leadT1ad

সাভারে ট্যানারি শ্রমিকদের ৭৭ শতাংশের বেতন ন্যূনতম মজুরির নিচে

স্ট্রিম প্রতিবেদক
স্ট্রিম প্রতিবেদক

প্রকাশ : ৩০ নভেম্বর ২০২৫, ২৩: ৩৩
ঢাকায় আয়োজিত এক অংশীজন সভায় সমীক্ষার ফলাফল উপস্থাপন করা হয়। ছবি: সংগৃহীত

সাভারের হেমায়েতপুর ট্যানারি শিল্প এলাকায় ৭৭ শতাংশ শ্রমিক সরকার নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরির চেয়েও কম বেতন পাচ্ছেন। এছাড়া ৮৬ শতাংশ শ্রমিকের কোনো লিখিত নিয়োগপত্র নেই ও প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ শ্রমিকই অস্থায়ী ভিত্তিতে কাজ করছেন। সলিডারিটি সেন্টার ও বাংলাদেশ ট্যানারি শ্রমিক ইউনিয়নের যৌথ সমীক্ষায় এই চিত্র উঠে এসেছে।

আজ রোববার (৩০ নভেম্বর) ঢাকায় আয়োজিত এক অংশীজন সভায় এই সমীক্ষার ফলাফল উপস্থাপন করা হয়। চলতি বছরের আগস্ট থেকে নভেম্বর পর্যন্ত হেমায়েতপুরের ১২১টি কারখানার ২২৫ জন শ্রমিকের সাক্ষাৎকার ও পরিদর্শন চেকলিস্টের ভিত্তিতে ‘ছায়া পরিদর্শন’ পদ্ধতিতে এই সমীক্ষা পরিচালিত হয়।

সমীক্ষায় দেখা গেছে, মাত্র এক-পঞ্চমাংশ শ্রমিক বেতন স্লিপ পান। বেশিরভাগ শ্রমিক অভিযোগ করেছেন, তাদের মজুরি অনিয়মিত বা বিলম্বিতভাবে দেওয়া হয়। শ্রমঘণ্টার ক্ষেত্রেও ভয়াবহ অনিয়ম চলছে—৪২ শতাংশ শ্রমিক দিনে ১০ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন ও প্রায় ৩৩ শতাংশ শ্রমিককে সপ্তাহের সাতদিনই কাজ করতে বাধ্য করা হয়। এছাড়া ৬৩ শতাংশ শ্রমিক জানিয়েছেন, তারা আইন অনুযায়ী দ্বিগুণ হারে ওভারটাইম মজুরি পান না।

সমীক্ষা বলছে, মাত্র এক-তৃতীয়াংশ শ্রমিক নিয়মিত ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই) পান। ৫৮ শতাংশ শ্রমিককে সঠিক পিপিই ব্যবহারের নির্দেশনা দেওয়া হয় না ও ৭৭ শতাংশ শ্রমিক কখনোই কোনো আনুষ্ঠানিক স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা প্রশিক্ষণ পাননি। শ্রমিকরা কারখানার ভেতরে পর্যাপ্ত বায়ু চলাচলের অভাব, তীব্র দুর্গন্ধ, জলাবদ্ধতা ও দুর্বল বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছেন।

সমীক্ষা অনুযায়ী, ৮৫ শতাংশ নারী শ্রমিক মাতৃত্বকালীন ছুটি বা সুবিধা থেকে বঞ্চিত। এছাড়া এক-তৃতীয়াংশ নারী কারখানায় নিরাপদ ও পৃথক টয়লেট সুবিধার অভাব বোধ করেন।

কর্মস্থলে অভিযোগ জানানোর ক্ষেত্রেও শ্রমিকদের মধ্যে ভীতি ও অনিশ্চয়তা কাজ করে। ৪৩ শতাংশ শ্রমিক দুর্ব্যবহারের শিকার হওয়ার অভিজ্ঞতা জানালেও চাকরি হারানোর ভয়ে অভিযোগ করতে সাহস পান না।

তবে ইউনিয়নভুক্ত কারখানাগুলোর পরিস্থিতি তুলনামূলকভাবে ভালো বলেও সমীক্ষায় উঠে এসেছে।

সলিডারিটি সেন্টারের কান্ট্রি প্রোগ্রাম ডিরেক্টর একেএম নাসিম বলেন, ‘এই ছায়া পরিদর্শনের মাধ্যমে দেখা গেছে যে হাজারীবাগ থেকে হেমায়েতপুরে স্থানান্তরিত হওয়ার পরও শ্রমিকরা একই রকম কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছেন। বিপুল সংখ্যক শ্রমিককে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ এবং ন্যূনতম মজুরি বাস্তবায়নে ব্যর্থতাই প্রমাণ করে যে, শ্রমিকদের সমস্যা এখনো আইন প্রয়োগকারী সংস্থার অগ্রাধিকারের তালিকায় নেই।’

বিষয়:

শ্রমিক
Ad 300x250

সম্পর্কিত