জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলাকালে রাজধানীর রামপুরায় ২৮ জনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বিজিবি কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেদোয়ানুল ইসলামসহ চারজনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) গঠনের বিষয়ে আদেশ আগামী বুধবার (২৪ ডিসেম্বর)।
আজ রোববার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ আদেশ দেন। প্যানেলের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
আজ সকালে মামলার দুই আসামি বিজিবি কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেদোয়ানুল ইসলাম ও বিজিবির সাবেক কর্মকর্তা মেজর মো. রাফাত বিন আলমকে কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। মামলার অপর দুই আসামি ডিএমপির খিলগাঁও অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) মো. রাশেদুল ইসলাম ও রামপুরা থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মশিউর রহমান পলাতক রয়েছেন।
শুনানিতে উপস্থিত দুই আসামি রেদোয়ানুল ও রাফাতের পক্ষে আইনজীবী হামিদুল মিসবাহ এবং পলাতক দুই আসামির পক্ষে সরকারি খরচে নিয়োগ পাওয়া রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন শুনানি করেন।
শুনানিতে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা মক্কেলদের নির্দোষ দাবি করে অভিযোগ থেকে অব্যাহতির (ডিসচার্জ) আবেদন জানান। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ গঠনের বিষয়ে আদেশের জন্য ২৪ ডিসেম্বর দিন নির্ধারণ করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মঈনুল করিম ও শাইখ মাহদী।
এর আগে গত ৬ ডিসেম্বর চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এ মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের ওপর শুনানি শেষ করেন। এরপর গত ১৪ ডিসেম্বর আদেশের দিন ধার্য থাকলেও তা বিশেষ কারণে পিছিয়ে যায়।
এর আগে গত ২২ অক্টোবর সেনা হেফাজতে থাকা রেদোয়ানুল ও রাফাতকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হলে আদালত তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। একই সঙ্গে পলাতক আসামিদের হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় দেশজুড়ে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞের মধ্যে রামপুরায় ২৮ জন নিহত এবং অনেকে আহত হন। তদন্ত সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, রামপুরায় বিজিবি কর্মকর্তা রেদোয়ানুল ইসলামকে আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে সরাসরি গুলি ছুড়তে দেখা যায় এবং অন্য আসামিরাও এই হত্যাযজ্ঞে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রসিকিউশন ট্রাইব্যুনালে চারজনের বিরুদ্ধে পৃথক আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে।