জাভেদ হুসেন

তারেক রহমান আজ তাঁর বক্তৃতায় যখন মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের একটি ঐতিহাসিক বাক্য ব্যবহার করেছেন। সেই বাক্যটি হলো—আই হ্যাভ আ ড্রিম। আমার একটা স্বপ্ন আছে। তারেক বললেন, আই হ্যাভ অ্যা প্ল্যান। তারেক রহমান তাঁর বক্তৃতার শেষ করে দিয়ে আবার ফিরে এসে তিনি সেই বাক্যটিকে শুধরে দিয়ে বললেন, উই হ্যাভ আ প্ল্যান। আমাদের একটা পরিকল্পনা আছে। সবাইকে তিনি সঙ্গে নিলেন। এই বাক্যটি বেছে নেওয়া নিতান্ত কোনো অলঙ্কারধর্মী উদ্ধৃতি ছিল না। এখন এই বাক্যের মধ্যে আছে একটি রাজনৈতিক অবস্থান, একটি ভাষিক কৌশল এবং একই সঙ্গে একটি ঐতিহাসিক স্মৃতি টেনে আনার চেষ্টা। এই বাক্য ব্যবহারের দায়ও অনেক ভারী।
১৯৬৩ সালের ২৮ আগস্ট ওয়াশিংটনের লিংকন মেমোরিয়ালের সামনে দাঁড়িয়ে মার্টিন লুথার কিং বক্তৃতাতে এই শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন। সেদিনের কথাগুলো আমেরিকার নাগরিক অধিকার আন্দোলনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল। বদলে দিয়েছিল বিশ্ব রাজনীতির ভাষা। ‘আই হ্যাভ আ ড্রিম’ বক্তৃতাটি ব্যক্তিগত আকাঙ্ক্ষার ঘোষণা নয়। এটি ছিল এক নৈতিক দাবি। কৃষ্ণাঙ্গদের ওপর শতাব্দীব্যাপী বৈষম্য, রাষ্ট্রীয় বর্ণবাদ এবং আইনের অসম প্রয়োগের বিরুদ্ধে সেটি ছিল একটি শান্তিপূর্ণ কিন্তু দৃঢ় বিদ্রোহ। কিং স্বপ্নের কথা বলেছিলেন। সেই স্বপ্ন ভবিষ্যতের। কিন্তু তাঁর ভাষা ছিল বর্তমানের অন্যায়ের বিরুদ্ধে সরাসরি এক অভিযোগ।
কিং-এর এই বক্তৃতা ব্যক্তি থেকে সমষ্টির দিকে যাত্রার এক চমৎকার উদাহরণ। কিং ‘আমি’ দিয়ে শুরু করলেও শেষ পর্যন্ত তাঁর স্বপ্ন হয়ে ওঠে লাখো মানুষের স্বপ্ন। তাঁর ব্যক্তি উচ্চারণ একটি জাতির নৈতিক বিবেকের উচ্চারণ। সেই কারণেই তাঁর বক্তৃতা আজও আন্দোলনের ভাষা, অধিকার আদায়ের ব্যাকরণ এবং রাজনৈতিক নৈতিকতার মানদণ্ড হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
তারেক রহমান আজ প্রথমে ‘আই হ্যাভ আ প্ল্যান’ বলার পর বক্তৃতা শেষ করে আবার ফিরে এসে ‘উই হ্যাভ আ প্ল্যান’ বললেন। খুব কৌতূহলোদ্দীপক ব্যাপার। কিং যেভাব তাঁর বক্তৃতার অলংকারে হাজির করেছিলেন, তারেক রহমান তা স্পষ্ট করে ফিরে এসে বলে গেলেন। ব্যক্তির পরিকল্পনাকে সমষ্টিতে রূপান্তরের এই রেটোরিক্যাল শিফটটি রাজনীতিতে খুব তাৎপর্যপূর্ণ। এতে একটি বার্তা স্পষ্ট হয়। এই স্বপ্ন আর একক নেতৃত্বের আকাঙ্ক্ষা নয়, বরং একটি সম্মিলিত রাজনৈতিক অভিলাষ। ‘আমি’ থেকে ‘আমরা’-তে যাওয়ার এই ভাষিক পরিবর্তন আসলে দায়িত্বের পরিসরও বাড়িয়ে দেয়।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতির ভাষা ছিল প্রতিশোধ, বিভাজন ও অবিশ্বাসের ভাষা। সেখানে ‘স্বপ্ন’-এর কথা বলা, এবং সেই স্বপ্নকে ব্যক্তিগত না রেখে সমষ্টিগত করে তোলা—এটি রাজনৈতিক কৌশলের পাশাপাশি এক ধরনের নৈতিক আবেদনও। মার্টিন লুথার কিং ন্যায়বিচার, সমতা ও মানবিক মর্যাদার প্রশ্নকে স্বপ্নের ভাষায় রূপ দিয়েছিলে। তারেক রহমান যে ভবিষ্যতের কল্পচিত্র হাজির করার চেষ্টা করলেন তা সহজ কাজ নয়। তাঁর দল, কর্মীরা সেই স্বপ্নের জন্য কতটা প্রস্তুত তা নিয়েও খুব আশাব্যঞ্জক কোনো ছবি দলে কর্মী ও নেতারা দেখাতে পারেননি।
স্বপ্ন ও পরিকল্পনার ভাষা তখনই কার্যকর হয়, যখন তা বাস্তব রাজনৈতিক কর্মসূচি ও নৈতিক ধারাবাহিকতার সঙ্গে যুক্ত থাকে। কিং-এর স্বপ্ন শক্তিশালী হয়েছিল কারণ তিনি অহিংস আন্দোলন, সংগঠন এবং আত্মত্যাগের রাজনীতিকে সেই ভাষার সঙ্গে মিলিয়েছিলেন। তারেক রহমানের আজকের উচ্চারিত ‘উই হ্যাভ আ প্ল্যান’ উচ্চারণও সেই পরীক্ষার মুখে দাঁড়াবে। এই স্বপ্ন কীভাবে বাস্তব রাজনৈতিক চর্চায় রূপ নেয়, সেটিই নির্ধারণ করবে এর ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক মূল্য।

তারেক রহমান আজ তাঁর বক্তৃতায় যখন মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের একটি ঐতিহাসিক বাক্য ব্যবহার করেছেন। সেই বাক্যটি হলো—আই হ্যাভ আ ড্রিম। আমার একটা স্বপ্ন আছে। তারেক বললেন, আই হ্যাভ অ্যা প্ল্যান। তারেক রহমান তাঁর বক্তৃতার শেষ করে দিয়ে আবার ফিরে এসে তিনি সেই বাক্যটিকে শুধরে দিয়ে বললেন, উই হ্যাভ আ প্ল্যান। আমাদের একটা পরিকল্পনা আছে। সবাইকে তিনি সঙ্গে নিলেন। এই বাক্যটি বেছে নেওয়া নিতান্ত কোনো অলঙ্কারধর্মী উদ্ধৃতি ছিল না। এখন এই বাক্যের মধ্যে আছে একটি রাজনৈতিক অবস্থান, একটি ভাষিক কৌশল এবং একই সঙ্গে একটি ঐতিহাসিক স্মৃতি টেনে আনার চেষ্টা। এই বাক্য ব্যবহারের দায়ও অনেক ভারী।
১৯৬৩ সালের ২৮ আগস্ট ওয়াশিংটনের লিংকন মেমোরিয়ালের সামনে দাঁড়িয়ে মার্টিন লুথার কিং বক্তৃতাতে এই শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন। সেদিনের কথাগুলো আমেরিকার নাগরিক অধিকার আন্দোলনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল। বদলে দিয়েছিল বিশ্ব রাজনীতির ভাষা। ‘আই হ্যাভ আ ড্রিম’ বক্তৃতাটি ব্যক্তিগত আকাঙ্ক্ষার ঘোষণা নয়। এটি ছিল এক নৈতিক দাবি। কৃষ্ণাঙ্গদের ওপর শতাব্দীব্যাপী বৈষম্য, রাষ্ট্রীয় বর্ণবাদ এবং আইনের অসম প্রয়োগের বিরুদ্ধে সেটি ছিল একটি শান্তিপূর্ণ কিন্তু দৃঢ় বিদ্রোহ। কিং স্বপ্নের কথা বলেছিলেন। সেই স্বপ্ন ভবিষ্যতের। কিন্তু তাঁর ভাষা ছিল বর্তমানের অন্যায়ের বিরুদ্ধে সরাসরি এক অভিযোগ।
কিং-এর এই বক্তৃতা ব্যক্তি থেকে সমষ্টির দিকে যাত্রার এক চমৎকার উদাহরণ। কিং ‘আমি’ দিয়ে শুরু করলেও শেষ পর্যন্ত তাঁর স্বপ্ন হয়ে ওঠে লাখো মানুষের স্বপ্ন। তাঁর ব্যক্তি উচ্চারণ একটি জাতির নৈতিক বিবেকের উচ্চারণ। সেই কারণেই তাঁর বক্তৃতা আজও আন্দোলনের ভাষা, অধিকার আদায়ের ব্যাকরণ এবং রাজনৈতিক নৈতিকতার মানদণ্ড হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
তারেক রহমান আজ প্রথমে ‘আই হ্যাভ আ প্ল্যান’ বলার পর বক্তৃতা শেষ করে আবার ফিরে এসে ‘উই হ্যাভ আ প্ল্যান’ বললেন। খুব কৌতূহলোদ্দীপক ব্যাপার। কিং যেভাব তাঁর বক্তৃতার অলংকারে হাজির করেছিলেন, তারেক রহমান তা স্পষ্ট করে ফিরে এসে বলে গেলেন। ব্যক্তির পরিকল্পনাকে সমষ্টিতে রূপান্তরের এই রেটোরিক্যাল শিফটটি রাজনীতিতে খুব তাৎপর্যপূর্ণ। এতে একটি বার্তা স্পষ্ট হয়। এই স্বপ্ন আর একক নেতৃত্বের আকাঙ্ক্ষা নয়, বরং একটি সম্মিলিত রাজনৈতিক অভিলাষ। ‘আমি’ থেকে ‘আমরা’-তে যাওয়ার এই ভাষিক পরিবর্তন আসলে দায়িত্বের পরিসরও বাড়িয়ে দেয়।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতির ভাষা ছিল প্রতিশোধ, বিভাজন ও অবিশ্বাসের ভাষা। সেখানে ‘স্বপ্ন’-এর কথা বলা, এবং সেই স্বপ্নকে ব্যক্তিগত না রেখে সমষ্টিগত করে তোলা—এটি রাজনৈতিক কৌশলের পাশাপাশি এক ধরনের নৈতিক আবেদনও। মার্টিন লুথার কিং ন্যায়বিচার, সমতা ও মানবিক মর্যাদার প্রশ্নকে স্বপ্নের ভাষায় রূপ দিয়েছিলে। তারেক রহমান যে ভবিষ্যতের কল্পচিত্র হাজির করার চেষ্টা করলেন তা সহজ কাজ নয়। তাঁর দল, কর্মীরা সেই স্বপ্নের জন্য কতটা প্রস্তুত তা নিয়েও খুব আশাব্যঞ্জক কোনো ছবি দলে কর্মী ও নেতারা দেখাতে পারেননি।
স্বপ্ন ও পরিকল্পনার ভাষা তখনই কার্যকর হয়, যখন তা বাস্তব রাজনৈতিক কর্মসূচি ও নৈতিক ধারাবাহিকতার সঙ্গে যুক্ত থাকে। কিং-এর স্বপ্ন শক্তিশালী হয়েছিল কারণ তিনি অহিংস আন্দোলন, সংগঠন এবং আত্মত্যাগের রাজনীতিকে সেই ভাষার সঙ্গে মিলিয়েছিলেন। তারেক রহমানের আজকের উচ্চারিত ‘উই হ্যাভ আ প্ল্যান’ উচ্চারণও সেই পরীক্ষার মুখে দাঁড়াবে। এই স্বপ্ন কীভাবে বাস্তব রাজনৈতিক চর্চায় রূপ নেয়, সেটিই নির্ধারণ করবে এর ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক মূল্য।

গত এক সপ্তাহজুড়ে দেশে-বিদেশে যেসব ঘটনা ঘটেছে, তার ভিড়ে গত ১৯ ডিসেম্বর রাতে ময়মনসিংহে একজন হিন্দু ব্যক্তিকে পিটিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যার ঘটনাটি দেশে তেমন ক্ষোভের জন্ম দেয়নি। যদিও আন্তর্জাতিক পরিসরে এই মব-সন্ত্রাসের ঘটনা তীব্র আলোড়ন তৈরি করেছে।
২১ ঘণ্টা আগে
গত দেড় দশকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রক্রিয়া নানা কারণে বিতর্কিত হয়েছে। নির্বাচন ও শাসন প্রক্রিয়া নিয়ে জনমনে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। জনগণ যথার্থই বুঝতে শুরু করেছে, এসব থেকে উত্তরণের অন্যতম উপায় হলো বিএনপির ক্ষমতায়ন।
১ দিন আগে
বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের ফলে ঢাকা ও নয়াদিল্লির মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে। সীমান্ত নিয়ে বিরোধ, পাল্টাপাল্টি বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ হয়েছে এবং উসকানিমূলক বক্তব্য বেড়েছে। বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন এই সম্পর্ককে নতুন করে ঢেলে সাজানোর একটি সুযোগ এনে দিয়েছে।
১ দিন আগে
নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে, পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে নরেন্দ্র মোদির উপস্থিতি ততই প্রতীকী হয়ে উঠছে। সরাসরি মাঠে নামতে না পারলেও তাহেরপুরের সভায় পাঠানো অডিও বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বুঝিয়ে দিয়েছেন, বাংলা এখন তাঁর রাজনৈতিক হিসাবের কেন্দ্রে রয়েছে।
২ দিন আগে