leadT1ad

এনসিপি থেকে এবার তাজনূভা জাবীনের পদত্যাগ, নির্বাচন না করার ঘোষণা

নির্বাচনী ফান্ডের বিষয়ে সমর্থকদের আশ্বস্ত করে তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের পাঠানো ডোনেশন ফেরত দেব এক এক করে।... প্রত্যেকটা পয়সা ফেরত দেব।’

স্ট্রিম প্রতিবেদক
স্ট্রিম প্রতিবেদক
ঢাকা

তাজনূভা জাবীন। সংগৃহীত ছবি

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. তাসনিম জারার পর এবার পদত্যাগ করেছেন দলটির আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক তাজনূভা জাবীন। পাশাপাশি তিনি আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্তের কথাও জানিয়েছেন। দলের নীতিনির্ধারণী প্রক্রিয়া, জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে জোট গঠনের প্রক্রিয়া এবং অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি এই ঘোষণা দেন।

আজ রোববার দুপুর পৌঁনে ১টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক একাউন্টে দেওয়া এক দীর্ঘ স্ট্যাটাসে তাজনূভা জাবীন এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। সেখানে তিনি অভিযোগ করেন, দলের নীতি ও আদর্শের চেয়ে ‘রাজনৈতিক কৌশল’ ও ‘বিশ্বাসভঙ্গ’ বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ সময়ের ঠিক আগমুহূর্তে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো এবং দলত্যাগের ঘোষণা দিয়ে তিনি লেখেন, ‘আমি আজকে পদত্যাগ করেছি এনসিপি থেকে। অত্যন্ত ভাঙ্গা মন নিয়ে জানাচ্ছি আমি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারছি না।’

নির্বাচনী ফান্ডের বিষয়ে সমর্থকদের আশ্বস্ত করে তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের পাঠানো ডোনেশন ফেরত দেব এক এক করে।... প্রত্যেকটা পয়সা ফেরত দেব।’

তাজনূভা জাবীন জানান, দল ছাড়লেও গণতান্ত্রিক পরিবর্তনের জন্য তাঁর সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, ‘আমার আওয়াজ, দেশের গণতান্ত্রিক পরিবর্তনের জন‍্য কাজ আরো জোরালোভাবে জারি থাকবে।’

জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে এনসিপির জোট গঠনের প্রক্রিয়াটিকে ‘পরিকল্পিত’ উল্লেখ করে তাজনূভা জাবীন লেখেন, ‘আপনারা অনেকে ভাবছেন, হয়তো জামায়াতের সঙ্গে জোটে ঐতিহাসিক কারণ বা নারী বিষয়ের কারণে আমার আপত্তি। এর চেয়েও ভয়ঙ্কর যে কারণ, সেটা হল যে প্রক্রিয়ায় এটা হয়েছে। এটাকে রাজনৈতিক কৌশল, নির্বাচনী জোট ইত্যাদি লেভেল দেওয়া হচ্ছে। আমি বলব এটা পরিকল্পিত। এটাকে সাজিয়ে এই পর্যন্ত আনা হয়েছে।’

তিনি অভিযোগ করেন, ‘পরিস্থিতি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যাতে জোট ছাড়া অন্য কোনো উপায় না থাকে। আর সব অপশনকে ধীরে ধীরে রাজনীতি করে বাদ দেওয়া হয়েছে যাতে জামায়াতের সঙ্গে জোট ছাড়া কোনো উপায় না থাকে। সুনিপুণভাবে এখানে এনে অনেককে জিম্মি করা হয়েছে।’

মনোনয়ন ও আসন সমঝোতা নিয়ে প্রশ্ন

মনোনয়ন প্রক্রিয়া নিয়ে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছেন তাসনুভা। মাত্র ৩০টি আসনের জন্য সমঝোতা করে বাকি প্রার্থীদের বসিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে তিনি অগ্রহণযোগ্য মনে করছেন।

ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘মাত্র কিছুদিন আগে সমারোহে সারা দেশ থেকে মনোনয়ন সংগ্রহের ডাক দিয়ে ১২৫ জনকে মনোনয়ন দিয়ে ৩০ জনের জন‍্য সীট সমঝোতা করে বাকিদের নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না। এই সিদ্ধান্তে সিলমোহর বসানো হয়েছে। বিষয়টা ঠেলতে ঠেলতে একদম শেষ অবধি এনেছে যাতে কেউ স্বতন্ত্র নির্বাচনও করতে না পারে।’

তিনি আরও বলেন, ‘কোন জেনারেল, ইসি মিটিং এর সিদ্ধান্ত এরকম ছিল না জোট হলে বাকি আসনে প্রার্থীকে বসে যেতে হবে। আবার বাকি আসনগুলোতে জামায়াতের হয়ে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা করতে হবে।’

অভ্যন্তরীণ রাজনীতি ও ‘মাইনাস ফর্মুলা’

দলের শীর্ষ নেতাদের মধ্যকার কোন্দল ও একে অপরকে ‘মাইনাস’ করার রাজনীতির কথাও তুলে ধরেন তাজনূভা। তিনি লেখেন, ‘কিন্তু এক শীর্ষ নেতা আরেক শীর্ষ নেতার সঙ্গে যে মাইনাসের রাজনীতি করে, ওখানে সেটা ভয়ঙ্কর। এরা নিজেদের মধ্যে রাজনীতি করতে এত ব‍্যস্ত, এরা কখনো দেশের জন‍্য নতুন একটা মধ‍্যপন্থার বাংলাদেশপন্থী রাজনীতি করতে পারবে না।’

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিট বা চেতনা দলটিতে যথাযথভাবে ধারণ করা হচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন তিনি। তাঁর ভাষায়, ‘জুলাই এর যে স্পিরিট সেটা এনসিপিতে চর্চা করা হয় না, ব‍্যবহার করা হয়।’

Ad 300x250

সম্পর্কিত