বন্ধুর সঙ্গে আলাপ করতে করতে হাঁটা দিলাম। কলাভবনের সামনের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় হাতে এল দুটো লম্বাটে কার্ড। বুকমার্ক। একটিতে এস এম সুলতানের আঁকা ছবি, অন্যটিতে কামরুল হাসানের। হঠাৎ করে মনটা ভালো হয়ে গেল। ভোটের প্রচারণায় এমন সুন্দর জিনিসও হয়!
তাহমীদ চৌধুরী

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার কোনো বিশেষ কারণ ছিল না আমার। মাঝেমধ্যে কোনো কারণ ছাড়াই আমি নানান জায়গায় যাই। শাহবাগের মোড় থেকে আনমনে হাঁটতে হাঁটতে টিএসসির দিকে চলে গেলাম। বিকেলটা সুন্দর। আকাশে মেঘ আছে, আবার মেঘের ফাঁক দিয়ে অদ্ভুত নরম আলো এসে পড়েছে। মনে হচ্ছিলো চা খেতে ভালো লাগবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দাপ্তরিক ভাষায়, ‘একজন বহিরাগত’ হিসেবে টিএসসিতে চায়ের দোকানে বসার প্রস্তুতি নিচ্ছি। এমন সময় প্রায় উড়ন্ত অবস্থায় এক ছেলে এসে আমার হাতে কী একটা ধরিয়ে দিয়ে নিমেষে হাওয়া। তাকিয়ে দেখি, একটা উনো কার্ড। নীল রঙা। তবে খেলার কার্ড নয়, ভোটের কার্ড। এক আপুর ছবি, খুব সুন্দর করে হাসছেন। নিচে নাম আর ব্যালট নম্বর। ব্যাপারটা এতই অদ্ভুত যে আমার একা একাই হাসি পেলো।

চা খাওয়া শেষ, কার্ডটা পকেটে রেখে মধুর ক্যান্টিনের দিকে হাঁটছি। সেখানে এক বন্ধু অপেক্ষা করছে। ডাকসু ভবন আর মধুর মাঝখানে এবার আরেকজন হাতে ধরিয়ে দিল এক ডলারের নোট। আমি অবাক হলাম। ভালো করে তাকিয়ে দেখি, জর্জ ওয়াশিংটনের বদলে এক অচেনা তরুণের মুখ। তিনি আমার দিকে তাকিয়ে যেন বলছেন, ‘দিয়ে দাও একটা ভোট!’ আমার পকেটে তখন বিদেশি মুদ্রা, একটু পর এল ১০ টাকার নোটের মতো দেখতে দেশি মুদ্রাও। সবই অবশ্য নকল।
বন্ধুর সঙ্গে আলাপ করতে করতে হাঁটা দিলাম। কলাভবনের সামনের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় হাতে এলো দুটো লম্বাটে কার্ড। বুকমার্ক। একটিতে এস এম সুলতানের আঁকা ছবি, অন্যটিতে কামরুল হাসানের। হঠাৎ করে মনটা ভালো হয়ে গেলো। ভোটের প্রচারণায় এমন সুন্দর জিনিসও হয়!
তবে সবচেয়ে অদ্ভুত ঘটনাটা ঘটলো হাকিম চত্বরে। ভাজা-পোড়া খেতে গেছি। দোকানের পাশ থেকে বেশ গম্ভীর চেহারার এক ছেলে আমার দিকে এগিয়ে এল। তার হাতে বেশ কিছু সিগারেটের প্যাকেট। আমার দিকে একটা বাড়িয়ে দিলো সে। খানিকটা অপ্রস্তুত হয়ে বললাম, ‘আমি সিগারেট খাই না।’ (এমনিতে টুকুটাক খাই)
ছেলেটা হাসলো। খেয়াল করলাম অদ্ভুত সুন্দর তার হাসি। বললো, ‘ভাই, এটা খাওয়ার জিনিস না। দেখার জিনিস।’
প্যাকেটটা হাতে নিলাম। প্যাকেটের ওপর এক প্রার্থীর ছবি। ব্র্যান্ডের নাম ‘লাকি রাফসান’। আর অন্যপাশে লেখা, ‘সিগারেটের ধোঁয়া থেকে বাঁচতে স্মোকিং জোন নির্মাণ।’ আমি ছেলেটার মুখের দিকে তাকালাম। সে এমনভাবে হাসছে, যেন খুব মজার একটা ধাঁধা দিয়েছে, আর আমি তার সমাধান করতে পারছি না। একই প্যাকেটে বিষ এবং বিষের প্রতিষেধক। আমাদের জীবনটাও কি এমন? কে জানে!
সন্ধ্যা নামার মুখে আমি বাসার দিকে রওনা দিলাম। রিকশায় বসে পকেট থেকে জিনিসগুলো বের করলাম। উনো কার্ড, ডলার, টাকা, বুকমার্ক, সিগারেটের প্যাকেট। আমার পকেট তখন আর পকেট নেই। রীতিমতো একটা জাদুঘর হয়ে উঠেছে। রিকশা ভাড়া পরিশোধ করে ‘অনাকাঙ্ক্ষিত উপহার’গুলো পুনরায় পকেটে ভরে বাসায় উঠতে লাগলাম রঙচটা সিঁড়ি ভেঙে ভেঙে।
মাথায় তখন সারাদিনের ধারাপাত। ভাবছি, পকেটের এই জাদুঘরের প্রতিটি জিনিসের পেছনে একজন করে তরুণ বা তরুণী আছে। তাঁদের একজনকেও আমি চিনি না। হয়তো কোনোদিন চিনবও না। তাতে কী! তাঁরা সবাই খুব অদ্ভুত কিছু স্বপ্ন দেখছে। আর কে না জানে স্বপ্নবান মানুষেরাই পৃথিবীটা সুন্দর করে তুলতে পারে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার কোনো বিশেষ কারণ ছিল না আমার। মাঝেমধ্যে কোনো কারণ ছাড়াই আমি নানান জায়গায় যাই। শাহবাগের মোড় থেকে আনমনে হাঁটতে হাঁটতে টিএসসির দিকে চলে গেলাম। বিকেলটা সুন্দর। আকাশে মেঘ আছে, আবার মেঘের ফাঁক দিয়ে অদ্ভুত নরম আলো এসে পড়েছে। মনে হচ্ছিলো চা খেতে ভালো লাগবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দাপ্তরিক ভাষায়, ‘একজন বহিরাগত’ হিসেবে টিএসসিতে চায়ের দোকানে বসার প্রস্তুতি নিচ্ছি। এমন সময় প্রায় উড়ন্ত অবস্থায় এক ছেলে এসে আমার হাতে কী একটা ধরিয়ে দিয়ে নিমেষে হাওয়া। তাকিয়ে দেখি, একটা উনো কার্ড। নীল রঙা। তবে খেলার কার্ড নয়, ভোটের কার্ড। এক আপুর ছবি, খুব সুন্দর করে হাসছেন। নিচে নাম আর ব্যালট নম্বর। ব্যাপারটা এতই অদ্ভুত যে আমার একা একাই হাসি পেলো।

চা খাওয়া শেষ, কার্ডটা পকেটে রেখে মধুর ক্যান্টিনের দিকে হাঁটছি। সেখানে এক বন্ধু অপেক্ষা করছে। ডাকসু ভবন আর মধুর মাঝখানে এবার আরেকজন হাতে ধরিয়ে দিল এক ডলারের নোট। আমি অবাক হলাম। ভালো করে তাকিয়ে দেখি, জর্জ ওয়াশিংটনের বদলে এক অচেনা তরুণের মুখ। তিনি আমার দিকে তাকিয়ে যেন বলছেন, ‘দিয়ে দাও একটা ভোট!’ আমার পকেটে তখন বিদেশি মুদ্রা, একটু পর এল ১০ টাকার নোটের মতো দেখতে দেশি মুদ্রাও। সবই অবশ্য নকল।
বন্ধুর সঙ্গে আলাপ করতে করতে হাঁটা দিলাম। কলাভবনের সামনের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় হাতে এলো দুটো লম্বাটে কার্ড। বুকমার্ক। একটিতে এস এম সুলতানের আঁকা ছবি, অন্যটিতে কামরুল হাসানের। হঠাৎ করে মনটা ভালো হয়ে গেলো। ভোটের প্রচারণায় এমন সুন্দর জিনিসও হয়!
তবে সবচেয়ে অদ্ভুত ঘটনাটা ঘটলো হাকিম চত্বরে। ভাজা-পোড়া খেতে গেছি। দোকানের পাশ থেকে বেশ গম্ভীর চেহারার এক ছেলে আমার দিকে এগিয়ে এল। তার হাতে বেশ কিছু সিগারেটের প্যাকেট। আমার দিকে একটা বাড়িয়ে দিলো সে। খানিকটা অপ্রস্তুত হয়ে বললাম, ‘আমি সিগারেট খাই না।’ (এমনিতে টুকুটাক খাই)
ছেলেটা হাসলো। খেয়াল করলাম অদ্ভুত সুন্দর তার হাসি। বললো, ‘ভাই, এটা খাওয়ার জিনিস না। দেখার জিনিস।’
প্যাকেটটা হাতে নিলাম। প্যাকেটের ওপর এক প্রার্থীর ছবি। ব্র্যান্ডের নাম ‘লাকি রাফসান’। আর অন্যপাশে লেখা, ‘সিগারেটের ধোঁয়া থেকে বাঁচতে স্মোকিং জোন নির্মাণ।’ আমি ছেলেটার মুখের দিকে তাকালাম। সে এমনভাবে হাসছে, যেন খুব মজার একটা ধাঁধা দিয়েছে, আর আমি তার সমাধান করতে পারছি না। একই প্যাকেটে বিষ এবং বিষের প্রতিষেধক। আমাদের জীবনটাও কি এমন? কে জানে!
সন্ধ্যা নামার মুখে আমি বাসার দিকে রওনা দিলাম। রিকশায় বসে পকেট থেকে জিনিসগুলো বের করলাম। উনো কার্ড, ডলার, টাকা, বুকমার্ক, সিগারেটের প্যাকেট। আমার পকেট তখন আর পকেট নেই। রীতিমতো একটা জাদুঘর হয়ে উঠেছে। রিকশা ভাড়া পরিশোধ করে ‘অনাকাঙ্ক্ষিত উপহার’গুলো পুনরায় পকেটে ভরে বাসায় উঠতে লাগলাম রঙচটা সিঁড়ি ভেঙে ভেঙে।
মাথায় তখন সারাদিনের ধারাপাত। ভাবছি, পকেটের এই জাদুঘরের প্রতিটি জিনিসের পেছনে একজন করে তরুণ বা তরুণী আছে। তাঁদের একজনকেও আমি চিনি না। হয়তো কোনোদিন চিনবও না। তাতে কী! তাঁরা সবাই খুব অদ্ভুত কিছু স্বপ্ন দেখছে। আর কে না জানে স্বপ্নবান মানুষেরাই পৃথিবীটা সুন্দর করে তুলতে পারে।

আজ ৮ ডিসেম্বর জন লেননের মৃত্যুদিন। দুনিয়া কাঁপানো ব্যান্ড বিটলস-এর প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য লেনন ছিলেন একাধারে গায়ক, গীতিকার, সুরকার, চিত্রশিল্পী, লেখক ও শান্তিকর্মী। ‘ইমাজিন’ তাঁর বিখ্যাত গান। এই গানে তিনি কোন পৃথিবীর স্বপ্ন দেখিয়েছেন? কেন গানটি আজও এত প্রাসঙ্গিক?
৪ ঘণ্টা আগে
বর্তমান বিশ্বে সাহসী বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে যাঁর নাম সবার আগে আসে, তিনি নোম চমস্কি। ৭ ডিসেম্বর তাঁর জন্মদিন। একদিকে তিনি আধুনিক ভাষাবিজ্ঞানের স্থপতি, অন্যদিকে শোষিতের পক্ষে দাঁড়ানো এক অকুতোভয় যোদ্ধা। খুঁজে দেখা যাক আধুনিক সময়ের অন্যতম প্রধান চিন্তক ও জনবুদ্ধিজীবী নোম চমস্কির বর্ণাঢ্য জীবন ও কর্ম।
৬ ঘণ্টা আগে
শুনতে অবাক লাগলেও এমন ঘটনাই ঘটেছে মুক্তিযুদ্ধের সময়। যদিও ইতিহাসের পাতায় কচুরিপানা নিয়ে খুব কমই লেখা হয়েছে, কিন্তু কচুরিপানার অবদান অস্বীকার কোনো উপায় নেই। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস কেবল বারুদ আর রক্তের ইতিহাস নয়। এটি ছিল বাংলার মাটি, জল ও প্রকৃতির এক সম্মিলিত সংগ্রাম।
৬ ঘণ্টা আগে
‘আমরা বর্ষার অপেক্ষায় আছি… তাঁরা পানিকে ভয় পায়, আর আমরা হচ্ছি জলের রাজা। প্রকৃতি হবে আমাদের দ্বিতীয় বাহিনী।’ নিউইয়র্ক টাইমসের খ্যাতিমান সাংবাদিক সিডনি শনবার্গের ‘ডেটলাইন বাংলাদেশ’ প্রতিবেদনে এসব কথা বলেছিলেন এক বাঙালি অফিসার।
৬ ঘণ্টা আগে