারে স্পেক্টাকল আর সামষ্টিক বাসনার আয়না হিসেবে দেখলে, এই ঘটনার এক ধরণের হাইপোথিসিস হয়তো দেওয়া যায়। একটানা কতক্ষণ আর সহিংসতার খবর মানুষ নিতে করতে পারে, বলেন! নেট নাগরিকেরা পলিটিকাল ক্যাচালের দমবন্ধ আবহাওয়ায় হাঁসফাঁস করে। এস্কেইপ চায়। রিলিফ খোজে। একটানা কঠিন রাজনৈতিক, তীব্র ভায়োলেন্সের পর হুটহাট সিলি, মজার বা এবসার্ড জিনিস সেই রিলিফের সুযোগ দেয়। স্বপ্নীলের বন্ধু হইতে চাওয়ার ট্রেন্ডরেও এইভাবে ব্যাখ্যা করা যায়। এই কারণে কিছুদিন পরপরই নানান সিলি জিনিস ভাইরাল হয়। এক্ষেত্রে বলা যায় অনেকদিনপর রিফ্রেশিং একটা হার্মলেস জিনিস ভাইরাল হইলো।
কিন্তু রিলিফের এই ব্যাখ্যা কি আপনার কাছে জুতের মনে হয়?
আমার নিজের কাছেই মনে হয় না।
পাশাপাশি আরেকটা ব্যাখ্যাও দেওয়া যাইতে পারে। সমাজের বড় অংশই আর্থ-সামাজিক দিক দিয়া, স্নপ্নীল না, স্বপ্নীলের মায়ের মতো তাদের মা বা শাশুরিও নাই। বন্ধুত্ব কিছুমাত্রায় হলেও উঁচু ক্লাসে একসেস দেয়। স্বপ্নীলদের লাইফস্টাইলের প্রতি অ-স্বপ্নীলদের ‘হইলেও-হইতে-পারে’-মূলক অ্যাস্পিরেশনও প্রকাশ পেতে পারে। তবে এই ব্যাখ্যাও আমার ঠিক জুতের লাগে না।
মোদ্দাকথা, সবাই কেন ‘স্বপ্নীলের বন্ধু’ হইতে চাইতেছে—অর্থাৎ ‘স্বপ্নীলের বন্ধু’ হইতে চাওয়ার ট্রেন্ডে অংশ নিতেছে— এই প্রশ্নের সন্তোষজনক কোনো ব্যাখ্যা নাই। স্বপ্নীলের বন্ধু হইলে এত রকম মজার খাবার খাওয়া যাবে এজন্য চায়। কিন্তু ঠান্ডা মাথায় ভাবলেই বুঝবেন, এইটা ভাইরালিটির কারণ না। তাহলে তো ফুড ব্লগ বা দামী রেস্টোরার ফেসবুক পেইজের কন্টেন্ট ভাইরাল হইতো প্রতিদিন!
আমরা যেমন জানি না, হঠাৎ সবাই কেন হয়ে ওঠে মাওলানা মোস্তাক ফয়েজী আর বলে, ‘মুরুব্বি, মুরুব্বি! উহু উহু।’ রাষ্ট্রপতি চুপ্পুর মতো বলে, ‘নাইস এন্ড এট্রাক্টিভ’। অথবা সকলে কেন ব্যাথিত বাপ্পারাজ হয়ে জানতে চায়, ‘চাচা, হেনা কোথায়?’ ‘শাহীন, নটীর পোলাকে ধরে’ ফেলতে চাওয়ার এত আগ্রহই বা সবার কেন?
‘সবাই স্বপ্নীলের বন্ধু হইতে চায় কেন?’ —- একই রকম প্রশ্ন; অর্থাৎ ভাইরাল কেন হইতেছে সেই প্রশ্ন।
আমি জানি না, যদিও আমি জানি যে এই প্রশ্নের উত্তর আসলে কেউই জানে না। এ্যালগরিদম নামক লটারিতে সোশাল মিডিয়ায় কে কখন কয় মিনিটের জন্য ভাইরাল তারকা হয়ে যাবে আমরা জানি না। যদি কারো জানাও থাকতো—আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন— সে আপনারে বলতো না। এর লেখাটাও লেখা হইতো না।
আপাতত আমি বরং, স্বপ্নীলের বন্ধু হইতে চাই।
নতুন কোনো ভাইরাল ‘স্বপ্নীল’ আইসা নিউজফিড আক্রান্ত করার আগ পর্যন্ত, আমিও স্বপ্নীলের বন্ধু হইতে চাই।

শিবরাম চক্রবর্তী সারাজীবন নির্মল হাস্যরস করে গেছেন। তবে শেষ বয়সে বন্ধু বিষয়ে মন খারাপ করা এক পিস ফিলসফিও তিনি দিয়া গেছেন। ঈশ্বর পৃথিবী ভালোবাসা নামের বইয়ে শিবরাম লিখছেন:
বন্ধু পাওয়া যায় সেই ছেলেবেলায় স্কুল-কলেজে। প্রাণের বন্ধু। তারপর আর না।
‘আর না? সারাজীবনে আর না?’
জীবনজুড়ে যারা থাকে তারা কেউ কারো বন্ধু নয়। তারা দু’রকমের। এনিমি আর নন-এনিমি। নন-এনিমিদেরই বন্ধু বলে ধরতে হয়।
এই ঘনঘোর পুজিবাদে, প্রফিট ম্যাক্সিমাইজিংয়ের জগতে, চক্রবর্তী মশায়ের কথারে ভুল বলাও কঠিন। আমরা হয়তো আসলেই বাস করি এনিমি আর নন-এনিমির দুনিয়ায়। অথচ গতকাল থেকে ফেসবুকে দেখতেছি, সবাই বন্ধু হইতে চায়। আমার বন্ধু হইতে চায় না। ডিয়ার রিডার, আপনারও বন্ধু হইতে চায় না, স্যরি; সবাই বন্ধু হইতে চায় স্বপ্নীলের।
কেবল স্বপ্নীলের বন্ধু হওয়াতেই সীমাবদ্ধ না। এক ছেলে ফেসবুকে পোস্ট দিছে যে, আমরা যারা স্বপ্নীলের বন্ধু হতে চাই, আসেন, আমরা একটা গ্রুপ খুলি। সেই পোস্টও ভাইরাল। মানে পোস্টদাতারও সাথে এখন অনেকে বন্ধু হইতে চাইবে। ভাইরালিটির খেলাই এমন।
কিন্তু কে এই স্বপ্নীল?
আরিফা বেগমের ছেলে।
আরিফা বেগম কে?
একজন ভ্লগার।
আরিফা বেগম লাইফস্টাইল ভ্লগ করেন। মুলত রান্নাবান্নার ভিডিওই তিনি বানান। আরিফা বেগমের ফেসবুকের কাভার ফটোতে তার হাজবেন্ড ও সঙ্গে দুই ছেলের ছবি আছে। দুই ছেলের একজন স্বপ্নীল। এই মূহূর্তে আরিফা বেগমের ফেইসবুক পেইজে ফলোয়ার সংখ্যা ৬৬ হাজার। ২ দিন আগেও সংখ্যাটা ২০ হাজারের নিচে ছিল। গতকাল থেকে হিসাব বদলে গেছে। ২০ সেপ্টেম্বর আপলোড করা ৩৫ সেকেন্ডের ছোট্ট একটা ছোট্ট ভিডিও গতকাল (২৭ সেপ্টেম্বর) থেকে ভাইরাল হইতে শুরু করে।
ভিডিওতে আমরা দেখি, টেবিল ভর্তি হরেক পদের খাবার সাজানো। আরিফা বেগম সেগুলার কয়েকটা আইটেম দেখায়ে বলেন:
‘আজকে স্বপ্নীলের ফ্রেন্ডরা আসছে। তো, আমি ওদের জন্য মোটামুটি একটু খাবারের আয়োজন করেছি। কিছু বার্গার বানিয়েছি, এটা…আছে আলুর দম। এটা কালাভূনা, এটা কেক করেছি। এটা কাস্টার্ড, এটা খুব মজার সেমাইয়ের ডেজার্ট। এখানে আছে সালাদ। এইটা আছে হানি চিকেন। এখানে আছে ঘরে বানানো সমুচা। (বার্গার দেখায়ে) এইটাও ঘরে তৈরি, শুধু বানটা কেনা। এই মোটামুটি একটু স্বপ্নীলের জন্য আয়োজন করেছি। কারণ অনেক দিন পরে স্বপ্নীলের ফ্রেন্ডরা আসছে। এজন্য হালকা কিছু আয়োজন…’
ভাইরাল হওয়ার পর, প্রচুর মানুষ এখন স্বপ্নীলের বন্ধু হতে চায়, বান্ধবী হতে চায়। অনেকে স্বপ্নীলের আম্মুরও বন্ধু হইতে চায়।
কেন চায়?
সহজ উত্তর: স্বপ্নীলের মায়ের হাতের খাবার খাওয়ার লোভে। কিন্তু লাখ লাখ মানুষ, বন্ধু হইতে চায় বইলা যারা ভিডিও শেয়ার করতেছে, বা পোস্ট দিতেছে তারা জানে যে স্বপ্নে সম্ভব হইলেও, বাস্তবে স্বপ্নীলের বন্ধু হয় কয়েকজনমাত্র। তারা মজা করতে করতেই স্বপ্নীলের বন্ধু হইতে চাইতেছে।
প্রশ্ন হইতেছে, ভিডিওটা ভাইরাল হইলো কেন?
যেকোনো ভাইরাল কন্টেন্টের কিছু কমন ফিচার থাকে। তীব্র ইমোশন, সার্প্রাইজ, সিলি ও উইয়ার্ড কিছু, কিছু বিগ একাউন্টের শেয়ার করা, শেয়ারিবিলিটি, রিলেটেবিলিটি— এইসব ফিচারের উপস্থিতি দিয়া ভাইরালিটি ব্যাখ্যা করা হয়। তবে এগুলা সবই ভাইরাল হয়া যাওয়ার পরে সেগুলার কমন প্যাটার্ন বিশ্লেষণ করে বানানো কথাবার্তা। বাস্তবে, ভাইরালিটি প্রেডিক্ট করা যায় না।
অবশ্য, সোশ্যাল মিডিয়ারে স্পেক্টাকল আর সামষ্টিক বাসনার আয়না হিসেবে দেখলে, এই ঘটনার এক ধরণের হাইপোথিসিস হয়তো দেওয়া যায়। একটানা কতক্ষণ আর সহিংসতার খবর মানুষ নিতে করতে পারে, বলেন! নেট নাগরিকেরা পলিটিকাল ক্যাচালের দমবন্ধ আবহাওয়ায় হাঁসফাঁস করে। এস্কেইপ চায়। রিলিফ খোজে। একটানা কঠিন রাজনৈতিক, তীব্র ভায়োলেন্সের পর হুটহাট সিলি, মজার বা এবসার্ড জিনিস সেই রিলিফের সুযোগ দেয়। স্বপ্নীলের বন্ধু হইতে চাওয়ার ট্রেন্ডরেও এইভাবে ব্যাখ্যা করা যায়। এই কারণে কিছুদিন পরপরই নানান সিলি জিনিস ভাইরাল হয়। এক্ষেত্রে বলা যায় অনেকদিনপর রিফ্রেশিং একটা হার্মলেস জিনিস ভাইরাল হইলো।
কিন্তু রিলিফের এই ব্যাখ্যা কি আপনার কাছে জুতের মনে হয়?
আমার নিজের কাছেই মনে হয় না।
পাশাপাশি আরেকটা ব্যাখ্যাও দেওয়া যাইতে পারে। সমাজের বড় অংশই আর্থ-সামাজিক দিক দিয়া, স্নপ্নীল না, স্বপ্নীলের মায়ের মতো তাদের মা বা শাশুরিও নাই। বন্ধুত্ব কিছুমাত্রায় হলেও উঁচু ক্লাসে একসেস দেয়। স্বপ্নীলদের লাইফস্টাইলের প্রতি অ-স্বপ্নীলদের ‘হইলেও-হইতে-পারে’-মূলক অ্যাস্পিরেশনও প্রকাশ পেতে পারে। তবে এই ব্যাখ্যাও আমার ঠিক জুতের লাগে না।
মোদ্দাকথা, সবাই কেন ‘স্বপ্নীলের বন্ধু’ হইতে চাইতেছে—অর্থাৎ ‘স্বপ্নীলের বন্ধু’ হইতে চাওয়ার ট্রেন্ডে অংশ নিতেছে— এই প্রশ্নের সন্তোষজনক কোনো ব্যাখ্যা নাই। স্বপ্নীলের বন্ধু হইলে এত রকম মজার খাবার খাওয়া যাবে এজন্য চায়। কিন্তু ঠান্ডা মাথায় ভাবলেই বুঝবেন, এইটা ভাইরালিটির কারণ না। তাহলে তো ফুড ব্লগ বা দামী রেস্টোরার ফেসবুক পেইজের কন্টেন্ট ভাইরাল হইতো প্রতিদিন!
আমরা যেমন জানি না, হঠাৎ সবাই কেন হয়ে ওঠে মাওলানা মোস্তাক ফয়েজী আর বলে, ‘মুরুব্বি, মুরুব্বি! উহু উহু।’ রাষ্ট্রপতি চুপ্পুর মতো বলে, ‘নাইস এন্ড এট্রাক্টিভ’। অথবা সকলে কেন ব্যাথিত বাপ্পারাজ হয়ে জানতে চায়, ‘চাচা, হেনা কোথায়?’ ‘শাহীন, নটীর পোলাকে ধরে’ ফেলতে চাওয়ার এত আগ্রহই বা সবার কেন?
‘সবাই স্বপ্নীলের বন্ধু হইতে চায় কেন?’ —- একই রকম প্রশ্ন; অর্থাৎ ভাইরাল কেন হইতেছে সেই প্রশ্ন।
আমি জানি না, যদিও আমি জানি যে এই প্রশ্নের উত্তর আসলে কেউই জানে না। এ্যালগরিদম নামক লটারিতে সোশাল মিডিয়ায় কে কখন কয় মিনিটের জন্য ভাইরাল তারকা হয়ে যাবে আমরা জানি না। যদি কারো জানাও থাকতো—আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন— সে আপনারে বলতো না। এর লেখাটাও লেখা হইতো না।
আপাতত আমি বরং, স্বপ্নীলের বন্ধু হইতে চাই।
নতুন কোনো ভাইরাল ‘স্বপ্নীল’ আইসা নিউজফিড আক্রান্ত করার আগ পর্যন্ত, আমিও স্বপ্নীলের বন্ধু হইতে চাই।

আইনের দেবী থেমিসের চোখে কালো কাপড় বাঁধা থাকে। এর কেতাবি অর্থ, বিচার হবে অন্ধ বা নিরপেক্ষ; আবেগ, পরিচয় বা দৃশ্যমান চাকচিক্য সেখানে প্রভাব ফেলবে না। কিন্তু আমার মনে হয় ঘটনা অন্য। থেমিস সম্ভবত লজ্জায় চোখ বাইন্ধা রাখছেন।
৭ দিন আগে
টিকটক, রিলস, ইউটিউব কিংবা ইউটিউব শর্টস– সর্বত্র এখন ভোজপুরি গানের আধিপত্য। বিহার, পূর্ব-উত্তর প্রদেশ ও সংলগ্ন অঞ্চলের ভাষার এই গান কীভাবে বিশ্ব মাতাচ্ছে, দেখাচ্ছে ভাইরালের ভেল্কি? এই প্রশ্নের বিস্তারিত শুলুকসন্ধানের প্রয়াস এই লেখা।
১১ দিন আগে
দেশের ডিজিটাল স্পেসজুড়ে এখন চলছে বটের রাজত্ব। বিটিভির ভাষায় বললে বট আইডির বাম্পার ফলন। ১৬ কোটি মানুষের ৩২ কোটি বট। মহা সমারোহে চলছে ‘একটি মানুষ একটি বট আইডি’ প্রকল্প। চলুন জানি, নানা ধরণের বটের কর্মকান্ড; ঘুরে আসি বাংলার ডিজিটাল বটমূল।
১২ দিন আগে
শূন্য দশক বাংলা মিউজিকের একটা ক্রান্তিকাল। নিউজিকে নতুন প্রযুক্তির আবির্ভাব এবং ট্রাডিশনাল মিউজিকের নতুন উপস্থাপনের দশক। শিরিনের বিখ্যাত গান পাঞ্জাবিওয়ালাকে কেন্দ্র করে, শূন্য দশকের ফোক ফিউশন নিয়ে এই লেখা।
১৭ দিন আগে