দীর্ঘ অপেক্ষা ও নানা জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) দ্বাদশ সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ বুধবার (১৭ ডিসেম্বর)। সকাল ৮টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় স্টেডিয়ামে মূল অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে।
১৯৫৩ সালে প্রতিষ্ঠার পর দীর্ঘ ৭২ বছরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে মাত্র ১১টি সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সর্বশেষ সমাবর্তন হয় ২০১৯ সালে। তবে এই দ্বাদশ সমাবর্তনের তারিখ একাধিকবার পেছানো এবং সময় পরিবর্তন হওয়ায় অসন্তোষের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল এই বিষয়।
এবারের সমাবর্তনে ২০১৬ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রি অর্জনকারী ১২টি অনুষদের মোট ৫ হাজার ৯৬৯ জন শিক্ষার্থী অংশ নেবেন। এর মধ্যে ৭৯ জনকে পিএইচডি, ১১ জনকে এমফিল এবং ৭৪০ জনকে এমবিবিএস ডিগ্রি প্রদান করা হবে।
সমাবর্তনে সভাপতিত্ব করছেন বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার। সমাবর্তন বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখবেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকছেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
এদিকে সমাবর্তনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বেশ কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনা অনুযায়ী, গ্র্যাজুয়েটদের সমাবর্তনের গাউন ও ক্যাপসহ কোনো সামগ্রী ফেরত দিতে হবে না। নিবন্ধিত গ্র্যাজুয়েটদের ১৭ ডিসেম্বর সকাল ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্টেডিয়ামে নির্ধারিত আসনে উপস্থিত থাকতে হবে।
সমাবর্তনস্থলে প্রবেশের সময় অবশ্যই আইডি কার্ড সঙ্গে রাখতে হবে। সমাবর্তন চলাকালে শুধু নিবন্ধিত গ্র্যাজুয়েটরাই স্টেডিয়ামে প্রবেশ করতে পারবেন। তবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সময় গ্র্যাজুয়েটদের পরিবারের সদস্যদের প্রবেশের সুযোগ থাকবে।
নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষার্থে সমাবেশস্থলের প্রবেশপথে মেটাল ডিটেকটর ও আর্চওয়ের ব্যবস্থা থাকবে। স্টেডিয়ামের পশ্চিম গেট শুধুমাত্র ভিআইপি ও আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে। নিবন্ধিত গ্র্যাজুয়েটদের পূর্ব, উত্তর ও দক্ষিণ গেট ব্যবহার করতে হবে।
নিবন্ধিত গ্র্যাজুয়েটরা ১ম বিজ্ঞান ভবন, ২য় বিজ্ঞান ভবন এবং স্টেডিয়ামের ভেতরের ওয়াশরুমগুলো ব্যবহার করতে পারবেন। নারী গ্র্যাজুয়েটদের জন্য টিএসসিসি সংরক্ষিত থাকবে। এছাড়া স্টেডিয়ামের ভেতরে পূর্ব পাশে ভ্রাম্যমান ওয়াশরুমের ব্যবস্থাও থাকবে।
গ্র্যাজুয়েটদের সহায়তার জন্য স্টেডিয়ামের ভেতরে উত্তর-পূর্ব কোণে একটি এবং বাইরে টিএসসিসি বটতলার পূর্ব পাশে আরেকটি হেল্পডেস্ক স্থাপন করা হয়েছে। এই দুটি হেল্পডেস্ক থেকে একই সঙ্গে ‘লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড’ সেবাও দেওয়া হবে। টিএসসিসির সামনে নিবন্ধিত গ্র্যাজুয়েটদের সঙ্গে আগত শিশুদের জন্য ফ্যামিলি জোন ও কিডস কর্নারের ব্যবস্থাও থাকবে।
সমাবর্তন চলাকালে গ্র্যাজুয়েটদের মোবাইল ফোন সাইলেন্ট মোডে অথবা বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনে গ্র্যাজুয়েটরা তাদের সঙ্গে আনা ব্যাগ হেল্পডেস্কে টোকেনের মাধ্যমে জমা রাখতে পারবেন।
জরুরি চিকিৎসা সেবার প্রয়োজন হলে স্টেডিয়ামের ভেতরে দক্ষিণ-পূর্ব কোণে অবস্থিত চিকিৎসা ডেস্কে যোগাযোগ করতে হবে। প্রয়োজনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টার থেকেও চিকিৎসা সেবা নেওয়া যাবে। সমাবেশস্থলের বাইরে পূর্ব পাশে দুটি অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত থাকবে।
গাড়ি ও কার পার্কিংয়ের জন্য জুবেরী ভবনের মাঠ এবং শহীদ হবিবুর রহমান হলের মাঠ ব্যবহার করার নির্দেশনা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও তা ১৩ জানুয়ারি স্থগিত করা হয়। এর আগে ২০২৩ ও ২০২৪ সালে কয়েক দফা তারিখ ঘোষণা করেও সমাবর্তন স্থগিত হয়।