সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকা ও এর আশেপাশের এলাকায় ঘনঘন ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ায় নগরবাসীর মনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। অপরিকল্পিত নগরায়ণের ফলে ঢাকার ঝুঁকি এবং তা থেকে উত্তরণের উপায় নিয়ে নগর পরিকল্পনাবিদ আদিল মুহাম্মদ খানের সঙ্গে কথা বলেছে স্ট্রিম। এখানে সাক্ষাৎকারের বিস্তারিত রইলো।
স্ট্রিম প্রতিবেদক

প্রশ্ন: ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল এখন ঢাকার ভেতরে বা খুব কাছেই দেখা যাচ্ছে। অতীতে অনেক ভুল পরিকল্পনায় গড়ে ওঠা এই অপরিকল্পিত শহরে এখন আমাদের করণীয় কী?
আদিল মুহাম্মদ খান: অতীতের ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে এখন কঠোর হওয়া ছাড়া উপায় নেই। প্রথমত, এখন থেকে ইমারত নির্মাণ বিধিমালা এবং দেশের পরিকল্পনা আইন, বিশেষ করে ‘বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা’ বা ড্যাপের কোনো ব্যত্যয় ঘটানো যাবে না। এতদিন অনেক ছাড় দেওয়া হয়েছে, কিন্তু এখন থেকে আর কোনো ধরনের ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই। নিয়ম মেনে ভবন ও অবকাঠামো নির্মাণ নিশ্চিত করতে হবে।
প্রশ্ন: কিন্তু শহরে ইতিমধ্যে যে অসংখ্য পুরনো ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবন রয়েছে, সেগুলোর ক্ষেত্রে কী পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে?
আদিল মুহাম্মদ খান: পুরনো ভবনগুলোর ক্ষেত্রে আমাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করতে হবে। প্রথমেই সরকারি অবকাঠামো—যেমন স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল এবং জনসমাগম হয় এমন বাণিজ্যিক ভবনগুলোর বিস্তারিত মূল্যায়ন বা অ্যাসেসমেন্ট করা জরুরি। এই মূল্যায়নের মাধ্যমে ভবনগুলোকে অতি ঝুঁকিপূর্ণ, মাঝারি ঝুঁকিপূর্ণ এবং কম ঝুঁকিপূর্ণ—এই ক্যাটাগরিতে ভাগ করতে হবে।
যেসব ভবন অতি ঝুঁকিপূর্ণ এবং যেকোনো মুহূর্তে ধসে প্রাণহানি ঘটাতে পারে, সেগুলো অবিলম্বে পরিত্যক্ত ঘোষণা করতে হবে। আর যেগুলো মাঝারি বা স্বল্প ঝুঁকির, সেগুলোকে আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে কাঠামোগতভাবে শক্তিশালী করতে হবে। প্রকৌশল বিদ্যায় একে ‘রেট্রোফিটিং’ বলা হয়। এটি বাস্তবায়ন করা খুব কঠিন কিছু নয়, শুধু প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া দরকার।
প্রশ্ন: ভূমিকম্পের সময় নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য আমাদের শহরের প্রস্তুতি কতটুকু?
আদিল মুহাম্মদ খান: প্রস্তুতির অভাব প্রকট। আমাদের এখনই একটি ‘উদ্ধার ও অপসারণ পরিকল্পনা’ বা ইভাকুয়েশন প্ল্যান তৈরি করতে হবে। বিশেষ করে প্রতিটি ওয়ার্ডে ৫০০ মিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে অন্তত একটি করে খোলা জায়গা, পার্ক বা খেলার মাঠ থাকা আবশ্যক। সাধারণ সময়ে এগুলো বিনোদনের জায়গা হিসেবে ব্যবহৃত হলেও জরুরি অবস্থায় বা ভূমিকম্পের সময় এগুলোই নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে কাজ করবে।
প্রশ্ন: ঢাকার জলাভূমি ভরাট করে যেসব আবাসন প্রকল্প গড়ে উঠেছে, ভূমিকম্পে সেগুলোর ঝুঁকি কতটা?
আদিল মুহাম্মদ খান: এটি অত্যন্ত ভয়ের বিষয়। জলাশয় ভরাট করে যখন ভবন নির্মাণ করা হয় এবং নিচের মাটি যদি দুর্বল থাকে, তবে ভূমিকম্পের সময় সেই মাটি তরল পদার্থের মতো আচরণ করে। বিজ্ঞানের ভাষায় একে ‘লিকুইফেকশন’ বা মাটির তরলীকরণ বলা হয়। এর ফলে ওপরে বহুতল ভবন থাকলেও মাটি সরে গিয়ে ভবনটি দেবে যেতে পারে বা ধসে পড়তে পারে। বর্তমানে জলাভূমি ভরাট করে যেসব নতুন শহর বা আবাসন গড়ে উঠছে, বড় মাত্রার ভূমিকম্পে সেগুলো অত্যন্ত নাজুক অবস্থায় পড়তে পারে। অথচ এসব জায়গায় আমরা অবলীলায় বড় বড় ভবন তৈরি করছি, যা মূলত মৃত্যুফাঁদ।
প্রশ্ন: গত দেড় দশকে মেট্রোরেল ও ফ্লাইওভারের মতো বড় অবকাঠামো নির্মিত হয়েছে। সাম্প্রতিক ভূমিকম্পে এগুলোর নিরাপত্তা নিয়ে কোনো শঙ্কা আছে কি?
আদিল মুহাম্মদ খান: মেট্রোরেল বা বড় ফ্লাইওভারগুলো সাধারণত ৭ মাত্রার ভূমিকম্প সহনীয় করেই নকশা করা হয়। কিন্তু কাগজে-কলমে নকশা ঠিক থাকলেও বাস্তবে নির্মাণকাজে কোনো ত্রুটি ছিল কি না, তা যাচাই করা জরুরি। গত কয়েক দিনের ভূমিকম্পে মেট্রোরেলের কিছু পিলারে ফাটল বা ক্র্যাকের খবর গণমাধ্যমে এসেছে। এই ফাটলগুলো কাঠামোগতভাবে কতটা গুরুতর, তা অবিলম্বে পরিদর্শন করা দরকার। শুধু মেট্রো রেল নয়, শহরের সব ফ্লাইওভার এবং বড় অবকাঠামোর একটি ‘নির্মাণ নিরীক্ষা’ বা অডিট করা প্রয়োজন। আমরা যা চেয়েছিলাম, ঠিক সেভাবেই এগুলো নির্মিত হয়েছে কি না এবং ঝুঁকির মাত্রা কোথায়—তা চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে হবে।
প্রশ্ন: ঢাকার এত কাছে ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল কি কোনো বড় বিপদের ইঙ্গিত দিচ্ছে?
আদিল মুহাম্মদ খান: অবশ্যই, এটি একটি বড় সতর্কবার্তা। গত ৪০-৫০ বছরে ঢাকার এত কাছে এমন মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়নি। ১০০ বছর আগে মধুপুর ফল্টে বা চ্যুতির রেখায় প্রায় ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল, যা ঢাকা থেকে খুব কাছে। এতদিন শক্তি সঞ্চিত হয়েছে, যা যেকোনো সময় নির্গত হতে পারে। এছাড়া নরসিংদীর দিকে নতুন চ্যুতিরেখা বা ফল্ট লাইনের সক্রিয়তা দেখা যাচ্ছে।
আমরা আসলে একটি অতি উচ্চ ঝুঁকির এলাকায় বসবাস করছি। তার ওপর আমাদের নগরায়ন প্রক্রিয়াটি অপরিকল্পিত এবং আইন অমান্য করে গড়ে ওঠা। যারা অতীতে এই অনিরাপদ নগরী তৈরির পেছনে দায়ী—হোক সে জমির মালিক, নির্মাতা বা সরকারি কর্মকর্তা—তাদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। অন্যথায় এই স্বেচ্ছাচারী নগরায়ন আমাদের বড় বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দেবে।
প্রশ্ন: ঢাকার আফতাবনগর, বাড্ডা বা বনশ্রী এলাকাগুলো একসময় জলাশয় বা বন্যা প্রবাহ এলাকা ছিল। সম্প্রতি জলাশয় ভরাট করে গড়ে ওঠা এসব এলাকার ভূমিকম্প ঝুঁকি আসলে কতটুকু?
আদিল মুহাম্মদ খান: ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে পড়ে জলাশয়, প্লাবনভূমি বা 'ফ্লাড ফ্লো জোন' ভরাট করে তৈরি এলাকাগুলো। বসুন্ধরা, আফতাবনগর বা আশপাশের যেসব এলাকা ভরাট করে গড়ে উঠেছে, সেখানকার মাটির নিচে 'লুজ সয়েল' বা অস্থিতিশীল মাটি থাকে। এখানে ভূমিকম্প হলে 'লিকুইফ্যাকশন' (মাটি তরল হয়ে যাওয়া) এবং 'এমপ্লিফিকেশন' (কম্পন বেড়ে যাওয়া)—এই দুটি ঘটনা ঘটে। ফলে উপরে যত ভালো ভবনই বানান না কেন, মাটির নিচের এই আচরণের কারণে তা মারাত্মক ঝুঁকিতে থাকে। বিশ্বের অনেক দেশেই লিকুইফ্যাকশনের কারণে ভবন ধসে পড়ার নজির আছে।
প্রশ্ন: বর্তমানে ঢাকায় জলাশয়ের পরিমাণ কেমন? আর নিয়ম অমান্য করে এই ঝুঁকিপূর্ণ নির্মাণের দায় আসলে কার?
আদিল মুহাম্মদ খান: আমাদের স্টাডি মতে, কোর ঢাকায় জলাশয় এখন ৫ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। প্লাবনভূমিগুলোতেও অবাধে বহুতল ভবন হচ্ছে। ড্যাপ বা ডিএমডিপি-তে এসব এলাকায় উন্নয়ন নিরুৎসাহিত করা হলেও, রাজউক ও রাষ্ট্র আবাসন ব্যবসায়ীদের সাথে আপস করে এসব অনিয়মকে বৈধতা দিয়েছে। মানুষকে এমন অনিরাপদ ভবনে ঠেলে দেওয়া একটা অপরাধ। যারা এসব অনুমোদন দিয়েছে, তাদের চিহ্নিত করে শ্বেতপত্র প্রকাশ করা এবং আইনের আওতায় আনা জরুরি।

প্রশ্ন: ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল এখন ঢাকার ভেতরে বা খুব কাছেই দেখা যাচ্ছে। অতীতে অনেক ভুল পরিকল্পনায় গড়ে ওঠা এই অপরিকল্পিত শহরে এখন আমাদের করণীয় কী?
আদিল মুহাম্মদ খান: অতীতের ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে এখন কঠোর হওয়া ছাড়া উপায় নেই। প্রথমত, এখন থেকে ইমারত নির্মাণ বিধিমালা এবং দেশের পরিকল্পনা আইন, বিশেষ করে ‘বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা’ বা ড্যাপের কোনো ব্যত্যয় ঘটানো যাবে না। এতদিন অনেক ছাড় দেওয়া হয়েছে, কিন্তু এখন থেকে আর কোনো ধরনের ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই। নিয়ম মেনে ভবন ও অবকাঠামো নির্মাণ নিশ্চিত করতে হবে।
প্রশ্ন: কিন্তু শহরে ইতিমধ্যে যে অসংখ্য পুরনো ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবন রয়েছে, সেগুলোর ক্ষেত্রে কী পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে?
আদিল মুহাম্মদ খান: পুরনো ভবনগুলোর ক্ষেত্রে আমাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করতে হবে। প্রথমেই সরকারি অবকাঠামো—যেমন স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল এবং জনসমাগম হয় এমন বাণিজ্যিক ভবনগুলোর বিস্তারিত মূল্যায়ন বা অ্যাসেসমেন্ট করা জরুরি। এই মূল্যায়নের মাধ্যমে ভবনগুলোকে অতি ঝুঁকিপূর্ণ, মাঝারি ঝুঁকিপূর্ণ এবং কম ঝুঁকিপূর্ণ—এই ক্যাটাগরিতে ভাগ করতে হবে।
যেসব ভবন অতি ঝুঁকিপূর্ণ এবং যেকোনো মুহূর্তে ধসে প্রাণহানি ঘটাতে পারে, সেগুলো অবিলম্বে পরিত্যক্ত ঘোষণা করতে হবে। আর যেগুলো মাঝারি বা স্বল্প ঝুঁকির, সেগুলোকে আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে কাঠামোগতভাবে শক্তিশালী করতে হবে। প্রকৌশল বিদ্যায় একে ‘রেট্রোফিটিং’ বলা হয়। এটি বাস্তবায়ন করা খুব কঠিন কিছু নয়, শুধু প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া দরকার।
প্রশ্ন: ভূমিকম্পের সময় নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য আমাদের শহরের প্রস্তুতি কতটুকু?
আদিল মুহাম্মদ খান: প্রস্তুতির অভাব প্রকট। আমাদের এখনই একটি ‘উদ্ধার ও অপসারণ পরিকল্পনা’ বা ইভাকুয়েশন প্ল্যান তৈরি করতে হবে। বিশেষ করে প্রতিটি ওয়ার্ডে ৫০০ মিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে অন্তত একটি করে খোলা জায়গা, পার্ক বা খেলার মাঠ থাকা আবশ্যক। সাধারণ সময়ে এগুলো বিনোদনের জায়গা হিসেবে ব্যবহৃত হলেও জরুরি অবস্থায় বা ভূমিকম্পের সময় এগুলোই নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে কাজ করবে।
প্রশ্ন: ঢাকার জলাভূমি ভরাট করে যেসব আবাসন প্রকল্প গড়ে উঠেছে, ভূমিকম্পে সেগুলোর ঝুঁকি কতটা?
আদিল মুহাম্মদ খান: এটি অত্যন্ত ভয়ের বিষয়। জলাশয় ভরাট করে যখন ভবন নির্মাণ করা হয় এবং নিচের মাটি যদি দুর্বল থাকে, তবে ভূমিকম্পের সময় সেই মাটি তরল পদার্থের মতো আচরণ করে। বিজ্ঞানের ভাষায় একে ‘লিকুইফেকশন’ বা মাটির তরলীকরণ বলা হয়। এর ফলে ওপরে বহুতল ভবন থাকলেও মাটি সরে গিয়ে ভবনটি দেবে যেতে পারে বা ধসে পড়তে পারে। বর্তমানে জলাভূমি ভরাট করে যেসব নতুন শহর বা আবাসন গড়ে উঠছে, বড় মাত্রার ভূমিকম্পে সেগুলো অত্যন্ত নাজুক অবস্থায় পড়তে পারে। অথচ এসব জায়গায় আমরা অবলীলায় বড় বড় ভবন তৈরি করছি, যা মূলত মৃত্যুফাঁদ।
প্রশ্ন: গত দেড় দশকে মেট্রোরেল ও ফ্লাইওভারের মতো বড় অবকাঠামো নির্মিত হয়েছে। সাম্প্রতিক ভূমিকম্পে এগুলোর নিরাপত্তা নিয়ে কোনো শঙ্কা আছে কি?
আদিল মুহাম্মদ খান: মেট্রোরেল বা বড় ফ্লাইওভারগুলো সাধারণত ৭ মাত্রার ভূমিকম্প সহনীয় করেই নকশা করা হয়। কিন্তু কাগজে-কলমে নকশা ঠিক থাকলেও বাস্তবে নির্মাণকাজে কোনো ত্রুটি ছিল কি না, তা যাচাই করা জরুরি। গত কয়েক দিনের ভূমিকম্পে মেট্রোরেলের কিছু পিলারে ফাটল বা ক্র্যাকের খবর গণমাধ্যমে এসেছে। এই ফাটলগুলো কাঠামোগতভাবে কতটা গুরুতর, তা অবিলম্বে পরিদর্শন করা দরকার। শুধু মেট্রো রেল নয়, শহরের সব ফ্লাইওভার এবং বড় অবকাঠামোর একটি ‘নির্মাণ নিরীক্ষা’ বা অডিট করা প্রয়োজন। আমরা যা চেয়েছিলাম, ঠিক সেভাবেই এগুলো নির্মিত হয়েছে কি না এবং ঝুঁকির মাত্রা কোথায়—তা চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে হবে।
প্রশ্ন: ঢাকার এত কাছে ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল কি কোনো বড় বিপদের ইঙ্গিত দিচ্ছে?
আদিল মুহাম্মদ খান: অবশ্যই, এটি একটি বড় সতর্কবার্তা। গত ৪০-৫০ বছরে ঢাকার এত কাছে এমন মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়নি। ১০০ বছর আগে মধুপুর ফল্টে বা চ্যুতির রেখায় প্রায় ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল, যা ঢাকা থেকে খুব কাছে। এতদিন শক্তি সঞ্চিত হয়েছে, যা যেকোনো সময় নির্গত হতে পারে। এছাড়া নরসিংদীর দিকে নতুন চ্যুতিরেখা বা ফল্ট লাইনের সক্রিয়তা দেখা যাচ্ছে।
আমরা আসলে একটি অতি উচ্চ ঝুঁকির এলাকায় বসবাস করছি। তার ওপর আমাদের নগরায়ন প্রক্রিয়াটি অপরিকল্পিত এবং আইন অমান্য করে গড়ে ওঠা। যারা অতীতে এই অনিরাপদ নগরী তৈরির পেছনে দায়ী—হোক সে জমির মালিক, নির্মাতা বা সরকারি কর্মকর্তা—তাদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। অন্যথায় এই স্বেচ্ছাচারী নগরায়ন আমাদের বড় বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দেবে।
প্রশ্ন: ঢাকার আফতাবনগর, বাড্ডা বা বনশ্রী এলাকাগুলো একসময় জলাশয় বা বন্যা প্রবাহ এলাকা ছিল। সম্প্রতি জলাশয় ভরাট করে গড়ে ওঠা এসব এলাকার ভূমিকম্প ঝুঁকি আসলে কতটুকু?
আদিল মুহাম্মদ খান: ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে পড়ে জলাশয়, প্লাবনভূমি বা 'ফ্লাড ফ্লো জোন' ভরাট করে তৈরি এলাকাগুলো। বসুন্ধরা, আফতাবনগর বা আশপাশের যেসব এলাকা ভরাট করে গড়ে উঠেছে, সেখানকার মাটির নিচে 'লুজ সয়েল' বা অস্থিতিশীল মাটি থাকে। এখানে ভূমিকম্প হলে 'লিকুইফ্যাকশন' (মাটি তরল হয়ে যাওয়া) এবং 'এমপ্লিফিকেশন' (কম্পন বেড়ে যাওয়া)—এই দুটি ঘটনা ঘটে। ফলে উপরে যত ভালো ভবনই বানান না কেন, মাটির নিচের এই আচরণের কারণে তা মারাত্মক ঝুঁকিতে থাকে। বিশ্বের অনেক দেশেই লিকুইফ্যাকশনের কারণে ভবন ধসে পড়ার নজির আছে।
প্রশ্ন: বর্তমানে ঢাকায় জলাশয়ের পরিমাণ কেমন? আর নিয়ম অমান্য করে এই ঝুঁকিপূর্ণ নির্মাণের দায় আসলে কার?
আদিল মুহাম্মদ খান: আমাদের স্টাডি মতে, কোর ঢাকায় জলাশয় এখন ৫ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। প্লাবনভূমিগুলোতেও অবাধে বহুতল ভবন হচ্ছে। ড্যাপ বা ডিএমডিপি-তে এসব এলাকায় উন্নয়ন নিরুৎসাহিত করা হলেও, রাজউক ও রাষ্ট্র আবাসন ব্যবসায়ীদের সাথে আপস করে এসব অনিয়মকে বৈধতা দিয়েছে। মানুষকে এমন অনিরাপদ ভবনে ঠেলে দেওয়া একটা অপরাধ। যারা এসব অনুমোদন দিয়েছে, তাদের চিহ্নিত করে শ্বেতপত্র প্রকাশ করা এবং আইনের আওতায় আনা জরুরি।

২০০৭ সালের ‘ওয়ান-ইলেভেন’ থেকে ২০২৪-এর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান এবং তৎপরবর্তী অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়কাল পর্যন্ত বাংলাদেশের দীর্ঘ রাজনৈতিক যাত্রার একটি সমালোচনামূলক বিশ্লেষণ এই লেখা। এতে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের অভাব, আমলাতান্ত্রিক নির্ভরতার সংকট এবং কর্তৃত্ববাদী শাসনের ফলে সৃষ্ট সামাজিক ক্ষত ত
৭ ঘণ্টা আগে
ঢাকার ভারতীয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে গত ৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ভিন্ন আবহে পালিত হয় ৫৪তম মৈত্রী দিবস। এতে ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা বলেন, ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে সমতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে স্থিতিশীল, ইতিবাচক ও গঠনমূলক সম্পর্ক চায়।
১ দিন আগেবাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) আয়োজিত বার্ষিক ডেভেলপমেন্ট কনফারেন্সের এবারের আলোচনার শিরোনাম ‘গণতন্ত্র ও উন্নয়ন’, যা অত্যন্ত সময়োপযোগী। আমরা সবাই এখন এই বিষয়টি নিয়েই ভাবছি।
১ দিন আগে
পেরুর বিচারক লুজ দেল কারমেন ইবানিয়েজ কারাঞ্জর ওপর গত জুনে নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। কারণ, তিনি ২০০৩ সালের পর আফগানিস্তানে মার্কিন সেনাদের অপরাধ তদন্তের অনুমতি দিয়েছিলেন। তাকে নিয়ে গত এক বছরে ছয়জন আইসিসি বিচারকের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র।
১ দিন আগে